Home ফিকহ ও মাসায়েল তালাকের পর তাওবা পড়ানো হলে পুনরায় সংসার করা যাবে কি না?

তালাকের পর তাওবা পড়ানো হলে পুনরায় সংসার করা যাবে কি না?

- শায়খ আহমাদুল্লাহ।

।। শায়খ আহমাদুল্লাহ ।।

আমাদের সমাজে অনেক সময় দেখা যায় যে, কেও তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ, ইমাম সাহেব, মৌলভী সাহেব, মুরুব্বীরা, স্বামী-স্ত্রীকে তাওবা পড়িয়ে পুণরায় ঘর-সংসার করার সুযোগ করে দেন। এ পর্যায়ে আমাদের জানার বিষয় হলো, তালাক যদি কেও দিয়ে দেন, তাহলে তওবা করলে সেই তালাক প্রত্যাহার হয়ে যায় কিনা? পুণরায় ঘর-সংসার করা যায় কিনা? এরকম কোন ধারণা ইসলাম আমাদেরকে দিয়েছে কিনা?

এ বিষয়ে যে হাদিসটি আমাদের সামনে চলে আসে সেটি বর্ণিত হয়েছে, তিরমিযী, আবু দাউদ এবং ইবনে মাযাহ গ্রন্থে। রসূলে কারীম (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিনটি কাজ এমন আছে, যে কাজগুলো এমনে মানুষ সিরিয়াসলি করলে যেমন সম্পাদিত হয়ে যাবে, দুষ্টুমি করে করলেও সে কাজটি ঘটে যাবে, সেটা ঠেকাবার কোন উপায় থাকবে না। সে তিনটি কাজের একটি হলো বিবাহ, আরেকটি হলো তালাক, আরেকটি হলো যদি প্রত্যাহার যুক্ত তালাক হয় সেটি প্রত্যাহার করা। এ কাজগুলো যদি সে হেসে হেসে দুষ্টুমি করেও করে তারপরেও এ কাজগুলো সংঘটিত হয়ে যাবে, ঘটে যাবে।

অতএব, তালাক যদি কেও ইসলামি শরীয়ার নিয়ম অনুযায়ী তার স্ত্রীকে দিয়ে থাকে এবং তালাক যদি সংঘটিত হয়ে যায়, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাওবা করার মাধ্যমে সে তালাক প্রত্যাহারের কোন সুযোগ নেই। প্রত্যাহার তালাক যদি তিনি দেন, তাহলে সে ক্ষেত্রে মুখে বা আচারণের মাধ্যমে সে তালাক প্রত্যাহার করে নিতেই পারেন। কিন্তু এখানে তওবার কোন বিষয় নাই।

আরও পড়তে পারেন-

মনে রাখা চাই, তালাক একটি বৈধ বিষয়। যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেন এবং ইসলামি শরিয়ার নিতীমালাকে অবলম্বন করে তালাক দেন, তাহলে তিনি কোন গুনাহের কাজ করেন নাই, তওবার করার কোন বিষয় নয়। আর তাওবা করলে তালাক প্রত্যাহার হওয়ার কোন সুযোগ নেই। যার কারণে যদি প্রত্যাহার যুক্ত তালাক হয়, এমনিতেই প্রত্যাহার হবে, আর প্রত্যাহার যুক্ত তালাক না হলে তাওবা করে সে তালাক প্রত্যাহারের কোন সুযোগ থাকবে না।

অতএব, আমাদের সমাজে প্রচলিত তাওবা পড়িয়ে আবার সংসার করার সুযোগ করে দেওয়া এটি ইসলামি শরিয়াহ অনুমোদন করে না। এটা সম্পূর্ণ মনগড়া একটা কাজ আমাদের সমাজের।

তবে কোন স্ত্রী যদি তার স্বামীর কাছে তালাক চান, তাহলে সেটা গুনাহের কথা। করণে অকারণে তালাক চান, দাবি করেন, ঝগড়া করেন, ঝগড়া হলেই স্বামীকে বলেন তালাক দিয়ে দিতে, তাহলে সেটা গুনাহের কথা। রাসুলে কারীম (সা.) এ ধরনের মেয়েদেরকে ভর্ৎসনা করেছেন। তিনি সে কাজ থেকে তিনি তাওবা করবেন।

অপরদিকে কোন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে কথায় কথায় তালাকের কথা বলেন, যখন তখন তালাকের কথা বলেন, অথবা তালাকের শপথ করেন, তাহলে সেটাও একটা নিন্দনীয় কাজ। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এভাবে তালাকের মতো বিষয়কে ব্যবহার করা। এ বিষয়গুলো থেকে তাদেরকে তাওবা করানো যেতে পারে, তারা এ বিষয়গুলো থেকে তাওবা করবেন।

কিন্তু তালাক দিয়ে ফেললে তাওবা করে আবার ঘর-সংসার করার কোন ধারণা ইসলাম দেইনি। সে তালাককে বিবেচনা করে, সেটাকে পর্যালোচনা করে, সেটার বিধান ইসলামি শরিয়তে যেটা রয়েছে সেটা কার্যকর হয়ে যাবে স্বাভাবিক নিয়মেই। তাওবা করে সেটা প্রত্যাহার করার কোন সুযোগ নেই।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে, প্রতিটি বিষয়ে সঠিকভাবে পালন করার তৌফিক দান করুক। আমীন।

– শায়খ আহমাদুল্লাহ, চেয়ারম্যান- আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।

অনুলিখনে- ইফতিখার আহমদ (আতিক)

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।