Home কবিতা তাহলে কিসের বিবাদ!

তাহলে কিসের বিবাদ!

॥ মালেকা ফেরদৌস ॥

সব পথই খোলা ছিল
তবুও কোন বৃক্ষকে ধরে লতিয়ে উঠতে চাওনি,
নিজেই মায়াবৃক্ষকে হয়ে আছ
তোমার বিশ্বাসে আলো জ্বেলেছে
নিজেই নিজের ভেতর,
অলক্ষ্যেই তা আজ নির্মাণ করেছে
চিরায়ত সম্পর্কের মাঝে
এই সুকঠিন প্রাচীর।

শ্যাওলায় আচ্ছাদিত সবুজ গ্রহণের মায়ায়
রৌদ্রদগ্ধ দিন কীভাবে ফুরায়,
কী অসম্ভব নির্জনতায় ঘিরে আছে
সন্ধ্যার আকাশ, তোমার চারদিক!
এই চিরকালীন নৈঃশব্দ্যের ভাষা
আমরা কি আবিষ্কার করিনি?
বৃক্ষ নদী, আকাশ কিংবা সমুদ্র
প্রকৃতির প্রিয় দান নারী অথবা পুরুষ
জীবনের শূন্যতা তো ভরে তোলে দু’জনেই
তাহলে কিসের বিবাদ বলো?

কত হৃদয়ে শিখাহীন আগুন জ্বেলে
দহন করেছ তুমি!
আর সেসব বিবরণ দেখে বল-
উদয়কালের প্রকৃতি কি কখনো
পাখিশূন্য ছিল নাকি ফলশূন্য?
জানি স্মৃতিরা কখনো পরিত্রাণ দেয়নি তোমায়
তুমি কি চাওনি কখনো সুঠাম হাতের স্পর্শ
নিজের জন্য একটি সলজ্জ আস্তানা?
কিসের বিবাদ তাহলে?

ফুলে ফুলে শোভিত নারী
ভালোবাসা, স্নেহে ভরপুর
শাড়ির আঁচলে ডেকে রাখে
সংসার পরিপাটি।
নিজেই তো বল- বেণীর ফণায় নাচে
ছরাকলা, বেহায়াপনার বেঈমানি।
পুরুষ দৃঢ় পাইন বৃক্ষ সবুজ
কত পাখি আসে যায়
কত বসন্তে হয় পুষ্পের বর্ষণ,
সত্যে অনাগ্রহী, অকৃতজ্ঞ, অসত্য পুরুষ
কঠিন পাষাণ,
হেলে না একচুলও ভূমিকম্প ঝড়ে।

নারী এক রহস্যের নাম- অকর্ষিত ভূমি
পুরুষ- বৃষ্টির জল- কর্দমাক্ত ভূমির কিষাণ।
‘তবুও নারী সব পুরুষেরই জন্মদাত্রী।
সহ্যময়ী মাতা।’
পুষ্প পল্লবে দু’জনেই ভরে তোলে
পৃথিবীর সবুজ শরীর
কিসের বিবাদ তাহলে বলো?