Home ইসলাম ‘আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পেতে হলে সঠিক আক্বিদা-বিশ্বাসে ফিরে আসা জরুরী’

‘আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পেতে হলে সঠিক আক্বিদা-বিশ্বাসে ফিরে আসা জরুরী’

।। খতীবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীব ।।

জাহিলি যুগের ধ্যান-ধারণা ছিল- রোগ-ব্যধি একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে সংক্রমিত হয় । আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে রদ করে ঈমানের পূর্ণতার জন্য হাদিসে ইরশাদ করেন- لا عدوى ولا طيرة في الاسلام ছোঁয়াছুঁয়ি বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছুই নেই। যা কিছু হয় সবই আল্লাহর হুকুমে ও তার ইচ্ছায় হয়। রোগব্যধি দেওয়ার মালিকও আল্লাহ এবং তা থেকে পরিত্রাণ বা মুক্তি দেওয়ার মালিকও আল্লাহ।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় যে, ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী, ঈমান তাকওয়া ও ইসলামী তাহযিব-তামাদ্দুন বিদ্বেষীদের প্রচার প্রপাগান্ডা ও স্লোগানে বিভ্রান্ত হয়ে মুসলিম রাষ্ট্র ও সরকারগুলোও তাদের সুরে সুর মিলিয়ে ইসলাম ও মুসলিম জাতিসত্তার পরিপন্থী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছেন । যার ফলে খোদায়ী গজব কঠিন থেকে কঠিন আকার ধারণ করছে। “করোনাভাইরাস(কোভিড-১৯) একটি ছোঁয়াছুঁয়ি বা সংক্রামক রোগ। কোথাও একজন আক্রান্ত হলে তার পরিবার, আশপাশের লোকজন ও তার সংস্পর্শে যারা যাবে এবং তার সঙ্গে যাদের মুলাকাত হবে তারাও আক্রান্ত হবে” এ ভয়-ভীতি ছড়ানোর ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে খুবই ভয় ও আতংক প্রবেশ করেছে।

আরও পড়তে পারেন-

বিদ্যুৎ সেক্টরে অপচয় ও গণদুর্ভোগ চরমে

ফেসবুকে ঝগড়া-ঝাঁটিতে কার লাভ হয়?

দুর্যোগে মানুষকে সহায়তার রাজনীতি

সফল জীবন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ার সহজ উপায়

হাদীসশাস্ত্রে ইমাম আযম আবু হানিফা (রাহ.)

যে কারণে বিবি তার স্বামীকে ভয় পায়, মা তার সন্তানকে ভয় পায়, বাবা তার ছেলেকে ভয় পায়। যে কারণে স্বামী দীর্ঘদিন পর কর্মস্থল থেকে বাড়িতে আসলে স্ত্রী পালিয়ে যাচ্ছে। বাবা দীর্ঘদিন পর কোথাও থেকে এসেছে, ছেলেমেয়েরা তার কাছে আসছে না। শ্রদ্ধার পাত্র, মুরুব্বী, অভিভাবক কেউ জ্বর কাশি সর্দি ইত্যাদি কোন কিছুতে আক্রান্ত হয়েছে, পরিবারের অন্য ছোট-বড় সবাই তার থেকে দূরে সরে গেছে। অসুস্থ রোগীর সেবা যত্নে পরিবারের আপনজন কেউ কাছে ভিড়ছে না।

এমনকি আমার নিজ চোখে দেখা ঘটনা- “মায়ের একমাত্র আদরের কন্যা। মা বয়স্ক এবং দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা গেছেন। কিন্তু একমাত্র মেয়ে তার লাশটা দেখতেও আসেনি; করোনা ধরে ফেলবে এই ভয়ে। বাবার একমাত্র উচ্চশিক্ষিত আদরের ছেলে। গ্রাম্য কৃষক বাবা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে সর্বোচ্চ শিক্ষিত করেছেন। বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে জানাযা তো দূরের কথা, শেষবারের মতো লাশটা দেখতে পর্যন্ত আসেনি আদরের সেই পুত্র; করোনা ধরে ফেলবে এই ভয়ে।

এক বন্ধুর শরীরের জ্বর, আরেক সুস্থবন্ধু তার পাশে বসে খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, কথাবার্তা বলছেন। ইত্যবসরে অপর আরেক বন্ধু এসে জানতে পারলেন যে- তিনি রোগী, গায়ে জ্বর। তৎক্ষণাৎ সে সেখান থেকে দূরে সরে যায় এবং সুস্থ বন্ধুকে কাছে ডেকে নিয়ে খুব আশ্চর্য এবং রাগান্বিত হয়ে বলেন- “তার গায়ে জ্বর, তারপরও আপনি তার কাছে কেন গেলেন, তার সংগে বসে বসে কথা বললেন !! তার কাছে কাউকে যেতে নিষেধ করেন! চলুন, তারাতাড়ি কেটে পড়ি; করোনা ধরে ফেলবে”।

অদ্য ৭ জুন দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় দেখলাম, মায়ের শ্বাসকষ্ট হওয়াতে তারই পেটে ধারণ করা ছেলে মাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গেটে ফেলে চলে গেছেন। আজই আমার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জানতে পারলাম, তার বাসার সন্নিকটে ৬০/৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ লোক জ্বর ও ঠান্ডা-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ায় পরিবারের সবাই তাকে বাসায় একা রেখে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন।

করোনা ‘সংক্রমক রোগ’-এর প্রচার প্রপাগান্ডার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের অন্তরে “করোনা ভীতি” এমন আকার ধারণ করেছে যে, পারিবারিক বন্ধন ও আপনজনের মায়া- মুহাব্বত বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস অন্তর থেকে মুছতে শুরু করেছে। [চলবে]

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

রেড জোন উখিয়া: সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শিবির