Home রাজনীতি পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব গণবিরোধী: এবি পার্টি

পানির দাম ৪০ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব গণবিরোধী: এবি পার্টি

ঢাকা ওয়াসার বিশেষ বোর্ড সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবকে গণবিরোধী উল্লেখ করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি এক বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারী) শনিবার দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৩ বছরে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বেড়েছে ১৪ বার, যদিও পানির মান নিয়ে মানুষের অভিযোগের কোনো সুরাহা হয়নি। বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ১৫ টাকা ১৮ পয়সা; ওয়াসার প্রস্তাব অনুযায়ী আবাসিকের দর প্রতি হাজার লিটারে ২১ টাকা ২৫ পয়সা করার কথা বলা হয়েছে। বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম বর্তমানে ৪২ টাকা; ওয়াসার প্রস্তাব অনুযায়ী, বাণিজ্যিক সংযোগে পানির দাম দাঁড়াবে ৫৮ দশমিক ৮ টাকা। ঢাকা ওয়াসা আগামী ১লা জুলাই থেকে নতুন দর কার্যকর করতে চায়।

আরও পড়তে পারেন-

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকা ওয়াসার আবাসিক পর্যায়ে প্রতি ইউনিটে পানির দাম ছিল ৬ টাকা ৪ পয়সা। নতুন করে দাম বাড়ানর পর সেটা বেড়ে এখন প্রতি ইউনিটে ২১ টাকা ২৫ পয়সা করে হবে। রাজশাহীতে ওয়াসার পানির দাম একলাফে তিন গুণ বাড়ানো হয়েছে। চট্টগ্রামেও দাম বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াসা। ইতিমধ্যেই গ্যাসের দাম ১১৭% বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে গ্যাস বিতরনকারী ছয়টি প্রতিষ্ঠান; ভোজ্যতেল সহ নিত্যপণ্যের দাম কয়েক গুন বেড়ে যাওয়ায় জনগণের নাভিশ্বাস উঠে গেছে, অন্যদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আলোচনা চলছে। এর মধ্যে পানির দামও বাড়লে মানুষের ভোগান্তির অন্ত থাকবে না। শতভাগ পানির ভর্তুকি কমাতে চাওয়ার কথা বলে ওয়াসার বিতর্কিত এমডি তাকসিম এ খান বলছেন, ‘সরকারের কাছ থেকে ভিক্ষা নিয়ে কোনো সংস্থা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না।’ যে সংস্থা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনা, ভিক্ষা করে চলতে হয়, সেই সংস্থার এমডির বেতন-ভাতা কিভাবে মাসে সর্বোচ্চ ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা হয়, বড়ই প্রশ্নের বিষয়!

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশে সেবাদানকারী যত সরকারি সংস্থা আছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেতন-ভাতা পান ওয়াসার এমডি। এই এমডির সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব হচ্ছে, তিনি পানির দাম ও নিজের বেতন পাল্লা দিয়ে বাড়াতে পারেন কিন্তু জনগনকে সেবা দিতে পারেন না। ২০০৯ সালের অক্টোবরে তাকসিম এ খান ওয়াসার এমডি হিসেবে ৩ বছরের জন্য চুক্তিতে নিয়োগের সময় তাঁর মাসিক বেতন ছিল ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, সেই বেতন বাড়িয়ে করেছেন মাসে ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে গত ১২ বছরে তার বেতন বেড়েছে ৪২১ শতাংশ।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ ছিল, ২০০৯ সাল থেকে ষষ্ঠবারের মতো ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে ওয়াসার এমডি হিসেবে আছেন প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের বিষয়ে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অনেক দিন ধরেই ক্ষুব্ধ। অন্যদিকে ওয়াসার পানির মান নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। ওয়াসার পানি পরীক্ষা করে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা যে তথ্য উপস্থাপন করে, তাও উদ্বেগজনক। কিন্তু বাধ্য হয়ে নগরবাসী পান করছে দূষিত পানি। শহরের মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত নাগরিকরা ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানি নানাভাবে শোধন করে ব্যবহার করলেও নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ঢাকা ওয়াসার বাস্তবায়নাধীন অধিকাংশ প্রকল্পই নির্ধারিত সময় ও খরচে শেষ হচ্ছে না। তাই সমালোচনা আছে যে ওয়াসা প্রকল্প নিলেই ব্যয় বাড়ে। ৯ বছর আগে নেওয়া গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পটির মেয়াদ দুই দফায় বাড়ানোর সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে যায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা, ৫ হাজার ২৪৮ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার ১৫১ কোটি টাকা করা হয়েছে। ওয়াসার প্রকল্পভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওয়াসার চলমান ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৬টিই নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি। এ প্রকল্পগুলোর অনুমোদিত খরচের বাইরে আরও প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

এবি পার্টি এসব বিষয়ে ওয়াসা প্রধানের ব্যর্থতাকেই প্রধানতম কারণ হিসেবে দেখছে। তাই অন্যায্যভাবে পানির দাম না বাড়ানোর জন্য ওয়াসাকে আহবান জানাচ্ছে এবি পার্টি আর একইসাথে জনগণকে মানসম্মত পানি সরবরাহ করার জোর দাবি জানাচ্ছে। – বিজ্ঞপ্তি।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।