Home ইতিহাস ও জীবনী আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.): ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের তরে যিনি ছিলেন...

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.): ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের তরে যিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ

।। শায়খুল হাদীস মাওলানা তাজুল ইসলাম আশরাফী ।।

দুনিয়াতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুগে যুগে এমন কিছু বিশেষ ব্যক্তিত্ব প্রেরণ করেন, দ্বীনি খেদমত ও উম্মাহর কল্যাণে যাঁদের জ্ঞান, দক্ষতা, অক্লান্ত মেহনত যেমন ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকে, তেমনি জগদ্বাসী যুগ যুগ ধরে উপকৃত হয়ে থাকেন। যাঁদের গৌরবময় কর্মগাঁথা প্রজন্মের পর প্রজন্ম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় হয়ে থাকে। যাদের অবদান আর অমরকীর্তি পরবর্তী প্রজন্ম স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে। যারা পথহারা মানুষকে দিয়েছেন পথের সন্ধান। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিয়েছেন ইসলামের পথ নির্দেশিকা। যারা নিজেদের সর্বস্ব বিলীন করে দেশ-জাতির কল্যাণে কাজ করে গেছেন নিঃস্বার্থভাবে। যারা শিরক-বিদআত ও ধ্বংসাত্মক কার্যাবলী প্রতিহত করে আল্লাহর দ্বীনকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সংগ্রামে নিজেদের আত্মনিয়োগ করেছেন। যারা সুন্দর পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তোলেন তাদের চরিত্রের মাধুর্যতা দিয়ে। চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি সবকিছু পাল্টিয়ে দেয় তাদের অসাধারণ প্রতিভা দিয়ে! জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা, দূরদর্শি নেতৃত্ব, উদারতা, দানশীলতা, আপোষহীনতা, সাহসিকতা, উত্তম গুণাবলী, সামাজিক ভূমিকাসহ সর্বক্ষেত্রে যাদের অবদান মানুষকে মুগ্ধ করে তোলে। নমুনায়ে আকাবিরে দেওবন্দ ও দেশের অন্যতম শীর্ষ মুরুব্বী আলেম রাজধানী ঢাকার বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শায়খুল হাদীস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) ছিলেন এমনই এক গুণের অধিকারী মহান ব্যক্তিত্ব। ইলমের সূর্যতুল্য এই ক্ষণজন্মা সাধক আলেমে-দ্বীন গত ২০২০ ঈসায়ী সনের ১৩ ডিসেম্বর ৭৪ বছর বয়সে আপন রবের ডাকে সাড়া দিয়ে পরকালের অন্তহীন পথে বিদায় নিয়েছেন। শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি (রহ.)এর ইন্তিকালের পর ইসলামী অঙ্গনের নেতৃত্বে যে গভীর শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, এক বছরের মাথায় আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর ইন্তিকাল ইসলামী নেতৃত্বের অঙ্গনে গভীর হতাশা বয়ে আনে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদি ষড়যন্ত্রের প্রতিরোধ এবং ঈমান-আক্বিদার সুরক্ষায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি হাইআতুল উলইয়ার কো-চেয়ারম্যান, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে তিনি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকীয়তার সুরক্ষা, উন্নয়ন এবং প্রচার-প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ৯০-এর দশক থেকেই ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত বিরামহীনভাবে তিনি দরসের মসনদে ইলমে নববীর খেদমতের পাশাপাশি ইসলামী রাজনীতি ও হেফাজতে ইসলামের ব্যানারে ঈমান-আক্বিদার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। একই সাথে তিনি রাজধানী ঢাকার অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার, টঙ্গির তুরাগে অবস্থিত জামিয়া সোবহানিয়া মাহমূদ নগরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শায়খুল হাদীস ছিলেন।

তিনি একাধারে দেশের দেশের প্রাচীন রাজনৈতিক প্লাটফর্ম জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পরিচালক, উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মাদরাসার মজলিসে শূরার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট যেকোন গুরুত্বপূর্ণ জরুরত ও সংকটে তিনি দেশের আলেম সমাজের মাঝে দীর্ঘ দিন ধরে নেতৃত্বের কাতারে থাকতেন। কওমি উলামায়ে কেরামের যে কোন সংকটে তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বের ভূমিকা সবাইকে অভিভূত করে তুলতো। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর কাছ থেকে ব্যাপক দ্বীনি খিদমত নিয়েছেন।

শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.), আল্লামা আবদুল মুমিন শায়খে ইমামবাড়ি, আল্লামা তফজ্জুল হক হবিগঞ্জী, আল্লামা আনোয়ার শাহ আযহারী’সহ গত দুই বছরে বহু শীর্ষ আলেমকে হারানোর পর আমরা আশা করেছিলাম, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.), আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী, আল্লামা নূরুল ইসলাম জেহাদী (রহ.) প্রমুখ নেতৃস্থানীয় আলেমগণ এই শূন্যস্থান পুরণে বহুদিন দায়িত্ব পালন করে যাবেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় একে একে তাঁদের সকলকে আমরা হারিয়েছি। বর্তমানে উলামায়ে কেরামের শীর্ষ নেতৃত্বে অভিজ্ঞতার সংকটে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর উপস্থিতি অনেক মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাঁর ইন্তিকাল ইসলামী অঙ্গন ও উলামায়ে কেরামের মাঝে গভীর শূন্যতা তৈরি করেছে। তাঁকে হারানোর ক্ষতি সহজে পুরণ হবার নয়।

দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে ফারেগ হয়ে দেশে ফেরার পর থেকে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) ইলমে হাদীস ও ফিকহের মসনদে দরসদানের পাশাপাশি তিনি সারা জীবন দ্বীনের বহুমুখী অঙ্গনে খেদমত করে গেছেন। ধর্মীয় বিভিন্ন জটিল ও কঠিন বিষয়ে প্রজ্ঞাপূর্ণ নেতৃত্ব ও সুন্দর সমাধানসহ ঈমান-আক্বিদার সুরক্ষার আন্দোলনেও তিনি গৌরবময় নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে গেছেন।

আরও পড়তে পারেন-

আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী (রাহ.) ছিলেন একজন আদর্শ ও দক্ষ মুহতামিম, দাওয়াতের ময়দানে একজন দরদী দায়ী, সমাজসেবার ময়দানে ছিলেন জনদরদী সেবক এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলেন প্রজ্ঞাসম্পন্ন আপোষহীন ও স্পষ্ট ভাষী নিবেদিতপ্রাণ এক দেশপ্রেমিক।

শাহবাগী নাস্তিক্যবাদের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার আন্দোলনের সূচনাকালীন সময়ে তিনি বেশ সক্রিয় নেতৃত্বের ভূমিকা ছিলেন। তখন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর রাজনৈতিক ও নেতৃত্বসূলভ বিচক্ষণতা কাছে থেকে অবলোকন করেছি। তিনি সবসময় হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় থাকতেন। প্রয়োজনের বাইরে কথা বলতেন না। মনোযোগ দিয়ে অন্য সবার কথা শুনতেন। আলোচনা সভা ও বৈঠকে নিজের মতামত দেওয়ার সময় অত্যন্ত নরম, তবে দৃঢ়ভাবে নিজের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতেন। উলামায়ে কেরামের বৈঠকে তিনি কখনোই কারো সাথে বিতর্কে জড়াতেন না। তিনি কখনোই সত্য ও হকের প্রশ্নে কারো সাথে আপোষ করেননি। অত্যন্ত সাদাসিধে, মার্জিত ও পরিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করতেন। কথা বলতেন মেপে মেপে। তাঁর কোন বক্তব্য থেকে প্রতিপক্ষ কখনো ভুল বের করতে পারেনি। এতেই তার বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা ফুটে ওঠে।

সেই ২০১৩ সাল থেকে ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত দেখেছি, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) দারুল উলূম হাটহাজারীর প্রতি এবং শায়খুল ইসলাম হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)এর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও আস্থা বজায় রেখে চলতেন। তাঁকে কখনো কারো পেছনে সমালোচনামূলক কথা বলতে দেখিনি। জাতীয় স্তরে ঈমান-আক্বিদার উপর যেকোন আঘাত আসলে তিনি কোনরূপ ডর-ভয়ের দ্বিধা করতেন না। এক দৃঢ়চেতা ও আপোষহীন নেতার রূপ নিয়ে আবির্ভুত হতেন। তাঁর দৃঢ়চেতা ও অবিচল নেতৃত্বে তরুণরা প্রেরণার খোরাক খুঁজে পেতো।

যখন যে কোনোভাবেই বাতিল মাথা উঁচু করতে চেয়েছে, আল্লামা কাসেমী (রহ.) মজবুতভাবে তার জবাব দেওয়ার জন্যে দাঁড়িয়ে যেতেন। জাতির নেতৃত্বের ক্ষেত্রে হযরত (রহ.)এর প্রতিটি পদক্ষেপই ছিল অত্যন্ত সুচিন্তিত ও সচেতন বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। জীবনের এই দীর্ঘ সময়ে ইসলাম ও মুসলমানদের জন্যে তাঁর সব কীর্তিকে পরখ করলে বলতে হয়, হিন্দুস্তানে হযরত মাদানী (রহ.) যেমন আজীবন ইংরেজদের বিরুদ্ধে আপোসহীনভাবে লড়ে গেছেন এবং মুসলমানদের জাতীয় অভিভাবকত্বের দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে গেছেন, হযরত মাদানী (রহ.) ও মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী (রহ.)এর নকশে কদমের উপর চলা হযরত আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর বাংলাদেশের সমসাময়িক সময়ে অবদানও ঠিক পূর্বসুরী আকাবিগণের নির্দেশিত পথে ছিল। ফতোয়াবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেওয়ার উদ্যোগ বিরোধী, স্কুল পাঠ্যবইয়ে হিন্দুত্ববাদি লেখা বাদ দেওয়া ও ইসলামী ভাবধারার লেখা পুনঃস্থাপন, হাইকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে থেমিস দেবি উৎখাত, ঢালাওভাবে আলেম-উলামাকে জঙ্গিবাদের তকমা দেওয়া, আল্লাহ ও রাসূলের অবমাননা বিরোধী, ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী ও কাদিয়ানীবিরোধী আন্দোলনে শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বের পাশে থেকে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) নিরলস ও বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে গেছেন। ইতিহাসে তাঁর গৌরবময় এসব ভূমিকা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

এই ক্ষণজন্মা ইলমে-দ্বীনের রাহবারের কুমিল্লার চড্ডা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করলেও তিনি রাজধানীকে বেছে নিয়েছিলেন বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের দিনগুলো কাটাতে। এই শহরে তিনি পাঁচ দশক উম্মাহর চিন্তাচেতনা বিকাশে ব্যয় করেছেন। দরস-তাদরিসের মাধ্যমে যেমন হাজার হাজার আলেম তৈরি করেছেন, তেমনি ঈমান-আক্বিদার আন্দোলনে নেতৃত্বদানের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণ ও যুবাদেরকে ঈমান-আক্বিদা এবং দেশ ও জাতির স্বার্থ রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরিরূপে গড়ে তুলেছেন।

আত্মপ্রবঞ্চনার ঊর্ধ্বে উঠে, অনেক ত্যাগ-তিতীক্ষার বিনিময়ে, কোনো প্রলোভন ও চাপের কাছে মাথা না করে সত্য ও ন্যায়ের পতাকাকে সমুন্নত রাখতে সক্ষম হন তিনি। হক ও আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন অটল-অবিচল। কাদিয়ানিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে দেশব্যাপী সফর করে জনমত সৃষ্টির প্রয়াস পেয়েছেন। দেশ ও জাতির সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্তে তার প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল সুচিন্তিত আর বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক। ভারতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা হোসাইন আহমদ মাদানী রহ: যেমন শিরক, বিদআত, কুসংস্কার ও ব্রিটিশ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন, তেমনি বাংলাদেশে নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) একই ভূমিকা পালন করে গেছেন।

ব্যক্তি জীবনে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ছিলেন এক স্বীকৃত বুজুর্গ ও দরবেশ। নফল ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-আযকার, পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন-হাদীস নিয়ে গবেষণা ও ইসলামী গ্রন্থ অধ্যয়নের প্রতি তার প্রবল আগ্রহ ছিল। প্রতি রমজান মাসে ৩০ দিন মসজিদে অবস্থান করে ইবাদতে মশগুল থাকতেন। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া সেই সময় দেখা-সাক্ষাৎ ও কথাবার্তা সীমিত রাখতেন। পরিমিতিবোধ ও মধ্যমপন্থা অবলম্বন ছিল তার জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট। তিনি সবসময় চরমপন্থা ও অতিমাত্রিক শৈথিল্যের পথ পরিহার করে চলতেন। সহজ, সরল ও অনাড়ম্বর জীবন পরিচালনায় অভ্যস্ত হলেও কমান্ডিং টোনে নির্দেশনা দিতে ভুল করতেন না। বিনয়, সৌজন্য ও অতিথিপরায়ণতা তার চরিত্রের আলোকিত দিক। যেকোনো দল-মতের মানুষকে সহজে আপন করে নেয়ার এক সহজাত গুণ ছিল তার। উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের মতো জটিল রোগ নিয়ে বার্ধক্যের ভারে ন্যুব্জ এই সাধক বুখারির সবক প্রদান এবং প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আঞ্জাম দিতে কখনো পিছপা হতেন না।

কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতির ভালো-মন্দ দিক নিয়ে নানা কথা রয়েছে। আগামী দিনে তা বলবে লাভ হয়েছে না ক্ষতি। হযরত আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.) শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.)এর নেতৃত্বের পাশে থেকে আকাবির ও আসলাফের চিন্তাধারা রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন আমৃত্যু। তাঁদের বিচক্ষণ এসব ভূমিকা ভবিষ্যত প্রজন্ম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে বাধ্য হবে।

বাংলাদেশের কোটি কোটি জনতার হৃদয়ের ভালোবাসা ও দোয়া আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর প্রতি। তিনি আধ্যাত্মিক শক্তির প্রভাবে দিন গুজরান করেন। সময়ের কোনো শাসকের দয়া, অনুকম্পা, হুমকি-ধমকি, লোভ-লালসায় পা বাড়াননি। তিনি শাহানশাহ, রাজাধিরাজের গোলামি করে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত ছিলেন। আছেন তিনি চেতনায়, থাকবে তার দ্বীনি গায়রত ও চেতনায় যুগ যুগ ধরে।

বহু প্রতিভা ও গুণের অধিকারী এই মহান ব্যক্তিত্ব আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী (রহ.) গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ ঈসায়ী সনের রবিবার তাঁর জীবনের ব্যস্ততম ৭৪টি বসন্তের ইতি ঘটিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। তাঁর চলে যাওয়াতে দেশের আলেম সমাজ ও ছাত্র জনতা গভীর শোকাহত হয়েছেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন হযরতকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সুউচ্চ মাকাম দান করুন এবং তাঁর রেখে যাওয়া কাজগুলোকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তি তৈরি করে দিন। আমিন।

লেখক: শায়খুল হাদিস- তিলপাড়া মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা, খিলগাঁও, ঢাকা ও মিফতাহুল উলূম মাদ্রাসা, বাড্ডা, ঢাকা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক- সানমুন ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস, নয়াপল্টন, ঢাকা।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।