Home ইসলাম সিয়াম সাধনার মাধ্যমে এ মাসেই দূর্দিন কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ!

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে এ মাসেই দূর্দিন কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ!

ছবি- উম্মাহ।

।। মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী ।।

বছরে এক মাস রমজানের রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি স্তম্ভের একটি। ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে সুবহে সাদেক থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত পানাহার এবং নফসের কুমন্ত্রণা প্রবৃত্তি পূর্ণ করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকাকেই রোজা বলা হয়।

প্রত্যেক মুসলমান জ্ঞানপূর্ণ, প্রাপ্তবয়স্ক, পুরুষ এবং নারী, যার রোজা রাখার মত শক্তি রয়েছে- তার উপর রোজা রাখা ফরজ। মান্নত, কাযা এবং কাফ্ফারার রোজাও ফরজ। এছাড়া বাকি সব রোজা নফল। যা রাখলে সাওয়াব পাওয়া যাবে, না রাখলে কোন গুনাহ হবে না। তবে মনে রাখতে হবে- রমজানের ঈদের দিন, কোরবানির ঈদের দিন এবং কোরবানির ঈদের পরের তিন দিন, সর্বমোট পাঁচ দিন রোজা রাখা হারাম।

সর্বাবস্থায় ঘরে বসে এই দোয়া বেশি বেশি করে পাঠ করি-
حسبنا الله ونعم الوكيل نعم المولا ونعم النصير
উচ্চারণ- “হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা ওয়া নি’মান নাসির”।

আরও পড়তে পারেন-

মাহে রমযানের ফযীলত এবং বিধি-বিধান ও পূর্ণাঙ্গ মাসআলা

কখন জমিনে মহামারি ছড়িয়ে পড়ে এবং মু’মিনদের করণীয়

মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা

নারীর অর্থ উপার্জন প্রসঙ্গে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

‘করোনাভাইরাস শক্তিশালীদের মাথা নত করতে বাধ্য করেছে’

এ বছরের রোজা সারা পৃথিবীর মুসলমানরা এক ক্রান্তিকালে আদায় করতে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ বা করোনা নামক ভাইরাসে যখন সারা পৃথিবী আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত, অসহায়, স্তব্ধ ও বিপদগ্রস্থ, ঠিক এমন সময় এসে গেলো পবিত্র মাহে রমজান।

এই রমজান মাসে রোজা অবস্থায় আমরা বেশি বেশি করে ইবাদত, তিলাওয়াত, বন্দেগী, দান-সদক্বা করব এবং মহান আল্লাহর দিকে ফিরে আসার চেষ্টা করব।

আল্লাহ তা’আলা ছাড়া এই মহামারি থেকে কেউ আমাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঘরে পড়বো, না মসজিদে পড়বো? জুমা’র নামাজ মসজিদে পড়াবো, না ঘরে জুমা’র স্থলে জোহরের নামায আদায় করবো? তারাবিহ মসজিদে পড়বো? না ঘরে, ইফতার মসজিদে না ঘরে? এ সকল প্রশ্ন সিয়াম সাধনার এই মাসে পরিহার করে যার যেখানে সুযোগ হয় মসজিদে বা ঘরে এ সকল ইবাদত আদায় করার চেষ্টা করব।

এই মহামারি ও দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় ঘরে তারাবিহর নামাজ আদায় করলে নামাজ হবে না, জুমার দিনে জুমার নামাজের স্থলে জোহরের নামায ঘরে আদায় করে নিলে নামাজ আদায় হবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামায ঘরে আদায় করলে নামায আদায় হবে না- এমন ফতওয়া এই পর্যন্ত কেউ দেয়নি।

সুতরাং “মসজিদ খোলা থাকবে, নামাজ চলবে, জুমা’ চলবে, ই’তিকাফ চলবে সরকার নয় পৃথিবীর কোন শক্তি বাধা দিতে পারবে না।” এ সকল দায়িত্বহীন উদ্দেশ্য প্রণোদিত, আবেগী, রাজনৈতিক বক্তব্য পরিহার করতে হবে।

কারণ, বাংলাদেশ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ, মসজিদ-মাদ্রাসার দেশ, ওলামা-মাশায়েখদের দেশ। মসজিদ বন্ধ করতে হবে, নামাজ চলবে না, জুমা’ চলবে না, ই’তিকাফ চলতে পারে না, মসজিদে ইফতার করতে পারবে না- এধরণের কথাতো এই পর্যন্ত কেউ বলেননি। বলার সাহসও নেই।

সুতরাং সাস্থ্যবিধি ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামার্শ মেনেই ইবাদত, তেলওয়াত করতে হবে। তাতে পরিপূর্ণ সাওয়াবের আশা করা যায়। কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি বাদ দিয়ে তাওবা করে সিয়াম সাধনার এই মাসে আমরা আল্লাহর দিকে ফিরে যাই। এই মাসেই দুর্দিন কেটে যাবে, ইনশাআল্লাহ।

– মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুহাদ্দিস- আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: আরএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

করোনার আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলছে চীন