Home প্রবন্ধ-নিবন্ধ হিজরী তারিখ গণনা, আঁকড়ে ধরি নিজ স্বকীয়তা!

হিজরী তারিখ গণনা, আঁকড়ে ধরি নিজ স্বকীয়তা!

- সংগৃহীত।

।। বিনতে এন এম জাহাঙ্গীর ।।

দিনের পর রাত, রাতের পর দিন; এভাবেই কালের পরিক্রমায় এগিয়ে চলছে পৃথিবীর বয়স ও মানুষের জীবন। প্রত্যেকটি দিন-রাত আমাদের জন্য পূর্ণ থাকে আনন্দ-বেদনা ও নানা রকম স্মৃতির সমাহারে!

এভাবে দিনের পর দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংরক্ষণের এক প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয় মানুষের। সংরক্ষণের এই প্রয়োজনীয়তায় গড়ে উঠে বর্ষ গণনার রীতি। বিস্তারিত ইতিহাসে না যেয়ে, সংক্ষেপে নিরীক্ষণ করা যাক হিজরী বর্ষের চেতনা।

ইতিহাসের পাতায় আছে, মানবজাতি সর্বপ্রথম চাঁদ দেখে তারিখ গণনা শুরু করে। এর অনেক বছর পর শুরু হয় সৌর বর্ষের সূচনা। মিশরীয়রা আবার জ্যোতির্বিজ্ঞান, হিসাব-নিকাশে ছিল বেশ এগিয়ে। তারাই পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্যালেন্ডার আবিষ্কারক বলে মনে করা হয়ে থাকে।

এভাবে গ্রীক, রোমানদের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিবর্তন হতে থাকে মাসগণনায়। রোমান খৃষ্টান রাজা ও মূর্তিদের নামানুসারেও পরিবর্তন হয় অনেক মাসের নাম। এমনকি এভাবেই পর্যায়ক্রমে, কোন ‘আদর্শিক ভিত্তি’ ব্যতীতই বিভিন্ন হাস্যকর পরিবর্তনের পর খৃষ্টবর্ষের পূর্ণসূচনা হয়।

আরও পড়তে পারেন-

কয়েক শতক পরের ইতিহাস। আরবের বুকে তখন জগতের শ্রেষ্ঠ মানব নবীজি সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আরবরা শুধু তারিখ, মাস গণনা করত, বর্ষ নয়। নবীজির ওয়াফাতের বেশ কয়েক বছর পরের কথা।

উমরে ফারুক রাযি. তখন আমিরুল মুমিনীন। তাঁর শাসনাধীন এক এলাকার গভর্নর জনৈক সাহাবী রাযি. চিঠি প্রেরণ করেন, “আমিরুল মুমিনীন! আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজ আসে। কিন্তু বর্ষ লেখা না থাকায়, কোনটা কোন বছরের বোঝার উপায় থাকে না”!

উমর রাযি. ছিলেন বিচক্ষণ মানুষ। চিঠি পেয়ে তিনি সাহাবীদের নিয়ে পরামর্শ করলেন এবং সিদ্ধান্ত হল নবীজির স্মৃতিবাহী মহান হিজরতই হোক, সারা মুসলীম বিশ্বের বর্ষগণনার স্মারক! এভাবেই শুরু হল বিশুদ্ধ বিশ্বাস ও চেতনার বর্ষ ‘হিজরী বর্ষ’! এমনকি কোন এলাকায় কোন মুসলীমই যদি হিজরী তথা আরবী (চন্দ্র) মাসের হিসেব না রাখে, তবে এলাকার সব মুসলমানই গুনাহগার হবে।

এভাবেই নিত্যদিন ব্যস্ততায় নিজস্ব (হিজরী) তারিখ লেখতে যেয়েও একজন মুসলীমের মনে পড়ে যায়, নবীজির হিজরতের ইতিহাস! ইসলামের জন্য নিজের বাস্তুভিটা উৎসর্গের ইতিহাস!! দ্বীনপ্রতিষ্ঠার তরে মাতৃভূমিকে ‘আল-বিদা’ জানানোর গৌরবজ্জ্বল স্মৃতিগাঁথা! জীবনের হিসেব হোক হিজরী বর্ষের গণনায়!

প্রতিটি মুসলীমের ঈমানী চেতনার দাবী; হিজরী বর্ষকে ব্যাক্তি, সমাজ ও সর্বমহলে প্রতিষ্ঠার মহান কল্যাণে অবিরাম সাধনা করা। স্রোতের বিপরীতে বিপ্লবী হই, গড়ে তুলি আরবী বর্ষগণনা! মারহাবা! এ মহান সাধনা-যাত্রায়!

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।