Home রাজনীতি বিজয়ের ৫০ বছরেও শোষণমুক্ত হয়নি জাতি: শায়খে চরমোনাই

বিজয়ের ৫০ বছরেও শোষণমুক্ত হয়নি জাতি: শায়খে চরমোনাই

বৃহস্পতিবার (১৬ ই ডিসেম্বর) দুপুর ২টায় বরিশাল নগরীর ফজলুল হক এভিনিউতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর কর্তৃক আয়োজিত বিজয় র‌্যালী পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, (শায়খে চরমোনাই) বলেন- রক্ত সাগর পাড়ি দিয়ে যে বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন করেছি, সেই স্বাধীনতা স্বপ্নই রয়ে গেল। বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর পদার্পণে উপনীত হলেও স্বাধীনতার মৌলিক দাবী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেতে রাষ্ট্রক্ষমতায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যারা মুক্তিযুদ্ধের সাথে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে সম্পৃক্ত করতে চান- তাদের জানা উচিৎ ইসলামই ছিল একাত্তরে স্বাধীনতার মূল ভিত্তি।

তিনি বলেন, এদেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্ম ইসলামকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন ও জনবি”িছন্ন নেতা। অথচ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মসূত্রে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান। তিনি তাঁর প্রত্যেকটি বক্তব্য-বিবৃতিতে ইসলামের অব¯’ান জানান দিয়েছেন। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বলেছিলেন “এদেশের মানুষকে মুক্ত করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ”। তাঁর সে ঐতিহাসিক “ইনশাআল্লাহ’র” ধ্বনিতে উজ্জীবিত হয়ে এদেশের মুসলমানরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পরে এ ভ‚খÐকে স্বাধীন করেছে। সেই সংগ্রামী মুসলমানদের বাদ দিয়ে এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস কল্পনাও করা যায়না।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে মুসলমানদের অব¯’ান কি ছিল, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা তা ভাল করেই জানেন। নতুন করে সেটা প্রমাণ করতে বক্তব্য বিবৃতি জরুরী নয়। তবে যারা ইসলামকে বিকৃত করার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামের সিম্বল গুলো ব্যবহার করেন, তাদেরকে একটি বার্তা দিতে চাই, আপনারা সতর্ক হোন। নিজেদের রাজাকার তকমা ঢেকে রাখতে ইসলামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করবেন না, এর ফলাফল কখনো শুভ হবে না। একই সাথে আমি বাংলাদেশ সরকারকে বলব, যারা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন গল্প-সিনেমা-নাটক এবং তথ্যচিত্রে রাজাকারদের পরিচয় তুলে ধরতে ইসলামী সিম্বল ব্যবহার করে সেসব নির্মাতাদের সংশোধনের চেষ্টা করুন এবং আপনার বাবার ইজ্জত রক্ষা করুন।

আরও পড়তে পারেন-

শায়খে চরমোনাই আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নির্মাণ ও পরিচালনায় ইসলাম ছিল প্রাধান্য বিস্তারকারী এক শক্তি। মুক্তিযুদ্ধকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ‘আল্লাহর পথে জিহাদ’ বলে পরিচয় করে দিয়েছে। বেতার কেন্দ্রের সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণাই ছিল ইসলাম। এমনকি ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিল আমার দাদাজান মাওলানা সৈয়দ এছহাক রহ. এর নিকট নিয়মিত যাতায়াত করতেন, দোয়া নিতেন এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শ নিতেন। শুধু তাই নয় চরমোনাই সহ আশপাশের হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমাদের চরমোনাই মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং নিরাপদ ছিলেন। আমার দাদাজান রহ. মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি মাদ্রাসায় আশ্রয় নেয়া হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকদের থাকা ও খাওয়ার ব্যব¯’া করেছিলেন। এতসব বাস্তবতার পরেও যেসব ইতিহাস বিকৃতিকারীরা মুক্তিযুদ্ধের সাথে ইসলামের বৈপরীত্য জাহির করতে চান, তারা নিজেদের বিবেকের সাথে গাদ্দারী করছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর বরিশাল মহানগরের সহ-সভাপতি মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ নাছির আহমেদ কাওছার এর সভাপতিত্বে, বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা লুৎফর রহমান সঞ্চালনায় র‌্যালী পূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন ৫নং চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদেও নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ জিয়াউল করীম, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা আবুল খায়ের আশ্রাফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শাহাদাত হুসাইন নূরী, ৬নং জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ আযাদী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দিন নাইস, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম ছাব্বির রহমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলী আকবার, আইনবিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. শেখ আব্দুল্লাহ নাসের সহ নগর ও থানা নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।