Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সমুদ্রের ওপর শূন্যে ভাসছে জাহাজ!

সমুদ্রের ওপর শূন্যে ভাসছে জাহাজ!

ছবি- টিবিএস।

উপকূলে ঘুরতে গিয়ে যদি দেখেন সমুদ্রের ওপর জাহাজ ভেসে আছে, তাহলে সে অদ্ভুতূড়ে দৃশ্যের ব্যাখ্যা কীভাবে দেবেন!  বাস্তবে এ দৃশ্য অবলোকনকারী হয়ে গেছেন পুরোপুরি ‘স্তব্দ’।  তবে তিনি সাথে সাথেই এটি ক্যামেরাবন্দী করে নিয়েছেন। 

ডেভিড মরিস নামক এই ব্যক্তি ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে ফ্যালমাউথের কাছে একটি গ্রাম্যপল্লী থেকে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখেন যে, পানির ওপর শূন্যে বিশাল এক ট্যাঙ্কার ভেসে আছে।

বিষয়টি আর কিছুই নয়, বিজ্ঞান। এটি দৃষ্টিবিভ্রমের একটি উদাহরণ যা মরীচিকা (সুপিরিয়র মিরেজ) হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত।  এই ধরনের বিভ্রম আর্কটিক অঞ্চলে প্রায়ই ঘটার সম্ভাবনা থাকলেও যুক্তরাজ্যে কমই ঘটে থাকে। তবে যদি বায়ুমণ্ডলের পরিস্থিতি ঠিক থাকে, তবে ব্রিটেনের শীতেও এই বিরল মরীচিকা প্রত্যক্ষ করতে পারে লোকে। যেমনটি মরিসের সাথে হলো।

কী করে ঘটে এই সুপিরিয়র মিরেজ

এই ধরনের দৃষ্টিবিভ্রম মূলত আবহাওয়াগত কারণে ঘটে যাকে বিজ্ঞানীরা তাপমাত্রা বিপর্যয় (টেম্পারেচার ইনভারশন) হিসেবে অভিহিত করেছেন।  সাধারণত উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে বায়ুর তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পায় যা পর্বতশৃঙ্গগুলোকে তাদের পাদদেশের চেয়ে শীতলতর করে তোলে।

কিন্তু যখন টেম্পারেচার ইনভারশন দশা ঘটে, তখন উষ্ণ বায়ু শীতলতর বায়ুর ওপর থাকে। ফলে বায়ুমণ্ডলের স্তরে যে পরিবর্তন সাধিত হয় তাতে আমাদের দেখতে পাবার ক্ষমতায় বিপর্যয় নেমে আসে! 

আরও পড়তে পারেন-

কর্নওয়ালে দৃষ্টি বিপর্যয়ের কারণও এটি। শীতল সমুদ্রের ওপর ঠাণ্ডা বাতাস বইছিল, তার ওপরের স্তরে আবার ছিল উষ্ণ বায়ুপ্রবাহ।  বিবিসির  আবহাওয়াবিদ ডেভিড ব্রাইনও একই মত দিয়েছেন। 
 
যেহেতু ঠাণ্ডা বাতাস উষ্ণ বাতাসের চেয়ে ঘন, তাই এটি স্থল বা উপকূলে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তির চোখের দিকে আলোর প্রবেশপথ বাঁকিয়ে দেয়, ফলস্বরূপ অনেক  দূরবর্তী বস্তু ভিন্নভাবে নজরে আসে। 

“সুপিরিয়র মিরেজগুলো বিভিন্ন ধরণের চিত্র তৈরি করতে পারে – এখানে একটি দূরবর্তী জাহাজকে তার আসল অবস্থানের থেকে উপরে উঁচুতে ভাসতে দেখা যায়, তবে কখনও কখনও দিগন্তসীমার নিচের কোন বস্তুও দৃশ্যমান হতে পারে”, বলেন ডেভিড।

বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সময় আলোকচিত্রীরা মাটি থেকে বিভিন্ন অবস্থানে বায়ুতে ভেসে থাকা জাহাজ, ইয়ট এবং অন্যান্য সামুদ্রিক যানের ছবি তুলেছেন; এসব অনিন্দ্যসুন্দর ছবির কৃতিত্ব কিন্তু সুপিরিয়র মিরেজেরই!  

আরেকটি পরিচিত দৃষ্টিবিভ্রমের উদাহরণ হলো ‘ইনফেরিয়র মিরেজ’, নামেই বোঝা যাচ্ছে এটি পূর্বেরটির বিপরীত। এ ধরনের মরীচিকা প্রধানত মরুভূমির বুকে মরুদ্যান কিংবা প্রচণ্ড গরমে পীচঢালা রাস্তা যে মাঝেমাঝে ভেজা দেখতে পাওয়া যায় তেমন বিভ্রমের জন্ম দেয়। এক্ষেত্রে শীতল বায়ু উষ্ণ বায়ুর স্তরের ওপর চেপে বসে। সূত্রঃ-দ্য গার্ডিয়ান।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।