Home ইসলাম হালাল ব্যবসায় জীবন-জীবিকার উন্নতি

হালাল ব্যবসায় জীবন-জীবিকার উন্নতি

।। মুফতি আতাউর রহমান ।।

আবদুর রহমান ইবনে আওফ (রা.) বলেন, আমরা যখন মদিনায় আসি, তখন আল্লাহর রাসুল (সা.) আমার এবং সাদ ইবনে রাবিআ (রা.)-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন সৃষ্টি করে দেন। তিনি আমাকে বলেন, আমি আনসারদের মধ্যে বেশি ধনাঢ্য। আমার অর্ধেক সম্পত্তি তোমাকে বণ্টন করে দিচ্ছি এবং আমার উভয় স্ত্রীকে দেখে যাকে তোমার পছন্দ হয়, বোলো আমি তাকে তোমার জন্য পরিত্যাগ করব। যখন সে হালাল হবে (ইদ্দত পূর্ণ করবে), তখন তুমি বিয়ে করবে।

আবদুর রহমান (রা.) বললেন, এসব আমার কোনো প্রয়োজন নেই; বরং আপনি বলুন, ব্যবসা-বাণিজ্য করার মতো কোনো বাজার আছে কি? তিনি বলেন, কায়নুকার বাজার আছে। পরদিন ‘আবদুর রহমান (রা.) সে বাজারে গিয়ে পনির ও ঘি কিনে আনলেন। এরপর ক্রমাগত যাওয়া-আসা করতে থাকেন।

কিছুকাল পরে ‘আবদুর রহমান (রা.)-এর কাপড়ে বিয়ের হলুদ রঙের চিহ্ন দেখা গেল। এরপর আল্লাহর রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি বিয়ে করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সে কে? তিনি বললেন, একজন আনসারি নারী। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কী পরিমাণ মোহর দিয়েছ? ‘আবদুর রহমান (রা.) বললেন, খেজুরের এক আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। নবী (সা.) তাঁকে বলেন, একটি বকরি দিয়ে হলেও ওয়ালিমা কোরো। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৪৮)

আরও পড়তে পারেন-

উল্লিখিত হাদিসের আলোকে আলেমরা বলেন, মুমিনের জন্য সবচেয়ে বরকতময় কাজ হলো হালাল ব্যবসায়। আল্লাহ হালাল ব্যবসায় অবারিত জীবিকা দান করেছেন। সুতরাং কেউ যদি জীবন-জীবিকার উন্নতি চায় সে যেন সততার সঙ্গে ব্যবসা করে। প্রাজ্ঞ আলেমরা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, যখন কোনো ব্যবসায়ী ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মানুষের প্রয়োজনকে প্রাধান্য দেয়, অর্থাৎ সে মুনাফার প্রতি লক্ষ্য না করে এমন পণ্যের ব্যবসা করে যাতে মানুষের প্রয়োজন পূরণ হয় এবং সহমর্মিতার সঙ্গে ব্যবসা করে, তখন আল্লাহ তাতে অধিক বরকত দান করেন। আর সততা মানুষের জন্য আল্লাহর সাহায্যকে সহজলভ্য করে।

নবীজি (সা.)-এর হুঁশিয়ারি : তবে কোনো ব্যবসায়ী যেন অধিক মুনাফা লাভের জন্য হারাম পণ্যের বা হারাম পদ্ধতিতে ব্যবসা না করে এ বিষয়ে মহানবী (সা.)-এর কঠোর হুঁশিয়ারি আছে। শুধু হারাম নয়, বরং মুমিন ব্যবসায়ী সন্দেহজনক বিষয় থেকেও নিজেকে রক্ষা করবে। নোমান বিন বাশির (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট, উভয়ের মাঝে বহু অস্পষ্ট বিষয় রয়েছে।

যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ পরিত্যাগ করে, সে ব্যক্তি যে বিষয়ে গুনাহ হওয়া সুস্পষ্ট, সে বিষয়ে অধিকতর পরিত্যাগকারী হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ করতে দুঃসাহস করে, সে ব্যক্তির সুস্পষ্ট গুনাহের কাজে পতিত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

গুনাহগুলো আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা, যে জানোয়ার সংরক্ষিত এলাকার চারপাশে চরতে থাকে, তার ওই সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করার ভয় থাকে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২০৫১)

আল্লাহ সবাইকে হালাল উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার তাওফিক দান করুন। আমিন

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।