Home প্রবন্ধ-নিবন্ধ নিজের পছন্দ উৎসর্গিত হোক অপর মুসলিমের জন্য

নিজের পছন্দ উৎসর্গিত হোক অপর মুসলিমের জন্য

- প্রতিকী ছবি।

।। বিনতে জাহাঙ্গীর ।।

জীবনের চলার পথে কতো মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয়। অচেনা অজানা কতো জনই চেনা-জানা হয়! সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায় কতকে বিস্মৃতির গভীরে! কেউবা সম্পর্কগুলো আকঁড়ে রাখে পরম মমতায়, হাজারো ব্যস্ততার বেড়াজাল ডিঙিয়ে।

কথায় বলে- “বিপদে পড়লে বন্ধু চেনা যায়”।

কথাটার বাস্তবতা, জীবনে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছাড়া হয়তোবা এতোটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারতাম না! অনেকের নিজ কাজে দায়িত্বশীলতা ও অন্যেরটায় দায়িত্বহীনতা ঘটতে দেখি চোখের সামনে।

“দায় ও দায়িত্ব” এ দুটো আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জীবনের এই স্বল্প পরিসরে যখনই কারো কোন উপকার; হোক কাজে, কথায় বা সমস্যা সমাধানের, সবর্দা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যথাসম্ভব দ্রুত ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের। কখনো তা অন্যের কাজ ভাবিনি, নিজের মনে করেই করেছি। নবীজির বাণীও এমনটিই বলে।

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

لا يؤمن احدكم حتي يحب لأخيه ما يحب لنفسه-
“তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তা পছন্দ করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে। ” (বুখারী- ১৩, মুসলিম- ৪৫)।

অপর মুসলিমের স্বার্থ চিন্তায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এতোটাই গুরুত্ব দিয়েছেন যে, তিনি এ ব্যাপারে ফযিলতও বলেছেন। ইরশাদ করেছেন-

“যে প্রথমে সালাম করে সে আল্লহর নিকট অধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত।” (তিরমিযী, আবূ দাউদ)। হায়াত ও পরিবারে বরকত হবে। (তিরমিযী)।

পরস্পর সাক্ষাতে হেন্ডশেককে সামাজিক সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ মনে করা হয়। নবীজি ইরশাদ করেছেন – “যখন দু’জন মুসলমানের সাক্ষাত হয় ও মুসাফাহা করে (পরস্পর হাত মিলাায়), পৃথক হওয়ার পূর্বেই তাদের গোনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।” (মুসনাদে আহমাদ- ১৮৪৫৬, তিরমিযী)।

নবীজি (সা.) প্রতিবেশির ব্যাপারে বলেছেন- “জিবরীল (আ.) প্রতিবেশির ব্যাপারে আমাকে এতো তাগিদ করেছেন যে, আমার ধারণা হয়েছিল প্রতিবেশিকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন”। (তিরমিযী)।

যে ব্যাক্তি তার ভাইয়ের ইজ্জত সম্মান রক্ষা করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তার চেহারা হতে জাহান্নামের আগুন হটিয়ে দিবেন। (তিরমিযী)।

নবীজির এ সমস্ত পবিত্র বাণী হতে সুস্পষ্ট প্রতিভাত হয় যে, একজন মুসলিমের সাথে সদ্ব্যবহার, (বৈধ বিষয়ে) খুশি রাখা, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও সাওয়াবের বিষয়। আত্মত্যাগের মানসিকতা দ্বারা সম্ভব অপরের সন্তুষ্টির জন্য নিজেকেে বিসর্জন দেয়া।

স্বার্থপূর্ণ এ সমাজে আত্মত্যাগের মানসিকতাই অনেক সমস্যার সমাধান। অপরের প্রতি সদা কল্যাণ কামনায় সকলের হৃদয় হোক সুরভিত। রবের কাছে ক্ষমা পাবার বিনিময়ে, হাসোজ্জলতার সাথে মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল হতে হবে উদারতার সাথে। এতে শান্তি পাবে মানুষ, মানবতা।

আপনি হোন নিস্বার্থবান, কল্যাণকামী।
ভুল বুঝবে একদিন স্বার্থপর মানুষগুলো…

আরও পড়তে পারেন-

তিলাওয়াতের মৌসুম রমাদান

আয়াতে কারীমা: আমার কুরআনী ভাবনা

মেঘাচ্ছন্ন হৃদয়াকাশে রবের সান্ত্বনার আয়োজন

শুধু জ্ঞান অর্জনই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন ‘দ্বীনের সঠিক বুঝ’

শিশুদের সাথে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম