প্রশ্ন: যথাবিহীত সম্মান পূর্বক বিনীত আরজ এই যে, কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে ঝগড়া বিবাদে এভাবে লিপ্ত হয়ে পড়ে যে, স্ত্রীকে নিয়ে নিজ আত্মীয় বাড়ীতে বেড়াতে যাবে। তাই স্ত্রীকে বলে স্বর্ণের গহনা অলঙকারগুলো পরিধান করতে। কিন্তু স্ত্রী স্বামীর দেয়া গহনা অলংকারাদি পরিতে অস্কীকার করে। এই তর্কে বিতর্কে প্রায় ২/৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়। এক কথায় স্বামীর দেয়া গহনা অলংকারাদি স্ত্রী পরিধান করবে না। এক পর্যায়ে স্বামী তাকে সামাল দিতে না পারায় স্ত্রীকে বলে, যদি গহনা অলংকারাদি পরিধান না করো,তাহলে তোমাকে ১ তালাক, ২ তালাক, ৩ তালাক। বাড়ি থেকে বের হয়ে যাও।
এ কথা বলার পর স্বামীর দেয়া গহনা অলংকার পরিধান করে স্বামীর আত্মীয় বাড়ীতে বেড়াতে চলে যায়। ঘটনাটি সংঘটিত হয় ২০১৫ সালের শুরু দিকে। তারপর তারা রীতিমত ঘর সংসার করে আসছে। এখন জানার বিষয় হলো উক্ত মাসআলার শরয়ী সমাধান কি হবে?
স্বামীর স্বীকারোক্তি: উপরোক্ত ঘটনায় কোনো স্বাক্ষী না থাকায় স্বামী আল্লাহ তাআলাকে হাযির নাযির করে হলফ করে বললেন, ঘটনার বিবরণ সবই সত্য।
স্ত্রীর স্বীকারোক্তি: আমার স্বামীর উপরোক্ত লিখিত বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করিলাম। স্ত্রী-মুছাম্মত রাবেয়া খাতুন।
– মুহাম্মদ রকিবুদ্দিন রোকন, ঠিকানাবিহীন।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
উত্তর: শরীয়তের দৃষ্টিতে তালাককে কোনো কিছুর সাথে শর্তযুক্ত করলে যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত শর্ত পাওয়া যায় না ততক্ষণ পর্যন্ত তালাক পতিত হয় না। সুতরাং উল্লিকিত মূলনীতির আলোকে আপনার প্রদত্ত বর্ণনা ও তার উপর আপনার স্ত্রীর সত্যায়ন মতে সমাধান এই যে, যেহেতু স্বামী প্রশ্নোক্ত ঘটনায় তালাককে, স্বীয় স্ত্রী, অলংকারাদী পরিধান না করার সাথে শর্তযুক্ত করেছিলেন, এদিকে স্ত্রী উক্ত মজলিসেই অলংকারাদি পরিধান করে নিয়েছিল, সেহেতু উল্লিখিত ঘটনায় উক্ত স্বামী কর্তৃক স্বীয় স্ত্রীর উপর কোনো তালাক পতিত হয়নি। সুতরাং উক্ত স্বামী-স্ত্রী যথানিয়মে বৈধভাবে ঘর-সংসার করতে পারবেন।
তথ্যসূত্র: ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪৮৮ [মাকাতাবা যাকারিয়া], হিদায়া- ২/৩৮৫ [মাকতাবাতুল ফাতাহ]।
উত্তর দিয়েছেন- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন
মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক-
জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ