Home সোশ্যাল মিডিয়া থার্টি ফার্স্ট নাইট: অপসংস্কৃতির এক বিষাক্ত ছোবল

থার্টি ফার্স্ট নাইট: অপসংস্কৃতির এক বিষাক্ত ছোবল

।। মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী ।।

থার্টি ফার্স্ট নাইট। অর্থ—’একত্রিশের রাত’। ইংরেজি নববর্ষের আগমনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দেশসহ আমাদের বাংলাদেশেও এই দিবস পালন করা হয়। যে জাতি তার সংস্কৃতি-সভ্যতার খবর রাখে না, খবর রাখে না সাংস্কৃতিক ইতিহাসের, নিজস্ব সংস্কৃতিক নীতি-আদর্শের অনুশীলন করে না, স্বীয় সংস্কৃতির পরিচর্যা করে না, নিজের ভান্ডারে অজস্র থাকতেও পরের দিকে তাকিয়ে থাকে। চকচক, ঝকঝক করা নকল ভেজাল যা কিছু পায়, রিলিফের মালের মত হাত বাড়িয়ে নেয়, যে জাতি তাদের পূর্ণাঙ্গ সংস্কৃতি থাকা সত্ত্বেও তা পরিচর্যা না করে অপরের সংস্কৃতি অনুশীলন করে, তার মত দুর্ভাগা জাতি দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নেই।

থার্টি ফার্স্ট নাইটের উদ্দেশ্য—বছরের শেষদিনের বিদায় আর নববর্ষ-আগমনের উৎসব। থার্টি ফাস্ট নাইট কীভাবে পালন করা হয়?—এর কোনও ধরণ বা পদ্ধতি কারও জানা নেই। যে যেভাবে চায় সেভাবে পালন করে। কেউ বাজি ফাটিয়ে, কেউ গান-নাচ করে, আর কেউ বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠান করে। বিশেষ করে যুবক-যুবতীরা রাত বারোটা এক মিনিটে ঘর-বাড়ী-বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ঘরে বা বাসায় বসে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ পালন করা যায় না। এই দিবস পালন করার জন্যে শেরাটন, সোনারগাঁও ইত্যাদি অভিজাত হোটেলগুলোতে চলে যেতে হয়। আর না হয় কোনও কনসার্ট, গান বাজনায় শরীক হতে হয়। বিশেষ করে দেশের সিটি শহরের অভিজাত পরিবারের দুলাল-দুলালীরা মোটর সাইকেল ও গাড়ীর বহর নিয়ে হর্ন বাজিয়ে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ হ্যাপি নিউ ইয়ার” শ্লোগানের ধ্বনী প্রতিধ্বনিতে শহরের অলি-গলি প্রদক্ষিণ করে এবং যুবক-যুবতীরা নাচতে থাকে। সুতরাং, থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের নির্দিষ্ট কোন ধরণ বা নিয়ম-কানুন নেই। তবে তাদের আচার আচরনে বুঝা যায়– যে যত বেশী উলঙ্গ হয় তত বেশী থার্টি ফাস্ট নাইট পালন হয়।

আরও পড়তে পারেন-

আগেই বলা হয়েছে একটি বছরের সমাপ্তি এবং আরেকটি বছরের সূচনালগ্নে এই দিবস পালন করা হয়। তাহলে একটি বছরের শেষ দিনে দাঁড়িয়ে একজন মুসলমানের অনুভূতি কেমন হওয়া চাই? দিন-রাত, মাস-সপ্তাহ অতিবাহিত হয়ে যখন একটি বছর সমাপ্ত হয়, তখন একজন ঈমানদারের অনুভূতি আনন্দের না বেদনার?

আমরা মনে করি একটি বছর যখন সমাপ্ত হয় তখন আমাদের জীবনেরই বড় এক অংশ–৩৬৫ দিনের দীর্ঘ একটি বছর আমাদের হাত ছাড়া হয়ে যায়। আমাদের জীবন ছোট হয়ে যায়। তাহলে আমাদের জন্য তা আনন্দের ব্যাপার হয় কীভাবে? বরং আমাদের জন্য তা হবে বেদনা ও চিন্তার। কারণ একটি বছরের সমাপ্তির অর্থ হল, আমাদের মৃত্যু ও কবর আরো একটি বছর পরিমাণ সময় নিকটবর্তী হয়ে গেল। হায়াতের ভান্ডার থেকে একটি বছর বিয়োগ হয়ে গেল। সুতরাং একটি বছরের সমাপ্তিলগ্নে কোনও অবস্থায় আমার অনুভূতি ‘আনন্দ’ হতে পারে না। বরং বেদনাই হওয়া চাই।

আহ! একটি বছর আমাদের জীবন থেকে গত হয়ে গেল, এ একটি বছরে আমার সৎ কাজ, অসৎ কাজ সব আমলগুলো সময় নামক ডায়েরিতে লিপিবন্ধ হয়ে গেল। সময়ের ক্যমেরাতে সবকিছুর ছবি তুলে নেয়া হল। তাই আসুন বছরের শেষ দিনে আমরা বিগত দিনের ভুলত্রুটির জন্য মহান রবের দরবারে দু’আ ও ক্ষমা প্রার্থনা করি।

মাবুদ! আমরা নিজের উপর যুলম করেছি। যদি তুমি আমাদের ক্ষমা না করো সত্যিই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।