Home ইসলাম বিরূপ প্রচারণা, ষড়যন্ত্র ও আক্রমণ সত্ত্বেও পশ্চিমে ‘ইসলাম’ ধর্মের অগ্রগতি দিন দিন...

বিরূপ প্রচারণা, ষড়যন্ত্র ও আক্রমণ সত্ত্বেও পশ্চিমে ‘ইসলাম’ ধর্মের অগ্রগতি দিন দিন বাড়ছেই

উম্মাহ ডেস্ক: ইসলামের বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা, ষড়যন্ত্র এবং সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ সত্ত্বেও এই ধর্মের অগ্রগতি ইউরোপ-আমেরিকা জুড়ে দিনকে দিন বাড়ছে। বর্তমানে ইসলাম ইউরোপসহ পাশ্চাত্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। ইসলামের শিক্ষাগুলোই পাশ্চাত্যের মানুষকে এ ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দিনে দিনে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছেন শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। এভাবে চলতে থাকলে ইসলাম হয়ে উঠবে এসব অঞ্চলের প্রথম বৃহত্তম ধর্ম।

যেমন, মুসলমানদের উন্নত সামাজিক জীবন, ভ্রাতৃত্ব ও সব ধরনের বৈষম্য বা অন্যায় বিরোধী অবস্থান পশ্চিমাদেরকে এ ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করছে। নারীর প্রতি ইসলামের সম্মানজনক স্বীকৃতি পাশ্চাত্যের শিক্ষিত নারী সমাজকেও আকৃষ্ট করছে এই মহান ধর্মের দিকে। এইসব নারী ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমেই এ ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাদের কেউ কেউ গবেষণা প্রতিষ্ঠানেরই কর্মী ছিলেন।

গবেষণার মাধ্যমে ইসলামের সত্যতাকে উপলব্ধি করে এই মহান ধর্ম গ্রহণ করেছেন এমন নারীদের মধ্যে জার্মান নারী ক্যাথেরিন হুফারও অন্যতম। তিনি বলেছেন, “আমি জন্ম নিয়েছিলাম ১৯৬৮ সালে জার্মানির স্টুটগার্ট শহরে এক ক্যাথলিক পরিবারে। আমার পরিবার খ্রিস্ট ধর্মের অনুষ্ঠানগুলো পালনকে বেশ গুরুত্ব দিত এবং প্রতি রোববার গির্জার প্রার্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দিত।

আরও পড়ুন- ইউরোপের সবচে বড় মসজিদ এখন জার্মানিতে

কিন্তু আমি যখন ১৪ বছর বয়সে পা দেই, তখন দেখলাম যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো পালনে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আর ধর্ম বিষয়ে যেসব জ্ঞান অর্জন করতাম সেগুলোকে আধুনিক বা বর্তমান জীবন-যাত্রার সঙ্গে মিলাতে পারতাম না এবং এইসব জ্ঞান আমার কাছে বোধগম্য ছিল না। ধর্মীয় বিষয়ের প্রতি আগ্রহহীনতার কারণে কিছুকাল এক জ্যোতিষী বা গণকের কাছে যেতাম। কিন্তু সেই গণক আমার আধ্যাত্মিক চাহিদার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। কয়েক বছর পর আমি একজন মুসলমানের সঙ্গে পরিচিত হই। তার চিন্তাধারা ও জীবন-যাপনের পদ্ধতি আমাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করে। ফলে এ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্য সক্রিয় হয়ে উঠি।”

ইসলাম সম্পর্কে কিছুকাল পড়াশোনার পর এ ধর্মের প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করতে থাকেন জার্মান নওমুসলিম নারী ক্যাথেরিন হুফার। এ অবস্থায় তিনি হিজাব ও নামাজ সম্পর্কে গবেষণা করতে থাকেন। এসব বিষয়ে কিছুদিন গবেষণার পর মিসেস হুফার ইসলামের প্রতি ঈমান আনেন।

তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “যখন হিজাব পরলাম তখন আগের চেয়েও বেশি নিরাপত্তা অনুভব করলাম। হিজাব আমাকে ব্যক্তিত্ব ও বিশেষ মর্যাদা দান করে। কিন্তু যখন আমার মা আমাকে হিজাব-পরা অবস্থায় দেখলেন, তখন তিনি অসন্তুষ্ট হলেন এবং এর বিরোধিতা করলেন। আমি আমার মাকে খুব ভালোবাসতাম বলে ইসলামের গণ্ডীর মধ্যে থেকেই কিছু সময় পর্যন্ত হিজাবহীন থাকব বলে মনে মনে সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু আমার বিবেক আমাকে এ কাজে বাধা দিল। ফলে আমার নিজের মধ্যেই শুরু হল দ্বন্দ্ব। প্রায় এক বছর পর হিজাব পরিহিতা দু জন জার্মান নও-মুসলিমের দেখা পেলাম। নানা সমস্যা ও বাধা সত্ত্বেও হিজাব রক্ষার ব্যাপারে তাদের বেপরোয়া ভাব দেখে বিস্মিত হলাম এবং আমি অন্তর থেকে তাদের বেশ প্রশংসা করলাম। ফলে আমি আবারও হিজাবের মধ্যে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ হলাম।

এ ব্যাপারে মহান আল্লাহর সাহায্য চেয়ে ও তাঁর ওপর ভরসা করে বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে হিজাব পরলাম। মহান আল্লাহর স্মরণ এবং তাঁর সহায়তা আমাকে জুগিয়েছে জোরালো আত্মবিশ্বাস ও মনোবল। আমার মা যখন আমার দৃঢ়-প্রতিজ্ঞা ও অনমনীয়তার বিষয়টি দেখলেন তখন তিনি বিরোধিতা বন্ধ করে ব্যাপারটিকে মেনে নিলেন।”

‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এমন উক্তি ইসলাম বিরোধী: আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী