Home শিক্ষা ও সাহিত্য নতুন শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের প্রতি যে নসীহত করলেন শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ

নতুন শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের প্রতি যে নসীহত করলেন শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ

- ফাইল ছবি।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার নতুন শিক্ষাবর্ষ (১৪৪৩-৪৪হিঃ)এর ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। আজ (২৫ মে) সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সকল বিভাগের নতুন শিক্ষাবর্ষের দরস শুরু হতে যাচ্ছে।

সোমবার (৯ মে) জামিয়ার বায়তুল কারীম জামে মসজিদে নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রবীণ আলেমে-দ্বীন ও শায়খুল হাদীস হযরত আল্লামা শেখ আহমদ (দা.বা.) দিক-নির্দেশনামূলক বিশেষ হিদায়াতী বয়ান করেছেন। শিক্ষার্থীদের পথনির্দেশনা লাভ ও উপকারের কথা বিবেচনা করে বয়ানটির অনুলিপি নিম্নে উপস্থাপন করা হলো-

হামদ ও সালাতের পর আল্লামা শেখ আহমদ (দা.বা.) শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন- আল্লাহ তাআলা বিশ্ববাসীর জন্য তাঁর মনোনীত দ্বীন হিসেবে একমাত্র ইসলামকেই নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহর মনোনীত এই দ্বীন প্রতিষ্ঠা এবং এর প্রচার-প্রসারের জন্য আখেরী যামানায় আল্লাহ তাআলা স্বীয় হাবীব হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে মনোনীত করে পাঠিয়েছেন। নবুওয়াতী যিন্দেগীতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার তরে কঠোর দায়িত্ব পালন শেষে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের মাঝ থেকে রাসূল (সা.) বিদায় নিয়েছেন। দ্বীনের উপর চলার ক্ষেত্রে আখেরী যামানার উম্মতকে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি ও ফিত্না-ফাসাদ মোকাবিলা করে চলতে হবে বিধায় রাসূল (সা.) রেখে গেছেন তাঁর প্রতিনিধি ও উত্তরাধিকারী হিসেবে হযরাত উলামায়ে কিরামের জামাআতকে।

প্রিয় তালিবে ইলম ভাইয়েরা, আমরা এসব দ্বীনি মাদরাসায় সহীহ দ্বীনি ইলম তলব করার উদ্দেশ্যেই লেখাপড়া করে থাকি। এই ইলম অর্থ ইলমে নববী। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং ইলমে নববী এক বিষয় নয়। জ্ঞান হলো একটি বিদ্যা। জেনারেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শিক্ষা প্রদান করা হয়, তা বৈষয়িক জীবন যাপনের জন্যই প্রযোজ্য। আর দ্বীনি ইলম শিক্ষার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর মা’রিফাত ও নৈকট্য অর্জন করা। কারণ, এখানে শিক্ষা দেয়া হয় ইলমে ওয়াহী। ইলমে ওয়াহীর মর্যাদা অসাধারণ ও অতুলনীয়।

‘আলিম’ হলো আল্লাহর বিশেষ সিফাত বা গুণবাচক নাম। আল্লাহর প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)কে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অগ্র-পশ্চাৎ সব ধরণের ইলম দান করেছিলেন। এরপরও তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে এভাবে প্রার্থনা করতে- “কুল-রাব্বী যিদনী ইলমা”। অর্থাৎ- বলুন! হে আল্লাহ আমার ইলম বৃদ্ধি করে দিন। দুনিয়ার অস্তিত্ব ইলমের অস্তিত্বের উপর নির্ভরশীল। যত দিন পর্যন্ত ইলম থাকবে, এর পঠন-পাঠন অব্যাহত থাকবে, ততদিন পর্যন্ত দুনিয়া ধ্বংস হবে না। যখন ইলম থাকবে না, তখন দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।

প্রিয় আযীয তুলাবা! আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তোমাদেরকে দুনিয়ার সব শিক্ষার্থী থেকে বিশেষভাবে নির্বাচিত করে দ্বীনি ইলম অন্বেষণ করার লক্ষ্যে দ্বীনি মাদরাসাসম হে একত্রিত করেছেন। পৃথিবীতে আরও অনেক উপযুক্ত লোক আছেন। কিন্তু তারা এসব দ্বীনি মাদরাসায় শিক্ষা লাভের সুযোগ অর্জন করতে পারেননি। দুনিয়ার অনেক লোক দুনিয়াবী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক উঁচু পর্যায়ের দুনিয়াবী ডিগ্রী লাভ করেছেন। কিন্তু দ্বীনি ইলম লাভের সৌভাগ্য তাদের হয়নি। দ্বীনি ইলমের বিষয়ে এবং ইলমে ওয়াহী সম্পর্কে তারা অনবহিত।

আমরা কত বড় সৌভাগ্যবান যে, আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দ্বীনি ইলম, ইলমে ওহী, ইলমে নববী হাসিলের তাওফীক দান করেছেন। তাঁর বিশেষ বান্দাদের দলে তিনি আমাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর চেয়ে আনন্দের ও সৌভাগ্যের বিষয় আর কি হতে পারে? এর শোকর আদায় করা উচিত এবং দ্বীনি ইলম অর্জনে ও শিক্ষাদানে গভীর মনোযোগ দিয়ে নিজেকে সত্যিকারের নবীর ওয়ারিস হিসেবে গড়ে তোলাই এখন তোমাদের কর্তব্য।

আযিয তুলাবা! এসব দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের ‘ক্বালাল্লাহ ওয়া ক্বালার রাসূল (সা.)এর’ পঠন-পাঠন ও আমলের কারণেই দুনিয়ার অস্তিত্ব টিকে আছে। নবী কারীম (সা.)এর ওয়ারিস উলামায়ে কিরামের সংস্পর্শে তোমরা আছ। তাঁদের কাছ থেকে ইলমে দ্বীন হাসিল করছ। মাদ্রাসার দ্বীনি পরিবেশে তোমাদের অবস্থান। এই মাদ্রাসাগুলো দ্বীনের কেন্দ্র। এগুলো যদি সামান্য সময়ের জন্যও বন্ধ হয়ে যায়, তবে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।

প্রিয় ভাইয়েরা! বড় জিনিষ হাসিল করার জন্য বৃহৎ আকারের স্বার্থ বিসর্জন দিতে হয়। সম্পূর্ণ ব্যয় করলে কিছু লাভ করা যায়। মাত্র সামান্য কিছু সময়ের বিনিময়ে ইলমের বিশাল ময়দান অতিক্রম করা সম্ভব নয়। আমাদেরকে সর্বপ্রথম নিয়্যাত বিশুদ্ধ করতে হবে। সর্বপ্রথম এই নিয়্যাত করবে যে, একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি হাসিলের জন্য ইলম তলবের উদ্দেশ্যে আমরা মাদরাসায় ভর্তি হয়েছি। ইলম শিখে আমল করব এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে দ্বীনের পথে দাওয়াত প্রদান করব। এ ছাড়া অন্য কোন লক্ষ্য, উদ্দেশ্য না থাকা জরুরী।

ইলম অর্জনের উদ্দেশ্যের মধ্যে বৈষয়িক কোন লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য না থাকা আবশ্যক। বড় মুফাস্সির হবো, বড় ওয়ায়েজ হবো, জনগণের রাহবার হবো, নাম-যশ হবে, এ ধরনের দুনিয়াবি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থেকে মুক্ত হওয়া জরুরী। এই দ্বীনি ইলম এক হৃদয় থেকে অপর হৃদয়ে এসে থাকে। এজন্যই বলা হয় যে, “ইলম সীনা বসীনা আতা হ্যায়।” অর্থাৎ- ইলম উস্তাদগণের সীনা থেকে তালিবে ইলমের সীনায় এসে থাকে। বে-আদবী করলে পরিপূর্ণভাবে এই ইলম কখনো অর্জিত হয় না। এতে ইংরেজী বা বৈষয়িক শিক্ষা হয়তো অর্জিত হতে পারে। কিন্তু নববী ইলম বে-আদবী করলে কখনো অর্জিত হয় না। এ কারণেই সকল তালেব দ্বীনি ইলম হাসিল করতে পারে না। এ ইলম অর্জনের জন্য যোগ্য পাত্রের বড় প্রয়োজন।

আরও পড়তে পারেন-

শিক্ষা বৎসরের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সারা বৎসর দরসে উপস্থিত থেকে মাদরাসার নিয়ম-নীতির পূর্ণ অনুসরণ করে বার্ষিক পরীক্ষা দেয়ার পর একটি শিক্ষা বৎসরের সমাপ্তি হয়। এভাবে একটি বৎসর চলতে হবে। ভর্তি-ফরমের সাথে এসব দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের বিধিবদ্ধ সব নিয়ম-কানুন লেখা আছে। তোমরা ভর্তি হবার সময় এই নিয়ম-কানুন মেনে নিয়ে ভর্তি হয়েছ এবং সবক শুরু করবে। গোটা বৎসর এই নিয়ম-কানুন মেনে শিক্ষা বর্ষ সমাপ্ত করতে বছরের প্রথম দিন থেকেই সংকল্পবদ্ধ হবে। জীবনকে আল্লাহর কাছে এবং বান্দার কাছে মল্যবান করে গড়ে তুলতে চাইলে মাদরাসার সকল নিয়ম-কানুন অনুসারে চলে সত্যিকারের জীবন গঠন করবে। অন্যথায় যেভাবে খালি হাতে এসেছিলে, সেভাবে খালি হাতে ফিরে যেতে হবে। আর উস্তাদ ও মুরুব্বীদের কথামত চললে খালি হাতে এসেও ইলম, আমল ও মুরুব্বীদের দোয়া সঙ্গে নিয়ে যেতে পারবে। আল্লাহর কাছে, বান্দার কাছে মকবুল ব্যক্তি হিসেবে খ্যাতি লাভ করবে।

অভিভাবকগণ তাদের প্রিয় সন্তানদেরকে মাদরাসার উস্তাদ ও মুরুব্বীগণের কাছে এমনভাবে সোপর্দ করে দিতে হবে, যেমন একটি লাশ কাফন-দাফনের জন্য গোসল প্রদানকারীর কাছে সোপর্দ করা হয়। উস্তাদ ও মুরুব্বীগণ অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন। তাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হলে আদর্শ জীবন নিশ্চয় গড়ে উঠবে। মাদরাসার আসাতিযাগণের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা থাকে ব্যাপক। ছাত্র-ছাত্রই, বালক-বালকই। বালক ও ছাত্রদের অভিজ্ঞতা থাকে খুবই স্বল্প। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রায় সময় সঠিক হয় না। তাই তো জ্ঞানীরা বলে থাকেন- অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার জন্য গমন কর। যারা ডাক্তারি পাশ করেছে বটে, কিন্তু অভিজ্ঞতা লাভ করেনি, তাদের কাছে চিকিৎসা করো না। কারণ, তারা রোগের সঠিক ঔষধ নির্দেশ করতে পারবেন না। ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা নগণ্য। অনভিজ্ঞ ডাক্তার চিকিৎসা করলে রোগীর প্রাণহানীরও ভয় থাকে।

প্রিয় ছাত্রবৃন্দ! তোমরা সবক শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকেই অবশ্যই নিত্যদিনের জন্য নিযামুল আওক্বাত বা দিন-রাতের কার্যসূচী ঠিক করে নিবে। কোন সময় কি কাজ করবে, সবক কোন সময় পড়বে, তাকরার কখন করবে, প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত কাজ কখন করবে, সব কিছু রুটিন করে রাখবে। বিশৃখল, আগোছালো ও লক্ষ্যহীনভাবে চলাফেরা ও কাজকর্ম করবে না। এতে উদ্দেশ্য সফল হবে না। প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা একেবারেই বলবে না। যবান তথা মুখে লাগাম লাগিয়ে নিবে। কারো গীবত-শিকায়েত করবে না। কারো পিছনে পড়বে না। সবসময় নিজের দোষত্র€টি দেখবে। নিজের ভুল-ত্রুটির জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইবে। সুন্নাতের উপর চলার চেষ্টা করবে।

সবসময় উস্তাদগণের ক্বদর-সম্মান করবে, তবেই শোকর আদায় হবে। সবসময় নিয়মিত দরসে উপস্থিত থাকবে। প্রতিটি কিতাবের প্রতিটি সবকে শরীক থাকবে। নাহু-সরফ আদায়ের দিক দিয়ে প্রতিটি শব্দ তাহক্বীক্ব করবে। মুতালায়ার ব্যাপারেও কোন ত্রুটি করবে না। নিজে নিজে সব কিতাব অধ্যয়ন করে বুঝা অনেক কঠিন। শিক্ষকবৃন্দও এক একটি কিতাবের ১০/১২টি পর্যন্ত শরাহ মুতালায়া করে দরস দান করে থাকেন। ছাত্রদের পক্ষে এটা অসম্ভব ব্যাপার। তাই সবকের মধ্যে ছাত্রদের নিয়মিত উপস্থিতি খুবই জরুরী। জনৈক ফারসী কবি খুব সুন্দর বলেছেন- “লফযেরা তাহকিকে খানি তা শবী মরদে কামাল” -প্রতিটি শব্দকে যদি তাহক্বীক করে পড়, তবে প্রকৃত জ্ঞানী হতে পারবে।

মুতালায়ার সাথে সাথে লিখাও শিখবে। সকল উস্তাদকে সম্মান ও মর্যাদার চোখে দেখবে। হযরত আলী (রাযি.)এর বিখ্যাত মন্তব্য সবসময় খেয়াল রাখবে- “আনা আব্দুন মান আল্লামানী হরফান ওয়াহেদান্ ইনশাআ বাআ ওয়াইন্শাআ আতাকা……” অর্থাৎ- যে আমাকে একটি হরফ শিক্ষা দিয়েছেন, তিনি আমার মাওলা তথা মালিক। তিনি আমাকে বিক্রি পর্যন্ত করতে পারেন। যারা উস্তাদের সাথে বে-আদবী করেছে, মাদরাসার সাথে বে-আদবী করেছে, তাদের শেষ পরিণাম হচ্ছে, তারা সব জায়গায় অপমানিত হয়ে থাকে এবং সবার দুয়ারে দুয়ারে বে-ইজ্জতির সাথে ঘুরে বেড়ায়। কোথাও তাদের জায়গা হয় না।

মাদরাসার সকল উস্তাদ ছাড়াও মাদরাসার স্টাফ এমন কি বাবুর্চিকে পর্যন্ত সম্মান করতে হবে। কেননা, তারা সকলেই মাদরাসার এক একজন স্টাফ। সুতরাং মাদরাসার ছাত্রদের এ ব্যাপারে সব সময় সাবধান থাকতে হবে যে, কখনও বে-আদবীমলক সামান্য কিছুও মাদরাসার কোন উস্তাদ এমনকি সামান্য একজন কর্মচারীর সাথেও যেন না করা হয়।

আরেফে রাব্বানী মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী (রাহ.) বলেছেন- “বে-আদব মাহরুম গাস্ত আয ফযলে রব” -বে- আদব লোক আল্লাহর রহমত থেকে সব সময় বঞ্চিত হয়ে থাকে। অন্য এক কবি বলেন- “আয়েথে হাম মিছ্লে বুলবুল সায়রে গুলশান কর চলে : লে-লো মালি বাগ আপনা হামতো আপনা ঘর চলে”।

উস্তাদগণের প্রশিক্ষণ ও তরবীয়তের বিশেষ পদ্ধতি থাকে। এটা ছাত্রদের পক্ষে বুঝে আসা সহজ নয়। দ্বীনি মাদরাসার প্রতি সকলের আন্তরিক মুহাব্বাত থাকা চাই।

প্রিয় ছাত্র সকল! বুযুর্গানে কেরাম ইলমে দ্বীন অর্জনকারীর জন্য ৬টি শর্তের কথা বলেছেন, যথা- (১) মেধা (২) জ্ঞান লাভের চেষ্টা (৩) ধৈর্য্য (৪) প্রয়োজনীয় সামানাপত্র (৫) উস্তাদের কথা পালন (৬) দীর্ঘ সময় পর্যন্ত চেষ্টা-সাধনা। মনে রাখতে হবে যে, দু’টি লোকের তৃষ্ণা কখনো নিবারণ হয় না। একজন হলো ইলম অর্জনকারী, অন্য জন হলো দুনিয়া অর্জনকারী। একমাত্র এ দুই বস্তু ছাড়া তাদের পেট কিছুতেই ভর্তি হয় না। মনোযোগের সাথে উল্লিখিত শর্তাবলী পূরণের সাথে ইলম তলব করতে থাক এবং আমল করতে চেষ্টা কর, তবেই দুনিয়া আখিরাতে তোমাদের কামিয়াবী অবধারিত।

আপনারা অবশ্যই নিয়মিত জামাতে তাকবীরে ঊলার সাথে নামায আদায় করবেন। প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করবেন। রাত সাড়ে ১০টা-১১টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে গভীর রাতে ওঠে তাহাজ্জুদ পড়ে ফজরের আগে ১-২ ঘণ্টা কিতাব মোতালায়া করবেন। চলাফেরার সবপর্যায়ে সুন্নাতের পাবন্দীর উপর গুরুত্ব দিয়ে চলবেন। এভাবে যদি মেহনত-সাধনা করে এবং জামিযার সকল আইন মেনে নিজেকে আদর্শ ও পরিশুদ্ধতা নিয়ে পরিচালিত করতে পারেন, ইনশাআল্লাহ আপনারা এখান থেকে শিক্ষাউত্তীর্ণ হয়ে কওম-মিল্লাতের যোগ্য রাহবার ও খাদেম হয়ে সম্মান-শ্রদ্ধার্জনের সাথে দ্বীনের বহুমুখী কাজ আঞ্জাম দিতে পারবেন।

বাজারে ও পথেঘাটে অযথা ঘুরাফেরা করবে না। হাদীস শরীফে আছে, বাজার হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট জায়গা। সবচেয়ে ভালো জায়গা বলা হয়েছে মসজিদকে। প্রয়োজনে আসরের পর বাজারে যাবেন। প্রয়োজন সেরে তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। সকালে কলা-মুড়ি বা পাউরুটি-বিস্কুট দিয়ে নাস্তা সেরে নিবেন। এগুলো কিনে রাখবেন। অথবা রাতের খানা থেকে কিছু খানা রেখে দিয়ে তা দিয়ে সকালে নাস্তা করবেন। পরিশেষে সর্বদা দোয়া করি, তোমরা যেন একটা সমুজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়ে কুরআন-হাদীসের শিক্ষাকে বিশ্বের আনাচে-কানাচে পৌঁছে দিতে পার এবং তোমাদের দ্বারা দেশ ও জাতির প্রভূত কল্যাণ সাধিত হোক, এটাই আমার আখেরী তামান্না। আল্লাহ পাক তোমাদের কুরবানীকে কবূল করুন। আমীন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।