গাজা যুদ্ধের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে, ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবার সামনে, ৭০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে গাজায় গণহত্যা চলছে। গত ২৩ মাস ধরে ইসরাইল প্রতি ঘন্টায় একটি শিশুকে হত্যা করেছে। এগুলো কেবলমাত্র সংখ্যা নয়; প্রত্যেকেই এক একটি জীবন।’
এরদোগান বলেন, গাজায় মানবিক বিপর্যয় আধুনিক ইতিহাসে বিরল। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘গাজায় কোনো যুদ্ধ চলছে না; এখানে যুদ্ধের দুই প্রতিপক্ষ নেই। এখানে আক্রমণ চলানো হচ্ছে, এটি একটি গণহত্যা।’
তিনি বলেন, ‘আজই সেই দিন, আজ মানবতার খাতিরে নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর দিন। যখন আপনাদের জনগণ গাজায় চলমান বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, তখন সাহস দেখান, এগিয়ে আসুন।’
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
ফিলিস্তিনকে যেসব দেশ এখন পর্যন্ত স্বীকৃতি দিয়েছে, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যারা এখনো স্বীকৃতি দেয়নি তাদের উচিত ‘আর দেরি না করে’ পদক্ষেপ নেয়া।’
প্রতিদিন ২৫ লাখ গাজাবাসী তাদের অবস্থান থেকে স্থানচ্যুত হচ্ছে, অন্যত্র যেতে হচ্ছে বাধ্য হয়ে বলেও জানান তিনি। গাজার শিশুদের ভয়াবহ অবস্থা তুলে ধরে এরদোয়ান বলেন, ‘মাত্র দুই বা তিন বছরের ছোট ছোট বাচ্চারা হাত-পা হারাচ্ছে। আজ গাজায় এটি এক সাধারণ দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
এরপর এক জীবিত কঙ্কাল হয়ে যাওয়া শিশুর ছবি দেখিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কোন বিবেক এটি সহ্য করতে পারে, কোন বিবেক নীরব থাকতে পারে? যে বিশ্বে শিশুরা ক্ষুধায়, ওষুধের অভাবে মারা যায়, সেখানে শান্তি কীভাবে সম্ভব?’
ইসরাইলের চলমান ‘গণহত্যার’ প্রমাণ হিসেবে আনাদোলুর তোলা এ ছবি উপস্থাপন করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাস্ট্রে, ইউরোপে, বিশ্বজুড়ে কোথাও যদি কোনো শিশুর হাতে ছোট্ট কাঁটা বিঁধে, তখন বাবা-মায়ের হৃদয় কেঁপে ওঠে। অথচ গাজায় শিশুদের হাত-পা অজ্ঞান না করেই কেটে ফেলতে হচ্ছে। স্পষ্ট করে বলি, এটাই মানবতার সর্বনিম্ন স্তর। গত শতকে মানব ইতিহাস এমন বর্বরতা প্রত্যক্ষ করেনি। আমাদের চোখের সামনেই সবকিছু ঘটছে। গণহত্যা সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।’
ইসরেইলি হামলায় নারী-শিশুর অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, প্রতিবাদের অধিকার, সমতা ও ন্যায়বিচার, সবকিছুই উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ