Home ইসলাম ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নিষিদ্ধ

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নিষিদ্ধ

।। মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ ।।

একসময় গোটা পৃথিবীতে ধর্মীয় বিভেদ ছিল না। সব মানুষ এক উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত ছিল। আদম ও নুহ (আ.)-এর মধ্যে ১০ শতাব্দীর ব্যবধান ছিল। আর এ দীর্ঘ সময় তারা সবাই খাঁটি মুসলিম ছিলেন।

অতঃপর কালক্রমে তারা নেক ও সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে গিয়ে সীমা লঙ্ঘন শুরু করে। ফলে তাদের আকিদা-বিশ্বাস কলুষিত হয়।

ধর্মের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি একটি মারাত্মক ব্যাধি, যা আকিদা ও বিশ্বাসকে বিনষ্ট করে ফেলে। এটি একটি জাতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। কারণ এর ফলে মানুষ আল্লাহর নির্দেশকে লঙ্ঘন করে এবং আল্লাহর বিধান পালনে সীমা লঙ্ঘন করে। এ কারণে আল্লাহ তাআলা দ্বিনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে এবং কাউকে সম্মান করার ক্ষেত্রে অতিরঞ্জিত করতে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে আহলে কিতাব, তোমরা তোমাদের দ্বিনের মধ্যে বাড়াবাড়ি করো না। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১৭১)

আরও পড়তে পারেন-

অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য যে সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন, তা অতিক্রম করো না। অত্র আয়াতে ‘আহলে কিতাব’ বলতে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বোঝানো হয়েছে। মহান আল্লাহ তাদের দ্বিনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন এবং উম্মতে মুহাম্মদিকেও একই নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা রাসুল (সা.)-এর উদ্দেশে বলেন, ‘অতএব তুমি যেভাবে আদিষ্ট হয়েছ সেভাবে দৃঢ় থাকো এবং যারা তোমার সঙ্গে (শিরক ও কুফরি থেকে) তাওবা করেছে তারাও। আর তোমরা সীমা লঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের সব কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করেন। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা দ্বিনের মধ্যে বাড়াবাড়ি করা থেকে বিরত থেকো। কেননা তোমাদের আগের লোকেরা দ্বিনের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘনের কারণে ধ্বংস হয়েছে। ’ (নাসাঈ, হাদিস : ৩০৫৭)

রাসুল (সা.) কবরের পাশে কিংবা কবরের ওপর মসজিদ নির্মাণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। কেননা মনীষী-বুজুর্গদের কবরের পাশে ইবাদত করলে তা তাঁদের উপাসনার দিকে নিয়ে যেতে পারে। একবার উম্মে হাবিবা ও উম্মে সালামা (রা.) রাসুল (সা.)-কে হাবশায় (আবিসিনিয়া) অবস্থিত গির্জার কথা বলেন, যাতে কিছু ছবি ও মূর্তি ছিল।

তিনি শুনে বললেন, ‘ওরা এমন জাতি যে তাদের মধ্যে কোনো নেককার লোক মারা গেলে তারা তার কবরের ওপর মসজিদ নির্মাণ করত এবং তাদের (সম্মানার্থে) সেখানে ছবি ও মূর্তি স্থাপন করত। ওরাই কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সৃষ্টি হিসেবে পরিগণিত হবে। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৩৪১; মুসলিম, হাদিস : ৫২৮)

একইভাবে রাসুল (সা.) তাঁর অতিরিক্ত প্রশংসা করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা আমার প্রশংসায় অতিরঞ্জন করো না, যেমন খ্রিস্টানরা মারিয়াম পুত্র ঈসা (আ.)-এর ব্যাপারে করেছে। আমি শুধু আল্লাহর বান্দা। সুতরাং তোমরা (আমার ব্যাপারে) বলো, আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল। ’ (বুখারি, হাদিস : ৩৪৪৫)

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।