Home ইসলাম সংযম আত্মশুদ্ধি ও কঠোর সিয়াম সাধনার মাস ‘মাহে রমযান’

সংযম আত্মশুদ্ধি ও কঠোর সিয়াম সাধনার মাস ‘মাহে রমযান’

।। মুনির আহমদ।।

সংযম, আত্মশুদ্ধি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার আহ্বান নিয়ে দীর্ঘ এক বছরের ব্যবধানে আবারও ফিরে এসেছে অপার রহমতের মাস রমযানুল মুবারক। রমযান অতি পবিত্র ও বরকতময় মাস। খোদা ভিরু আশেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য অপূর্ব সুযোগের মাস মাহে রমযান। প্রথম দশ দিন রহমত, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাত ও আখেরী দশ দিন বিশেষ নাজাতের মাস রমযান।

প্রতিটি খোদা প্রেমিক ও রাসূল প্রেমিককে এ মাসে আত্মশুদ্ধি, আত্মসংযম ও আত্মসংশোধনের মাধ্যমে মানবীয় গুণাবলীর উৎকর্ষ সাধনের প্রশিক্ষণ নিতে হবে এবং প্রশিক্ষণ নিতে হবে মানব সমাজের সামগ্রিক কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার। সুতরাং অপূর্ব সুযোগ লাভের এ মাসে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে এর সদ্ব্যবহার করা, আল্লাহ্ তায়ালা প্রদত্ত রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সুযোগ গ্রহণ করা প্রত্যেক সচেতন মু’মিনের একান্ত কর্তব্য।

আরও পড়তে পারেন-

রোযাদার মু’মিনগণ- যাঁরা দিনের বেলা রোযা ও সংযমতায় কাটিয়ে থাকেন এবং রাতের বেলা আল্লাহর দরবারে ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল এবং স্বীয় গুনাহ-খাতার জন্য কান্নাকাটির মধ্য দিয়ে এই মর্যাদাপূর্ণ মাসকে অতিবাহিত করতে সচেষ্ট হন, তাঁরাই সফলকাম এবং তাঁদের জন্যই স্বার্থক হবে মর্যাদাপূর্ণ এই মাহে রমযানের উপস্থিতি।

পক্ষান্তরে যারা অলসতা ও খেয়ালিপনার মধ্য দিয়ে এ পবিত্র রমযানের গুরুত্ব অনুধাবন করতে সক্ষম হবে না, দিনের বেলা রোযা রাখবে না বা রাতের বেলা ইবাদতে লিপ্ত হবে না এবং মর্যাদাপূর্ণ এই মাস পেয়েও স্বীয় কৃতকর্মের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে কান্নাকাটি ও অনুশোচনার মাধ্যমে ক্ষমা করিয়ে নিতে যত্নবান হবে না, তারাই হতভাগা।তারা এ মাসের মহিমা ও বরকত লাভে মোটেও সক্ষম হবে না। তাদের ভাগ্যে জুটবে না এ সফলতার সুযোগ গ্রহণ, এটাই চিরায়ত বিধান। তারা নাম মাত্র মুসলমান। তাদের ভাগ্যে কেবল আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের অভিশম্পাতই জুটবে। সুতরাং প্রত্যেক ইসলাম প্রিয় ও খোদাভীরু ব্যক্তি, সমাজ এবং সংগঠনকে রমযানের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেক ঈমান বিধ্বংসী তথা বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, নগ্নতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং প্রকাশ্যে রমযান সম্পর্কে অপব্যাখ্যাকারীদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতে হবে।

হামদর্দী ও সহমর্মিতার এ মাসে গরীব, অনাহারক্লিষ্ট, এতীম ও দুঃখীদের মুখে হাসি ফোটাতে সচেষ্ট হতে হবে এবং প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের খবরগিরীর প্রতিও দৃষ্টি দিতে হবে। পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষকে ভুলে একই কাতারে শামীল হতে হবে। বছরের বাকী মাসগুলিতেও এভাবে চলার ইস্পাত কঠিন সংকল্প করতে হবে।

স্মর্তব্য  যে, রোযা কবুল হবার জন্য হাতের গুনাহ্, পায়ের গুনাহ্, কানের গুনাহ্, চোখের গুনাহ্, মুখ ও পেটের যাবতীয় গুনাহ্ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত বাঁচতে পারবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত রোযা কবুল হবে না, রোযার ফযীলত সমূহ লাভ করা যাবে না, রোযার বরকত পাওয়া যাবে না, রোযার মুখ্য উদ্দেশ্য আত্মশুদ্ধি অর্জন করা যাবে না। “লাআল্লাকুম তাত্তাকূন”-এর তাৎপর্য অর্জন করতে হলে, রাইহান দরজা দিয়ে বেহেশতে প্রবেশ করতে হলে, অবশ্যই রোযা কবুল করানোর জন্য সম্ভাব্য ও সমূহ চেষ্টা করে আল্লাহর কাছে দোয়ার মাধ্যমে আশাবাদী থাকতে হবে।

মানুষ তার সম্ভাব্য চেষ্টা করার পর আল্লাহর রহমতের আশা করলে, নিশ্চয়ই রোযা কবুল হবার ব্যাপারে সে আশাবাদী হতে পারে। স্বাগত হে মাহে রমযান।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।