Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন প্রসঙ্গঃ কাদিয়ানীদের ভ্রান্ত আকিদা-বিশ্বাস

প্রসঙ্গঃ কাদিয়ানীদের ভ্রান্ত আকিদা-বিশ্বাস

।। আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন ।।

শুধু বাংলাদেশে নয়; বরং মুসলিম বিশ্বের উলামা সম্প্রদায় ও কোটি কোটি তৌহিদী জনতা সর্বসম্মতিক্রমে এ কথায় একমত যে, মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী সত্য নবী নয়; বরং সে মিথ্যা নবুওয়্যাতের দাবীদার। উলামায়ে কেরাম এই সিদ্ধান্তেও অটল যে, সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.); এরপর কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী বা রাসূলের আগমন ঘটবে না। এরপরও যদি কেউ নবুওয়্যাতের দাবী করে, তাহলে সে মিথ্যুক, কাফের ও আল্লাহর প্রতি অপবাদ আরোপকারী।

এ বিষয়টিকে পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াত ও অগণিত হাদীস সমর্থন করে দ্বিপ্রহরের সূর্যের ন্যায় প্রমাণিত করেছে যে, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)ই একমাত্র আখেরী নবী। মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানী বিশ্বাসও তাই। এর মধ্যে সর্বনিম্নস্তরের ঈমানদার ব্যক্তির মনেও কোন ন্যূনতম দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকতে পারে না। তা সত্ত্বেও বর্তমানে একটি নব্য শিক্ষিত মহল এ বিষয়টিকে গুরুত্ববহ মনে করেন না। এমন কি তারা এটাকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মানতে চায় না। তাদের ধারণা যে, এটা একটি পার্টিগত ব্যাপার। অথচ এ ধারণা পোষণকারী লোকেরাও বিশ্বনবীকে আখেরী নবী হিসাবে মানে। মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে মিথ্যুক, ধোঁকাবাজ, মিথ্যা নবুওয়্যাতের দাবীদার ‘মুসায়লামাতুল কাজ্জাব’ এর উত্তরসূরী বলে জানে।

তারপরও যে সব মুসলিম ভ্রাতৃবৃন্দ এ বিষয়টিকে পার্টিগত মতবিরোধ আখ্যা দিয়ে গুরুত্বহীন মনে করেন, সে সব মুসলিম ভাইদের সম্যক অবগতির জন্য কাদিয়ানীদের পোষণকৃত মতামত এবং মুসলমানদের প্রতি কাদিয়ানীদের কি ধারণা, তার যৎকিঞ্চিৎ বিবরণ তুলে ধরতে চাই। যেন সচেতন তৌহিদী জনতা জানতে পারে যে, এ বিষয়টা কত মারাত্মক ঈমান বিধ্বংসী এবং তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা সমূহ থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে নিজ নিজ ঈমান আক্বীদা হিফাজত করা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ, তা উপলব্ধিতে নিতে পারেন। তাছাড়া এতে করে একথা বলারও অবকাশ থাকবে না যে, এটি পার্টিগত ব্যাপার, বরং এটা ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমনকি ঈমান বাঁচানোর লক্ষ্যে অপরিহার্য কর্তব্যও বটে। তাই সুধী পাঠক মহল বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে ঈমানী দায়িত্ব পালনে সহায়ক হিসাবে উপলব্ধি করবেন বলে আশাবাদী

মির্জা কাদিয়ানী রচিত একাধিক পুস্তিকায় স্পষ্টাক্ষরে উল্লেখ করে যে, ঐসব লোক যারা (গোলাম আহমদ কাদিয়ানী) মির্জা সাহেবকে নবী বলে স্বীকৃতি দেন না, তারাই কাফের।

মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী আরও বলে থাকে- আল্লাহ্ তায়ালা আমার নিকট প্রকাশ করেছেন যে, যেসব লোকের নিকট আমার দাওয়াত পৌঁছেছে অথচ তা গ্রহণ করেনি, ওরা মুসলমান নয়। (আয্ যিকরুল হাকীম- ৪৪ পৃঃ)।

মির্জা কাদিয়ানী আরও বলে- আল্লাহ তাআলা আমাকে বলেছেন, যেসব লোক তোমার অনুসরণ করবে না, তোমার হাতে বায়াত হবে না এবং তোমার বিরোধীতায় পঞ্চমুখ থাকবে, তারা (ঐসকল লোক) খোদা ও তাঁর রাসুলের অবাধ্য, জাহান্নামী। (তাবলীগ রিসালাত-২৭ পৃঃ)।

মির্জা কাদিয়ানী আরও বলে- যে কেউ আমাকে নবী বলে অস্বীকার করবে, সে খোদা ও তদীয় রাসূলের আনুগত্য করল না। কেননা আমার সম্পর্কে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অমান্য করে ও পবিত্র কুরআনকে মিথ্যা বলে, ইচ্ছাকৃতভাবে খোদার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করে, আমি নবী হওয়ার শত শত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও আমাকে মিথ্যুক আখ্যা দেয়, এসব লোক কীভাবে মু’মিন হতে পারে? প্রথম থেকে মু’মিন থাকলেও আমার প্রতি ঈমান না আনার কারণে কাফের হয়ে গেছে। (হাক্বীক্বাতুল ওহী- ১৬৩ পৃঃ)।

মির্জা কাদিয়ানী আরও বলে- কাফের দু’প্রকার। প্রথমতঃ যারা ইসলাম ও হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর নবুওয়্যাত অস্বীকার করে। দ্বিতীয়তঃ মসীহে মা উদ (মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী)কে অমান্য করে। অথচ তার নিকট সম্পূর্ণ দলিল ও প্রমাণাদি রয়েছে, তা সত্ত্বেও তাকে মিথ্যুক বলে। তাকে যথার্থ স্বীকৃতি দিয়ে সত্য বলে জানার জন্য আল্লাহ ও তার রাসূল তাগিদ দিয়েছেন। এবং তার পূর্ববর্তীগণও তাদের নিজ নিজ কিতাবে তাগিদ দিয়েছেন। তাই যেসব লোক মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে অমান্য করে তার নবুওয়্যাতকে অস্বীকার করে, তারা সকলেই আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার কারণে কাফের। আসলে সুক্ষ্মভাবে চিন্তা করে দেখলে একথা প্রতীয়মান হয় যে, এ দু’প্রকার কাফেরের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বরং একই রূপ। (হাক্বীক্বাতুল ওহী-১৭৯পৃঃ)

মির্জা কাদিয়ানীর খলিফা মিঞা মাহমুদ আহমদ নিজ গ্রন্থ “আয়নায়ে ছাদাকাতে” লিখেছে- যে সব মুসলমান মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর হাতে বায়াত হয়নি তারা প্রত্যেকেই কাফের। যদিও কেউ মসীহে মাউদের নামও শুনেনি এসব লোক ইসলামের গন্ডি বহির্ভুত।

২১শে জুন ১৯২৩ইং সালে “আল ফযল” পত্রিকায় পাকিস্তান জামেয়া মিল্লিয়ার একজন ছাত্র আঃ কাদেরের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। এতে জনাব আঃ কাদের লেখেন যে, আমি একদিন আছরের পর মির্জার খলিফা মাহমুদ আহমদের সাথে আলোচনা করছিলাম যে, ঐসব মুসলমান যারা মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে অমান্য করে তাঁদেরকে আপনারা কাফের বলেন কেন? উক্ত কথোপকথনের সারমর্ম নিম্নে প্রদত্ত হলো-

ছাত্র আঃ কাদেরঃ একথা সত্য যে, আপনি মুসলমানদেরকে কাফের বলেন?

খলিফাঃ হ্যাঁ, তা ঠিকই।

ছাত্রঃ কিসের উপর ভিত্তি করে আপনি তাদেরকে কাফের বলেন? তারা কি কালেমা পড়েন না?

খলিফাঃ ওরা জিহবার আগায় কালেমা পড়ে বটে; কিন্তু তাদের সাথে আমাদের মতবিরোধ ফরুয়ী বিষয়ে নয়; বরং উছুলী বিষয়ে। কেননা মুসলমান হওয়ার জন্য আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি ঈমান আনার সাথে সাথে সকল নবী রাসুলদের প্রতি, সকল ফেরেস্তাদের প্রতি, আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি ঈমান আনা একান্ত জরুরী। মাত্র একজন নবীর প্রতিও যদি ঈমান না আনে তাহলে মুসলমানদের আওতাভূক্ত থাকতে পারবে না। সুতরাং ওরা মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী স্বীকার করে না বিধায় ওরা কাফের। কাদিয়ানী মাযহাবের আরেকজন কথিত বুযুর্গ আরেকটু অগ্রসর হয়ে বলে, যারা আহমদিয়াত অর্থাৎ মির্জা কাদিয়ানীর প্রতি ঈমান রাখা ব্যতীত যে ইসলাম রাখে সেটা শুষ্ক ইসলাম। তদ্রুপ কাদিয়ানে হজ্ব ব্যতীত যারা মক্কায় হজ্ব করে তাদের হজ্ব শুষ্ক। কেননা বর্তমান স্থান (মক্কা) হজ্বের উদ্দেশ্য পূরণে যথেষ্ট নয়। (আখবারে পয়গামে ছালেহ- লাহোর- ১/২২)।

যেসব উম্মতে মুহাম্মদী (সা.) মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী বলে স্বীকার করে না, তাদেরকে মির্জায়ীরা শুধু কাফের বলে ক্ষান্ত হয়নি; বরং তাদেরকে অরণ্য ও মাঠের শূকর, কুকুরের বাচ্চা ইত্যাদি ন্যক্কারজনক উপাধিতে ভূষিত করেছে। যার কিঞ্চিত দৃষ্টান্ত নিম্নে প্রদত্ত হল।

মির্জা কাদিয়ানী বলে- সকল মুসলমান আমাকে নবী স্বীকার করে নিয়েছে ও আমার দাওয়াত গ্রহণ করেছে। কেবল ব্যভিচারীনী বদকারদের সন্তান আমাকে অমান্য করে। (আয়নারে কামালাত-৫৪৭ পৃঃ)।

যারা আমার বিরোধিতা করে তারা ঈসায়ী, ইহুদী, মুশরীক ও জাহান্নামী। (নুযুলুল মসীহ-৪পৃঃ)।

নিশ্চয়ই আমাকে অস্বীকারকারীরা জঙ্গলের শূকর ও তাদের মেয়েরা কুকুরী হতে সীমাতিক্রম করেছে। (নজমুল হুদা-১০ পৃঃ)।

যারা আমাদের সফলতাকে স্বীকার করবে না (অর্থাৎ মুসলমান), পরিস্কারভাবে বুঝে নাও যে, তারা জারজ সন্তান। (আনোয়ারুল ইসলাম- ৩০ পৃষ্ঠা)।

মির্জা কাদিয়ানীর অনুসারীদের পক্ষে কোন মুহাম্মদী (সা.) মুসলমানের জানাযায় অংশ গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। যেমন মির্জা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী স্বয়ং তার পুত্র মির্জা ফখল আহমদের জানাযা এজন্য পড়েনি যে, সে তার বাবার নবুওয়্যাতের প্রতি ঈমান আনেনি। (আখবারুল ফযল- ১৪ ডিসেম্বর- ১৯৩১ ইং)।

আরও পড়তে পারেন-

কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করল যে, যেসব জায়গায় মির্জা কাদিয়ানীর দাওয়াত পৌঁছেনি সেখানে যদি কোন লোক মৃত্যুবরণ করে আর যদি ঘটনাক্রমে সেখানে কোন মির্জায়ী উপস্থিত হয়ে যায়, তবে তার জানাযা সে পড়বে কি না?

উত্তরে বলল- যখন ঐ মৃতের আল্লাহর নবীকে চিনার সৌভাগ্য নসীব হয়নি। তাই তার জানাযা পড়বে না। (আল ফযল, ৬ই মে ১৯১৫ ইং)।

খলিফা মিয়া মাহমুদ আহমদের নিকট এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল যে, গায়রে আহমদী অর্থাৎ মুসলমানদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু সন্তান মারা গেলে তাদের জানাযা কেন পড়বে না? অথচ তারা নিষ্পাপ। বড় হলে হয়তঃ আহমদী (কাদিয়ানী) হয়ে যেত।

উত্তরে বলল- যেভাবে ইহুদীদের নিষ্পাপ শিশু সন্তানদের জানাযা পড়া হয় না, তদ্রুপ গায়রে আহমদী (মুসলমানদের) শিশু সন্তানদেরও জানাযা পড়া হবে না। (আখবারুল ফযল, ২৩শে আগস্ট ১৯২২ ইং)।

দৃষ্টান্ত স্বরূপ একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে যে, তালিমুল ইসলাম হাই স্কুলে (কাদিয়ানী) চেরাগ উদ্দীন নামে এক মির্জায়ী ছাত্র ছিল। সে তার বাবার নিজ বাড়ী শিয়াল কোট অবস্থানকালে তার নিজ মাতা ইন্তেকাল করেন। তার আম্মা মুহাম্মদী (মুসলমান) ছিলেন বিধায় সে তার নিজ মাতার জানাযায় অংশ গ্রহণ করেনি। তাই চেরাগ উদ্দীনকে মির্জায়ীদের পক্ষ হতে ধন্যবাদ দেয়া হল- হে চেরাগ উদ্দীন! তালিমুল ইসলাম হাই স্কুলে মর্যাদাশীল ছাত্র থাকলে তুমিই আছ। তোমার মত নিষ্ঠাবান একজনই যথেষ্ট, যে নিজ মাযহাবের উপর অটল থাকবে। (আখবারুল ফযল, ২০শে এপ্রিল ১৯১৫ইং)।

বিয়ে-শাদী: মির্জায়ীরা মুসলমানদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করাকে ঘৃণিত ও নিষিদ্ধ মনে করে। ১৯৩৩ ইং এর ফেব্রুয়ারী মাসে আল ফযল পত্রিকায় যা প্রকাশিত হয় তা নিম্নে উদ্ধৃত হলো- এটা সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মির্জায়ী আহমদীদের (কাদিয়ানীদের) কন্যাদের গায়রে আহমদী অর্থাৎ মুসলমানদের সাথে বিয়ে দেয়া জায়েয নয়।

বারাকাতে খেলাফত/৭৫ পৃষ্ঠায় খলিফা মিঞা মাহমুদ লিখে- মসীহে মাঊদ (মির্জা কাদিয়ানী) কড়া নির্দেশ দিচ্ছে যে, মির্জায়ী আহমদীদের কোন মেয়ে গায়রে আহমদীর (মুসলামনদের) সাথে যেন বিয়ে দেওয়া না হয়। এ হুকুম পালন করা অপরিহার্য কর্তব্য বা ফরয।

আরও বলা হয়েছে- হযরত মসীহে মাউদ (মির্জা কাদিয়ানী) ঐসব আহমদীদের প্রতি অত্যন্ত নারাজ যারা নিজ কন্যাকে গায়রে আহমদীর (মুসলমানদের) সাথে বিয়ে দিয়ে থাকে। এক ব্যক্তি হযরত মসীহে মাঊদের দরবারে বারংবার কাকুতি মিনতি করে মজবুরী পেশ করলেন। তারপরও হযরত (মির্জা) তাদের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করে গায়রে আহমদীদের (মুসলমান) সাথে বিয়ে দেয়ার অনুমতি দেয়নি। বরং বলল, তোমার মেয়েকে ঘরে বসিয়ে রাখ, তবুও ওদের সাথে বিয়ে দিও না। কিন্তু সেই ব্যক্তি হযরতের (মির্জা) মৃত্যুর পর নিজ কন্যাকে গায়রে আহমদী (মুসলামানের) সাথে বিয়ে দিয়েছেন। তাই মির্জার খলিফায়ে আওয়াল তাকে ইমামতের পদ হতে বরখাস্ত করল ও তাদের দল থেকে বের করে দিল এবং নিজ খেলাফতের ছয় বৎসরের মধ্যে ঐ ব্যক্তি বারংবার তাওবা করা সত্ত্বেও তার তাওবা কবুল করেনি। (আনোয়ারে খেলাফত-৯৩ পৃঃ)।

এভাবে অনেক লোককে মির্জায়ীরা তাদের দল থেকে বহিস্কার করে দিয়েছে। যেমন ৬ই ডিসেম্বর ১৯৩৪ ইং সনে আলফযল পত্রিকায় প্রকাশিত হয় যে, জিলার পাঁচ ব্যক্তিকে মির্জায়ী জামাআত হতে বহিষ্কার করা হয়। তাদের অপরাধ হল কেবল, তাদের মেয়েকে মুসলমানদের সাথে তারা বিবাহ দিয়েছে।

মির্জায়ীদের প্রতি মুসলমানদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ

হযরত মসীহে মাঊদ (মির্জা কাদিয়ানী) বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা দেয় যে, গায়রে আহমদীর (মুসলমানদের) সাথে আমাদের কোন প্রকার (সুখে দুঃখের) সম্পর্ক নেই। তাদের দুঃখে আমরা জড়িত হব না। তাই তাদের জানাযায় কি করে শরীক হব? (আখবারুল ফযল ১৮ ই জুন) তদীয় ছাহেবজাদা বশির আহমদ কাদিয়ানী তার নিজ গ্রন্থ “কালিমাতুল ফযলে” পরিস্কারভাবে ঘোষণা দেয় যে, গায়রে আহমদীদের (মুসলমানদের) সাথে আমাদের কোন ধরণের সম্পর্ক থাকতে পারে না। যেহেতু মানুষের মধ্যে পরস্পরে দু’ধরণের সম্পর্ক গড়ে উঠে- (১) দ্বীনী সম্পর্ক ও (২) দুনিয়াবী সম্পর্ক।

তাদের সাথে আমাদের দ্বীনী কোন সম্পর্ক হতে পারে না যেহেতু তাদের নামায আমাদের নামায থেকে ভিন্ন প্রকৃতির এবং আমাদের জন্য তাদের জানাযায় শরীক হওয়া নিষিদ্ধ-এভাবে দুনিয়াবী সম্পর্ক বিয়ে শাদী ইত্যাদিও নিষিদ্ধ। হ্যাঁ যদি কেউ বলে থাকেন যে, মুসলমানদের মেয়ে আমরা আনতে পারি সেটা তো বড় কথা নয়। যেহেতু ইহুদীদের মেয়েদেরকেও বিয়ে করা জায়েয। আর যদি বলেন, গায়রে আহমদীকে (মুসলমানদেরকে) সালাম করেন কেন? উত্তরে বলা হবে, হুজুর (সা.)ও অনেক সময় ইহুদীদেরকে সালাম করতেন। তাছাড়া যারা বিশেষভাবে বিরোধিতা করত মসীহে মাউদ তাদেরকে কখনও সালাম করেনি।

মুসলমানদের প্রতি কাদিয়ানীদের ভ্রান্ত ধারণাসমূহ হতে নমুনা স্বরূপ কিছু উল্লেখ করা হল। এখন মুসলমানদের জন্য খুবই চিন্তার বিষয় যে, মুসলমানদের অনেক নব্য শিক্ষিত ব্যক্তি নিজ মান-মর্যাদার মোহে উচ্চ পদবীর লোভে ও দুনিয়ার লালসায় কাদিয়ানী প্রশ্নটিকে ততটা গুরুত্ব প্রদান করেন না। অথচ নিজেকে আখেরী নবীর উম্মত ও মিথ্যা নবুওয়্যাতের দাবীদার মুসায়লামাতুল কাজ্জাব এর হত্যাকারী- দের উত্তরসূরী বলে দাবী করে থাকেন। তাই তাদের ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে একটু সচেতন হওয়া উচিত। সামনের সময় বড় বিপদ সংকুল।

লেখক: মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক- জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী, চট্টগ্রাম এবং প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব- নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।