Home ইসলাম মরণব্যাধি কাফেরদের জন্য আযাব ও মুমিনদের জন্য রহমত

মরণব্যাধি কাফেরদের জন্য আযাব ও মুমিনদের জন্য রহমত

।। আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ আব্দুচ্ছালাম চাটগামী ।।

হাদীস শরীফে আরও এসেছে, মহামারি বা এ-জাতীয় মরণব্যাধি মূলত কাফেরদের আযাব দেওয়ার জন্য পাঠানো হয় আর মুমিনদের জন্য পাঠানো হয় রহমতস্বরূপ।

সুতরাং মুমিন বান্দা যদি এমন রোগের ক্ষেত্রে সবর করে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে হওয়ার আকীদা রাখে, আর এই আকীদা নিয়ে মহামারি আক্রান্ত-এলাকায় থাকে এবং সেখানে তার মৃত্যু হয়, তাহলে সে বান্দার জন্য এ রোগ রহমত হয়ে যায়। এর দ্বারা তার সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। সাথে সাথে তার মর্যাদা উন্নত করে দেওয়া হয়, সে শহীদের সাওয়াব পায় এবং জান্নাতে শহীদদের মতো নেয়ামত লাভ করে।

বলাবাহুল্য, বান্দার সব গুনাহ মাফ হয়ে যাওয়া, মর্যাদা বৃদ্ধি পাওয়া, শাহাদাতের সাওয়াব পাওয়া এবং শহীদদের মতো নেয়ামত লাভ করা এগুলো আল্লাহর রহমত বৈ কিছুই নয়। সবই আল্লাহর রহমত।

পক্ষান্তরে, মহামারি সম্পর্কে কাফের ও মুশরিকদের আকীদা বাতিল। কারণ তারা মনে করে এই রোগ আযাব বা শাস্তি নয়, বরং এটা মানবজাতির জন্য দুর্যোগ, যা একজন থেকে অন্যজনের দেহে সংক্রমিত হয়। তাই এ রোগ থেকে দূরে থাকা উচিত। এ আকীদার কারণে এ রোগ তাদের জন্য আযাবস্বরূপ। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটিই ইরশাদ করেছেন।

এমন আকীদার কারণেই যখন কাফেরদের কেউ মারা যায়, তখন অন্যরা তার থেকে দূরে থাকে। একা একা মরে পড়ে থাকে। জিজ্ঞাসা করারও কেউ থাকে না। সাধারণত কোনো ভয়াবহ রোগে মারা গেলে কাফেরদের অবস্থা এমনই হয়।

আরও পড়তে পারেন-

মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে কাফেরদের জন্য দুটি শাস্তি। এক হল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া। দ্বিতীয় হল মৃত্যুর পর শাস্তি ভোগ করা। অর্থাৎ, পরজগতে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করে অকল্পনীয় কঠিন আযাবে নিক্ষেপ করবেন। ঠিক যেভাবে মুমিনদের জন্য পরজগতে জান্নাতের সুসংবাদ রয়েছে। মৃত্যুর পরই মুমিনরা জান্নাতের প্রাথমিক নেয়ামত পেতে শুরু করে। কেউ তো বিনাহিসাবে জান্নাতে চলে যায়। আর কেউ কেউ হিসাবের পর জান্নাতে যেতে পারে। পক্ষান্তরে কাফের ও মুশরিকরা যাবে সোজা জাহান্নামে।

মোটকথা, মুমিনরা মৃত্যুর পর থাকবে রহমত ও নেয়ামতের মধ্যে আর কাফের-মুশরিকরা থাকবে অভিশাপ ও আযাবের মধ্যে। কেয়ামতের দিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ার পরও তারা আযাবের মধ্যেই থাকবে। কারণ, তাদের আকীদা ছিল ভ্রান্ত। সাথে সাথে কাজকর্মও ছিল মন্দ। সুতরাং শিরক ও কুফুরী এবং মন্দ আমলের শাস্তি তাদের পাওয়া উচিত। কারণ তারা মহামারি ও অন্যান্য মরণব্যাধিকে এমন ভয় পায়, যেন তা দ্বিতীয় খোদা। অথচ প্রকৃত খোদা ও তার রাসূলের বিরোধিতা করতে ভয় পায় না এবং তাদের উপর ঈমান আনে না। আসমানী ওহীর ভিত্তিতে যেসব নির্দেশনা ও বিধান দান করা হয়, সেগুলোরও তারা কোনো পরোয়া করে না। তাহলে তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি ছাড়া আর কী থাকবে? [চলবে]

– আল্লামা মুফতি আব্দুচ্ছালাম চাটগামী, মুফতিয়ে আযম বাংলাদেশ এবং পরিচালনা পরিষদের প্রধান, জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম-হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।