Home শিক্ষা ও সাহিত্য নূরানী কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষার ফলপ্রকাশ: পাশের হার ৯৮.৩৮%

নূরানী কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষার ফলপ্রকাশ: পাশের হার ৯৮.৩৮%

ছবি- উম্মাহ।

নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ পরিচালিত ২০২৩ইং শিক্ষাবর্ষের কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। দেশব্যাপী ২ হাজার ৮৮৯টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় বোর্ডের আওতাভুক্ত ৯,৫৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬ লাখ ৬২ হাজার ১৪৯ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। গড় পাশের হার ৯৮.৩৮%। পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৯,৫৫০ জন। সর্বোচ্চ মেধা তালিকা ‘টপ-২০’ এ স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে ১ হাজার ৭৪২ জন।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় হাটহাজারিস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী এবং মহাসচিব ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন।

বোর্ডের সিনিয়র প্রশিক্ষক মাওলানা কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও পুস্তক হিসাব নিয়ন্ত্রক মাওলানা হেলাল উদ্দিনের পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বোর্ডের সহ-সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী।

উপস্থিত ছিলেন- বোর্ড সহ-সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সচিব মাওলানা জমির উদ্দিন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মীর মুহাম্মদ আনিস, অর্থ সচিব হাফেজ মাওলানা ইসমাইল, সহ অর্থ সচিব মাওলানা ওসমান ফয়েজী, সদস্য মাওলানা ইউনুস, মাওলানা ওসমান শাহানগরী।

প্রশিক্ষক ও পরিদর্শকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাওলানা আবুল হাসেম, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা এমদাদুল্লাহ, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম-মনজুর, মাওলানা নুরুল আবসার মাস্টার আনিসুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

এ সময় প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ দেশব্যাপী নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ-এর কার্যক্রম এবং কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য ও সংক্ষিপ্ত চিত্র উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

আরও পড়তে পারেন-

ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বোর্ড চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি খলীল আহমদ কাসেমী বলেন, গত দুই যুগ আগেও বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় ফোরকানিয়া মক্তব শিক্ষাব্যবস্থা চালু ছিল। এতে প্রায় মুসলিম সন্তানরা পবিত্র কুরআন ও ইসলামের মৌলিক শিক্ষা শিশুকালেই আত্মস্ত করে নিতো। এর এত ব্যাপক উপকারিতা ছিল যে, এসব শিশুরা বড় হয়ে কখনো ইসলাম ও আল্লাহ-রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলতো না। এদেরকে নাস্তিক্যবাদিরা সহজে খপ্পরে ফেলতে পারতো না।

তিনি আরো বলেন, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদিরা সাধারণ মুসলমানদের মজবুত ঈমানী শক্তির এই গুঢ়তত্ত্ব অবলোকন করে ফোরকানিয়া মক্তব শিক্ষাকে টার্গেট করলো। সকাল ১০টার স্কুল সময়কে তারা ভোর বেলায় নিয়ে এসে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা পদ্ধতি চালু করল। ক্রমান্বয়ে ভোর বেলার মক্তব শিক্ষা সংকুচিত হতে হতে অনেকটা হারিয়ে গেল। আলহামদুলিল্লাহ, এরপর নূরানী শিক্ষাব্যবস্থা চালু হলে এই ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। সারা দেশে হাজার হাজার নূরানী মাদ্রাসার মাধ্যমে মুসলিম শিশু সন্তানরা কুরআন, হাদীস ও ইসলামের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার প্রাথমিক পাঠও নিতে পারছে। আদর্শ সমাজ ও দেশ গড়ার কাজে এভাবে নূরানী মাদ্রাসাসমূহ বিশাল অবদান রেখে চলেছে।

অনুষ্ঠানে বোর্ড মহাসচিব আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের শহর, উপশহর, জেলা-উপজেলা সদরসহ গ্রামগঞ্জে নূরানী পদ্ধতির সিলেবাস অনুসরণ করে প্রায় ২৫ হাজারের অধিক প্রাথমিক নূরানী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। যার সিংহভাগ নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ এর আওতায় নিবন্ধিত ও পরিচালিত। বর্তমানে শুধুমাত্র এই বোর্ডের আওতায় পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫-১০ বছর বয়সী শিশু শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৮ লক্ষের অধিক। এ বিশাল জনগোষ্ঠিকে দ্বীনি ও জাগতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ড অসমান্য অবদান রেখে যাচ্ছে।

আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন নূরানী বোর্ডের কেন্দ্রীয় সনদ পরীক্ষায় ৯৮.৩৮% পাশের হারে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এই গৌরবময় ফলাফলের জন্য বোর্ড আওতাভুক্ত মাদ্রাসাসমূহের পরিচালকসহ সকল শিক্ষককে আমি কৃতিত্ব দেব। পাশাপাশি নূরানী তা’লীমুল কুরআন বোর্ডের কর্মকর্তা ও পরিদর্শকগণকেও মোবারকবাদ জানাবো, যাঁরা নিরবিচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের একাডেমিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও শিক্ষার মানোয়ন্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।