Home ইতিহাস ও জীবনী প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ)-এর সমসাময়িক পবিত্র কুরআন ও তার আবিষ্কার

প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ)-এর সমসাময়িক পবিত্র কুরআন ও তার আবিষ্কার

একজন সহি মুসলমানের জীবনে পবিত্র কুরআন-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। মহানুভব আল্লাহর বাণী ও আমাদের প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ)-এর অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা এই কুরআন ও হাদিসের মাধ্যমেই আমাদের কাছে এসে পৌঁছয়। ইসলামী ঐতিহাসিকদের মতে, প্রথম কুরআন লিপিবদ্ধ করা হয় হজরত মহম্মদ(সাঃ)-এর জীবনকালে। সম্প্রতি, ব্রিটেনের এক লাইব্রেরি থেকে আমাদের প্রিয় নবী মহম্মদের সমসাময়িক লিপিবদ্ধ কুরআনের দুটি পাতার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

পবিত্র কুরআন ও তার প্রাচীনতম সংস্করণ

ব্রিটেনের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে প্রায় শতাধিক বছর ধরে একটি চামড়ার থলিতে রাখা ছিল কিছু লিপি। এতদিন কেউই বিশেষ খেয়াল না করলেও ২০১৫ সালে কিছু গবেষকের নজর পড়ে সেদিকে। প্রাথমিক পরীক্ষা করে জানা যায়, ভেড়া বা ছাগলের চামড়ার উপর লিখিত ঐ লিপিগুলি মূলত কুরআনের আয়াত। তারপরেই গবেষক আলবা ফেদেলি সিদ্ধান্ত নেন লিপগুলির রেডিওকার্বন পরীক্ষা করাবেন।

রেডিওকার্বন পরীক্ষায় জানা যায় চামড়ার উপর খোদিত এই লিপিগুলি খুব বেশি হলে ৫৬৮ অব্দ থেকে ৬৪৫ অব্দের মধ্যে রচিত হয়েছে। আরও খোঁজ খবর করে জানা যায় যে মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই লিপিগুলি প্রত্নবিদরা আহরণ করেছেন। ফলস্বরূপ, গবেষক ফেদেলি সিদ্ধান্ত নেন সম্ভবত আমাদের পবিত্র কুরআন এর প্রাচীনতম সংস্করণের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

আরও পড়তে পারেন-

বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলাম ধর্মের প্রফেসর ডেভিড থমাস জানান, “ যদিও ইসলাম শাশ্বত, তাও ঐতিহাসিকভাবে ৬১০ থেকে ৬৩২ অব্দের মধ্যে এর কুরআন নাজিলের সময়সীমা বলে ধরা হয়। পবিত্র হেরা গুহায় ফেরেশতা জিবরাইলের কাছ থেকে আমাদের প্রিয় নবী রাসুল (সাঃ) এই বাণী শুনেছিলেন। এই লিপিগুলি সেই সময়ের। সুতরাং, বলাই যায় পবিত্র কুরআন এর প্রাচীন সংস্করণ আমরা খুঁজে পেয়েছি।”

প্রাচীনতম কুরআন থেকে কী জানা যায়?

আমাদের প্রিয় নবী রাসুল(সাঃ) সবসময় নিজের অনুগামীদের দিয়ে কুরআন লিপিবদ্ধ করাতে পছন্দ করতেন। এর কারণ, তিনি মনে করতেন লিপিবদ্ধ করার সময় তারা পবিত্র কুরআন সম্পর্কিত চরম সত্যিটি অনুভব করতে পারবে। প্রফেসর থমাসের মতে, যে ব্যক্তি এই নির্দিষ্ট কুরআনটি লিখেছেন তিনি প্রিয় নবীর অন্যতম অনুগামীদের মধ্যে একজন ছিলেন। যদিও, লিপিগুলিতে নাম নথিবদ্ধ করা নেই।

প্রাচীন হিজাজি হরফে লেখা এই লিপিগুলিতে লেখা রয়েছে নানা আয়াত ও সুরা। আর স্বাভাবিকভাবেই তা আধুনিক কুরআনের সঙ্গে মিলে যায় বেশ অনেকটাই।

থমাস জানান, প্রিয় নবী (সাঃ)-র জীবদ্দশায় তাঁর অনুগামীরা নানা জিনিসের উপর পবিত্র কুরআন সম্পর্কিত বাণী লিপিবদ্ধ করে রাখতেন। কখনও উটের হাড়, কখন খেজুর পাতা, কখনও পাথর বা ভেড়ার চামড়ার উপর খোদাই করে রাখা হত মহান বাণীগুলি। এই লিপিটিও সেরকমই একটি নিদর্শন।

মহম্মদ ঈশা ওয়ালে নামক ব্রিটেনের ইসলামী সাহিত্য ও গ্রন্থাগার বিশেষজ্ঞ জানান, এই আবিষ্কার সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে সৌভাতৃত্বের বার্তা পৌঁছে দেবে। ইসলামের ইতিহাসে এই আবিষ্কার যেন সমুদ্রের অতল থেকে রত্ন খুঁজে আনার সমান।

ঈমানদার ও জিম্মেদার মুসলমানদের কাছে নবী মুহম্মদ(সাঃ) অত্যন্ত প্রিয় ও শ্রদ্ধ্যেয় একজন মানুষ। তাঁর সমসাময়িক পবিত্র কুরআন সংক্রান্ত আবিষ্কারের বার্তা আমাদের কাছে আল্লাহর রহমতস্বরূপ। আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।