Home মহিলাঙ্গন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নারীদের সহজ কিছু আমল

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নারীদের সহজ কিছু আমল

।। আল্লামা মুফতি জসিম উদ্দীন ।।

কোন মহিলার জন্য রহমতের দোয়া

হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে মহিলা রাত্রে ঘুম থেকে উঠবে এবং (তাহাজ্জুদের) নামায পড়বে, আর তার স্বামীকে জাগ্রত করাবে এবং সেও নামায পড়ে। আর স্বামী যদি না উঠে, তার মুখে পানির ছিটা মারে, সে মহিলার উপর আল্লাহর  রহমত বর্ষিত হবে এবং পুরুষের বেলায়ও তাই।

মহিলাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন কি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে

হযরত আনাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ক্বিয়ামতের দিন মহিলাকে সর্বপ্রথম তার নামায সম্পর্কে প্রশ্ন করবে, তারপর তার স্বামী সম্পর্কে (তার সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছে) জিজ্ঞাসা করা হবে।

স্বামীর খেদমত সম্পর্কে রাসূল (সা.)এর নির্দেশ

হযরত আলী (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, হে নারী জাতি! আল্লাহ্কে ভয় কর এবং স্বামীর সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখ। যদি মহিলারা জানত যে, স্ত্রীর উপর স্বামীর কতটুকু হক্ব, তাহলে সকাল বিকাল তার খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত।

হযরত আলী (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা ঐ মহিলাকে মুহাব্বত করেন, যে তার স্বামীকে মুহাব্বত করে, ভাল মেযাজের হয় এবং অন্য পুরুষ থেকে তার দেহ ও ইজ্জত-আকব্রুকে হিফাযত করে।

হযরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে হুকুম করে যে, লাল পাহাড় কে কাল পাহাড়ে নিয়ে যাও, তখন তার কাজ বা হক হল, তা পালন করা। অর্থাৎ- স্বামী যদি এক পাহাড়কে অন্য পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার মত শক্ত কাজের কথা বললে তাও স্ত্রীর পালন করা চাই। অথচ এক পাহাড়কে অন্য পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্যে কোন লাভ নেই, এরকম কোন লাভহীন কাজ করতে বললে তাও করা চাই।

স্বামীর খেদমতে সাদকা করার সাওয়াব

স্ত্রীর জন্য স্বামীর খেদমত করা সদকা স্বরূপ। স্ত্রীর জন্য স্বামীর হক সব চেয়ে বড়। হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, মহিলাদের উপর সব চেয়ে বড় হক কার? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, স্বামীর হক। পুরুষের উপর সব চেয়ে বড় হক কার? ইরশাদ করেন, তার মায়ের হক।

রাসূলুল্লাহ (সা.)এর খেদমতে এক মহিলার প্রশ্ন

আসমা বিনতে ইয়াজিদ আনসারী (রাযি.) একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে (মহিলাদের প্রতিনিধি হিসেবে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করলেন-

ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি যা কিছু আল্লাহর  পক্ষ থেকে নিয়ে এসেছেন, তার উপর ঈমান এনেছি। আমরা মহিলাদের জামাত ঘরের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকি। পুরুষদের জরুরতকে পুরা করি, ছেলে সন্তানের লালন-পালন ও সন্তান গর্ভ হওয়ার কষ্টকেও সহ্য করি। আর পুরুষরা জুমআর জামাত, অসুস্থদের দেখা-শোনা,  জানাযায় হাজেরী, হজ্ব পালন ও আল্লাহর  রাস্তায় জিহাদ করার দ্বারা বেশী সাওয়াব পায়। আর পুরুষরা যখন আল্লাহর  রাস্তুায় যায়, তখন তাদের মাল ইত্যাদি হিফাজত করি, তাদের কাপড় ধোলাই করে দেই, তাদের ছেলে-সন্তানকে লালন পালন করি। ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! এ সমস্ত কাজে কতটুকু সাওয়াব পাব (পুরুষদের সমান সাওয়াব পাব কি)? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের দিকে মুখ করে বললেন, তোমরা এই মহিলা দ্বীনের ব্যাপারে কত সুন্দর প্রশ্ন করেছে শুনেছ?

সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আমাদের জানা নেই যে, এই মহিলার ন্যায় অন্য কোন মহিলা এ কথা সমহের জ্ঞান রাখে কিনা? তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মহিলাকে বললেন, যাও তুমি অন্য মহিলাদেরকেও বলে দাও যে, মহিলারা যদি তার স্বামীর সাথে ভাল ব্যবহার করে, স্বামীর খুশি থাকার দিকে লক্ষ্য রাখে, তাদের কথা মতে চলাফেরা করে, তবে তারা পুরুষদের ঐ সমস্ত আমল সমহের সমতুল্য সাওয়াব পাবে। এতে উক্ত মহিলা খুশি হয়ে আল্লাহু আকবার ও লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়তে পড়তে চলে আসে।

স্বামীর অকৃতজ্ঞতাকারী রমণী সম্পর্কে রাসূল (সা.)এর হাদীস

হযরত আসমা (রাযি.) বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের এক জামাতের পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় সালাম করে বললেন, খবরদার সহনশীলতাকারীর অকৃতজ্ঞতা হতে বেঁচে যাও। আমরা বললাম, সহনশীলতাকারীর অংশগ্রহকারীর অকৃতজ্ঞতা কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা এক সময় মাতা-পিতার অধীনে যিন্দেগী অতিবাহিত কর। এরপর আল্লাহ তাআলা বিয়ের বৈধতা করে দেন, যাতে তোমরা ছেলে-সন্তান এবং সম্পদ দ্বারা লাভবান হও। তারপরেও কোন সময় স্বামীর প্রতি নারায হলে বলে দাও, কোন সময়ই আমি স্বামীর কাছ থেকে কল্যাণ পাইনি। (এটা হল অবদানের অকৃতজ্ঞতা করা)।

কতটুকু পরিমাণ খেদমত করলে স্বামীর হক্ব আদায় হবে

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাযি.) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে তার মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত হয়ে বলেন, আমার এই মেয়ে বিবাহ বসতে অস্বীকার করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,  তোমার বাবার কথা শুন। তখন মেয়ে বললেন, ঐ জাতের কসম যিনি আপনাকে হক্ দিয়ে প্রেরণ করেছেন, আমি কখনও বিবাহ বসব না,  যে পর্যন্ত আপনি এই খবর না দিবেন যে, স্বামীর হক্ব স্ত্রীর উপর কতটুকু? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করলেন, স্বামীর হক বিবির উপর এই যে, স্বামীর যদি কোন যখম হয়, স্ত্রী তা মুখ দিয়ে চুষে অথবা স্বামীর নাক দিয়ে পুঁজ বা রক্ত বের হলে স্ত্রী তা পান করে, তারপরও হক্ব আদায় হবে না।

উল্লেখ্য, এটা স্বামীর খেদমতের গুরুত্বের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেছেন। নতুবা রক্ত পুঁজ ইত্যাদি নাপাক। স্ত্রীর জন্য তা পান করা বৈধ নয়।

পুরুষের জন্য সব চেয়ে বড় সম্পদ কি

হযরত আবু উমামা (রাযি.) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুআয বিন জাবালকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করেন, হে মুআয! মানুষ যা অর্জন করে (মাল সম্পদ ইত্যাদি), তার মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হল কৃতজ্ঞতা। অন্তর দিয়ে যিকির করে নিজের যবানকে তরুতাজা রাখো (সর্বদা যিকিরে লিপ্ত থাকো)। আর ঐ নেক্কার বিবি, যিনি তোমার দুনিয়া ও দ্বীনের কাজের সহযোগী হয়। অর্থাৎ- যে স্ত্রী স্বামীর দুনিয়া ও দ্বীনের কাজে সহযোগী হবে, সে দুনিয়ার সব সম্পদ থেকে উত্তম হবে।

দুনিয়ার সহযোগী, যেমন- টাকা-পয়সা ও খরচাদির ব্যাপারে ছেলে সন্তানকে লালন-পালন ইত্যাদির ব্যাপারে সহযোগী হওয়া, স্বামীর মাল, ইজ্জত, আবরু হিফাযতের প্রতি লক্ষ্য রাখা, দ্বীনের কাজে সহযোগীতা, যেমন- নামায রোযা হজ্ব যাকাত ইত্যাদি আদায় করার জন্য সহযোগী হওয়া, দ্বীন শিক্ষা করা, শিক্ষা দেওয়া, আল্লাহর  রাস্তায় বের হওয়ার মধ্যে সহযোগী হওয়া ইত্যাদি।

ভাগ্যবান পুরুষ কে

হযরত আব্দুল্লাহ বিন হুসাইন (রাযি.) তার পিতা ও দাদা সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, চারটি জিনিষ মানুষের ভাগ্যবান হওয়ার প্রমাণ। ১. স্ত্রী তার মেজাযের মুওয়াফেক হওয়া। ২. তার ছেলে সন্তান ভাল এবং দ্বীনদার হওয়া। ৩. তার ভাই নেক্কার হওয়া। ৪. আর তার রিযিক নিজ শহরে হওয়া, অর্থাৎ- তার কামাই রোযগার ও থাকা তার এলাকায় হওয়া, যেহেতু এলাকাতে তার প্রভাব অনুসারে হালাল কর্ম বা খাওয়া দাওয়া তার জন্য সহজ হবে।

স্বামীর সন্তুষ্টি জান্নাতী হওয়ার নিদর্শন

হযরত আনাস বিন মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদেরকে জান্নাতী মহিলা সম্পর্কে সংবাদ দিব না? আমরা বললাম, নিশ্চয় হে আল্লাহর  রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! যে মহিলা স্বামীর প্রতি আসক্ত হয়, যে মহিলার সন্তান বেশী হয়, স্বামী রাগ করলে বা মন্দ বললে বা স্বামী অসন্তুষ্ট হলে তখন স্বামীকে রাযী করার উদ্দেশ্যে বলে, আমার হাত আপনার হাতের মধ্যে ঐ পর্যন্ত থাকবে, যে পর্যন্ত আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। তারপর আমি ঘুমাব, না হয় ঘুমাব না।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) থেকে বর্ণিত, সে মহিলা জান্নাতী হবে, যে স্বামীকে অতিরিক্ত মুহাব্বত করে, বেশী সন্তান জন্ম দেয়, স্বামীর নিকট বেশী বেশী আসে, কোন কারণে স্বামী নারায হয়ে গেলে তার হাত ধরে বলে, আমি একটুও শুইব না, যে পর্যন্ত না আপনি রাজি হয়ে যান।

ফায়দাঃ উল্লিখিত হাদিসের মাধ্যমে বুঝা গেল যে, যে কোন অবস্থায় স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখা (শরীয়তের সীমার ভিতরে), স্বামীর থেকে কোন কষ্ট পেলেও সবর করা, স্বামীর মুহাব্বত অন্তরে থাকা এবং অন্য কারো প্রতি লক্ষ্য না করা।

মাসআলাঃ আল্লাহর  নাফরমানিতে কোন মাখলুককে মানা যাবে না। তাই ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাতে মুআক্কাদা তরক করতে বললে, অথবা হারাম বা মাকরুহে তাহরিমায় লিপ্ত হওয়ার জন্য বললে, তা মান্য করবে না।

হযরত হুসাইন বিন মুহ্ছেন (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তার ফুফু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে তাশ্রীফ আনেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার স্বামী আছে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তার সাথে কেমন ব্যবহার কর? সে উত্তরে বলল, যতটুকু সম্ভব তার খেদমত করি, তাতে কোন প্রকার ত্রুটি করি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তার খেদমত করো, তার আনুগত্য কর। কারণ, সেই তোমার জান্নাত বা জাহান্নাম। অর্থাৎ তাকে রাযি রাখতে পারলে জান্নাত, তাকে নারাজ করলে জাহান্নাম।

আরও পড়তে পারেন-

হযরত উম্মে সালমা (রাযি.) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে মহিলার ইন্তিকাল এমতাবস্থায় হয় যে, তার স্বামী তার প্রতি খুশি থাকে, তখন সেই মহিলা জান্নাতে যাবে।

ফায়দাঃ উক্ত হাদীস দ্বারা জানা গেল যে, স্বামীর সন্তুষ্টি ও রেযামন্দি জান্নাতে যাওয়ার মাধ্যম। স্বামীর সাথে ঝগড়া করা, মন্দ বলা, খাওয়া-দাওয়া বা টাকা-পয়সা, পোষাকাদি ইত্যাদির জন্য পেরেশান করা, কষ্ট দেওয়া ইত্যাদি হারাম।

স্বামীর অনুসরণ পূণ্যবতী নারী হওয়ার নিদর্শন

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মুমিন বান্দার আল্লাহর  তাক্বওয়ার পর সব চেয়ে বড় নিয়ামত হল নেক্কার বিবি। স্বামী যদি কোন কথা (হুকুম) বলে, পালন করে। স্বামী তার দিকে তাকালে তাকে খুশি করে দেয়। যদি স্বামী তাকে কোন কসম (শপথ) দেয়, সেই তা পুরা করে। আর স্বামী বাইরে গেলে, তখন স্ত্রী তার নফ্স ও স্বামীর মালকে হিফাযত করে। উক্ত হাদীসে বলা হয়েছে যে, স্বামী তার দিকে তাকালে খুশি করে দেয়। অর্থাৎ- তার মনে কোন দুঃখ থাকলেও স্বামীকে দেখার সাথে সাথে তা প্রকাশ না করে। হাসিমুখে স্বামীর সাথে কথা বলা, এভাবে স্বামী কোন কারণে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হলে তাকে এমন কথা বা সান্ত¡না দেওয়া, যাতে তার মন খুশি হয়ে যায় এবং স্বামীর জন্য সাজসজ্জা করা।

মাসআলাঃ মেয়েরা সাধারণতঃ ঘরে থাকলে ময়লা যুক্ত কাপড় পরিধান করে থাকে। আর বাহিরে গেলে উত্তম কাপড় পরে সাজসজ্জা করে বের হয়। অথচ সাজসজ্জা হওয়া উচিত স্বামীর জন্য। এ কারণেই বিবাহের পর্বে সীমা অতিরিক্ত সাজসজ্জা জায়েয নেই। বরং অপর পুরুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে সাজগোছ করে বাহিরে ঘোরা-ফেরাকারী মহিলাকে হাদীসের ভাষায় যিনাকার বলা হয়েছে।

হাদীসে স্বামীর কসমকে পুরা করার অর্থ হল, স্বামী যদি স্ত্রীর উপর ভরসা বা আব্দার করে শপথ করে বলল, তুমি এ রকম করো, তখন তা পুরা করা, যদিও তা নিজের মনের বিপরীত হয়।

স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী নিজেকে নিজে হিফাযত করা। অর্থাৎ- পর্দাকে রক্ষা করা, পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক না রাখা, বিনা অনুমতিতে বাহিরে না যাওয়া ইত্যাদি।

স্বামীর মালকে হিফাযত করা, অর্থাৎ- যে সমস্ত কাজে মাল-সম্পদ খরচ করায় স্বামী অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে, সে সমস্ত জায়গাতে খরচ না করা। যাদেরকে দেওয়ার জন্য স্বামীর অনুমতি নেই, আদেশ ব্যতিত তাদেরকে না দেওয়া। [চলবে]

লেখকঃ উস্তাদুল হাদীস ওয়াল ফিক্বহ এবং সহকারী পরিচালক- আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।