Home পরিবার ও সমাজ স্ত্রীর স্বজনদের প্রতি উত্তম আচরণ ঈমানের দাবী

স্ত্রীর স্বজনদের প্রতি উত্তম আচরণ ঈমানের দাবী

।। মুফতি আবদুল্লাহ নাজীব ।।

ইসলাম পারিবারিক বন্ধনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে৷ পারিবারিক বন্ধনকে সুমধুর ও সুদৃঢ় করার জন্য পরিবারের প্রতিটি সদস্যের প্রতি সুন্দর ও যথোচিত নির্দেশনা দিয়েছে৷ পরিবারের অন্যতম স্তম্ভ হলো স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক বন্ধন ও একে অপরের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ৷ স্বামী স্ত্রীর সুসম্পর্ক পরিবারের সুখ-শান্তির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে৷ অনেকক্ষেত্রেই পরিবার ভাঙনের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই সম্পর্কের অবনতি৷ এ সম্পর্ক সুন্দর ও সুখময় করতে স্বামীর দায়িত্ব অপরিসীম৷

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন স্বামী হিসেবে এ দায়িত্ব যথাযথরূপে আদায় করেছেন৷ স্ত্রীর সাথে তো সুন্দর আচরণ করতেনই, স্ত্রীর পরিবার ও স্বজনদের প্রতিও সুন্দর ও উত্তম আচরণ করতেন৷ স্ত্রীর সঙ্গিনীদের প্রতিও সদয় ও যত্নবান ছিলেন৷ তাদের খোঁজখবর নিতেন৷ প্রয়োজনে সাহায্য করতেন৷ নিম্নোক্ত হাদীসটি এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷ হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন-

جاءت عجوزٌ إلى النبيِّ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ وهو عندي فقال لها رسولُ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ : من أنتِ ؟ قالت : أنا جثَّامةُ المُزنيَّةُ فقال : بل أنتِ حسَّانةُ المُزنيَّةُ كيف أنتُم ؟ كيف حالكم ؟ كيف كنتُم بعدنا ؟ قالت بخيرٍ بأبي أنت وأمِّي يا رسولَ اللهِ فلما خرجتُ قلتُ : يا رسولَ اللهِ تُقبِلْ على هذه العجوزِ هذا الإقبالَ فقال : إنها كانت تأتينا زمنَ خديجةَ وإنَّ حسنَ العهدِ من الإيمانِ

একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এক বৃদ্ধা আসলেন। নবীজী তখন আমার ঘরে ছিলেন। নবীজী বৃদ্ধা মহিলাটিকে বললেন- কে আপনি? তিনি উত্তরে বললেন- আমি মুযানী গোত্রের এক নির্বোধ (কুৎসিত) মহিলা। নবীজী বললেন, বরং আপনি হলেন মুযানী গোত্রের সুদর্শন নারী! আপনারা কেমন আছেন? আমাদের চলে আসার পর আপনাদের অবস্থা কেমন যাচ্ছে? বৃদ্ধা মহিলা উত্তরে বললেন- আমার মা-বাবা আপনার উপর কুরবান হোক, আমাদের অবস্থা ভালো।

আরও পড়তে পারেন-

অতঃপর বৃদ্ধা মহিলা বিদায় নিলে আমি নবীজী (সা.)কে বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা.)! আপনি এত যত্নের সাথে এ বৃদ্ধার খোঁজখবর নিলেন? নবীজী উত্তরে বললেন- খাদিজা থাকাবস্থায় এ মহিলা আমাদের কাছে আসা যাওয়া করতেন। আর বৈবাহিকসূত্রে প্রতিষ্ঠিত বন্ধনের যত্ন নেওয়া ঈমানের দাবী। (মুসতাদরাকে হাকেম হাদীস নং-৪০)।

হাদীসটি আবারও পড়ুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত যত্নসহ স্ত্রীর স্বজনদের হালপুরসি করছেন৷ তার প্রতি কতটুকু মনোযোগী ছিলেন যে, অন্যরা কৌতূহলী হয়ে এর কারণ জানতে চাচ্ছে! এরপরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে উত্তর দিয়েছেন তা স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত৷ স্ত্রীর সম্পর্ক ও সম্পর্কের দাবী রক্ষা করা নিছক কর্তব্যই নয়, বরং ঈমানের দাবী; ঈমানের অংশ৷

আমরা অনেক সময় স্ত্রীর পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গুরুত্ব দেই না৷ অবহেলা করি৷ দায়িত্বের জায়গা থেকে দেখি না৷ এ সবই ইসলাম পরিপন্থী তরীকা৷ অনৈতিক মনোভাব৷ ইসলাম শুধু স্ত্রীর অধিকারের কথাই বলে না, বরং স্ত্রীর স্বজনদের অধিকারও নিশ্চিত করে।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।