Home ইসলাম মসজিদুল আকসায় কোরআন শিখিয়ে ২৮বার আটক হন যে নারী

মসজিদুল আকসায় কোরআন শিখিয়ে ২৮বার আটক হন যে নারী

ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসায় শিশু-কিশোরদের পবিত্র কোরআন শেখান খাদিজা খোওয়াইস। কোরআন শেখাতে গিয়ে গত ৭ বছরে ইসরায়েলি দখলদারদের হাতে ২৮বার আটক হন তিনি। ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে আল আকসা মসজিদ রক্ষায় আত্মোৎসর্গকারী একজন স্বেচ্ছাসেবী নারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। 

খাদিজা খোওয়াইস (৪৪) আল আকসা মসজিদের পবিত্র কোরআনের শিক্ষক। আল আকসা রক্ষায় কাজ শুরু করার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার ইসরায়েলি সেনাদের মামলা ও হয়রানির শিকার হয়ে আসছেন। তিনি বলেন, তিনি মৃত্যুবরণ বা ফিলিস্তিন ভূমির স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত মুসলিম জাতির এই পবিত্র স্থাপনা রক্ষায় কাজ করে যাবেন।

খোওয়াইস বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী তাঁকে ২৮বার বন্দি করেছে। তবে তিনি প্রথমবার অশ্রু ফেলেন যখন চার বছর আগে তাঁকে ইসরায়েলের জেলে নেওয়া হয় এবং তার হিজাব ও ওভারকোট খুলে ফেলা হয়। ২০১৭ সালে ইহুদি দখলদারদের মসজিদে আকসায় প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ইসরায়েলের আদালত তাঁকে ২৩ দিনের জেল দেয়।

kalerkantho

খোওয়াইস বলেন, ‘আমি তাদের বলেছিলাম, আমার পোশাক প্রয়োজন যেন আমি নামাজ আদায় করতে পারি এবং পুরুষের দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল করতে পারি। কিন্তু আমার কথা, আমার কান্না বধিরদের কানে যায়নি’।

খোওয়াইস সেই স্বেচ্ছাসেবীদের একজন, যারা নিজ পরিবারসহ আল আকসার চতুর্দিকে বসবাস করে ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে তাঁকে রক্ষা করার জন্য। তবে এধরনের আবাসিক স্বেচ্ছাসেবীরা ইসরায়েলের নানামুখী হয়রানির শিকার হয়। তাদের মসজিদে প্রবেশে বাধা প্রদান, মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়। খোওয়াইস বহুবার এমন প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়েছেন।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি জেল থেকে বের হওয়ার পর আন্তর্জাতিক রেডক্রসের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘আইনের দৃষ্টিতে নগ্ন অনুসন্ধান এবং হিজাব অপসারণ নিষিদ্ধ। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা প্রথম ছিল না এবং শুধু আমার হিজাব ও ওড়না কেড়ে নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমার মতো খুব অল্পজনই জেলের ভেতরে এবং বাইরে অভিযোগ দায়ের করে’।

খোওয়াইস বলেন, শৈশব থেকেই আমি আল আকসার সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। বেশির ভাগ সময় আমি আমার পিতার সঙ্গে আসতাম। আমি মসজিদে আকসার মাদরাসায় পড়েছি এবং সেখানেই বেড়ে উঠেছি। জ্ঞান বিতরণ ও কাজের জন্য স্থায়ীভাবে এখানে বসবাস শুরু হয়েছে ২০১৪ সাল থেকে।

kalerkantho

খোওয়াইস তাঁর সন্তানদেরও আল আকসার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। এবিষয়ে বলেন, ‘আমার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। আমার সন্তানরাও আল আকসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমার ছেলে ইউসুফকে তারা গ্রেপ্তার করতে চেয়েছিল। আমার চার বছরের মেয়ে ফাতিমাকে মসজিদে আকসার গ্রীষ্মকালীন তাঁবুতে অংশগ্রহণে বাধা দিয়েছিল। ২০ বছর বয়সী মেয়ে সাফাকে আল আকসা থেকে ১৫ দিনের জন্য সরিয়ে দিয়েছিল এবং আমার মেয়ে ফিদাকে তিনবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং আমাকে একাধিকবার মসজিদে আকসা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল’।

তিনি আরো বলেন, ‘তারা আমাদের যত দূরে সরিয়ে দেয় মসজিদে আকসার সঙ্গে আমাদের বন্ধন তত দৃঢ় হয়। আমাদের এই বিশ্বাস বাড়ে যে আমরা সত্যের ওপর আছি। তারা যত বেশি কঠোরতা আরোপ করে, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে থাকি আমরা সঠিক পথে আছি। তাদের দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাই প্রমাণ করে আমাদের প্রভাব কম নয়’।

আনাদুলু এজেন্সি  অবলম্বনে হাবিবা রহমান উজরা।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।