Home প্রবন্ধ-নিবন্ধ মিশরের পিরামিড তৈরির রহস্য উন্মোচনের দাবি বিজ্ঞানীদের

মিশরের পিরামিড তৈরির রহস্য উন্মোচনের দাবি বিজ্ঞানীদের

গিজা পিরামিড। ছবি: উইকিপিডিয়া

চার হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে বিশ্বখ্যাত গিজা কমপ্লেক্সসহ ৩১টি পিরামিড নির্মাণের রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। খবর বিবিসির

সম্প্রতি নর্থ ক্যারোলিনা উইলমিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক আবিষ্কার করেছেন, পিরামিডগুলো সম্ভবত দীর্ঘকাল আগে হারিয়ে যাওয়া নীল নদের একটি প্রাচীন শাখা বরাবর নির্মিত হয়েছিল। বর্তমানে যা মরুভূমি ও কৃষিজমির নিচে ঢাকা পড়ে গেছে।

বহু বছর ধরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ভেবেছেন যে প্রাচীন মিশরীয়রা অবশ্যই নদীর তীরে পিরামিড নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পাথরের ব্লকের মতো উপকরণ পরিবহনের জন্য নিকটবর্তী জলপথ ব্যবহার করেছিল।

এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক ইমান ঘোনিম বলেন, ‘কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউই পিরামিডগুলোর মূল সাইটের সঙ্গে এই বিশাল জলপথের অবস্থান, আকৃতি, আকার বা নৈকট্য সম্পর্কে নিশ্চিত ছিল না।’

গবেষক দলটি রাডার উপগ্রহ চিত্র, ঐতিহাসিক মানচিত্র, ভূতাত্ত্বিক জরিপ এবং পলি কোরিং (নমুনা থেকে প্রমাণ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিকদের ব্যবহৃত একটি কৌশল) ব্যবহার করে নদীর বিলুপ্ত শাখাটির মানচিত্র তৈরি করেছে। এর ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে হাজার হাজার বছর আগে একটি মারাত্মক খরা এবং বালুঝড়ের কারণে জলপথটি ঢাকা পড়ে গেছে।

সম্প্রতি নেচার জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষক দলটি বালির পৃষ্ঠ ভেদ করতে এবং সুপ্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর ছবি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

আরও পড়তে পারেন-

অধ্যাপক ঘোনিম বলেন, ‘প্রাচীন মিশরীয় অধিকাংশ পিরামিড যেখানে রয়েছে’ এর পাদদেশে ‘ঢাকা পড়ে যাওয়া নদী এবং প্রাচীন কাঠামো’রয়েছে।

গবেষণার সহ-লেখক ড. সুজান অনস্টাইন বিবিসিকে বলেন, ‘নদীর প্রকৃত শাখাটি খুঁজে পাওয়া এবং সেখানে একটি নৌপথ আছে, যা ভারী ব্লক, যন্ত্রপাতি, মানুষ, সবকিছু পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এমন তথ্য উদ্‌ঘাটন সত্যিই আমাদের পিরামিড নির্মাণের ব্যাখ্যা দিতে সহায়তা করেছে।’

গবেষক দলটি জানতে পারেন নদীর শাখাটির নাম আহরামাত শাখা। আরবি ভাষায় ‘আহরামাত’ অর্থ পিরামিড। এটি প্রায় ৬৪ কিলোমিটার (৩৯ মাইল) দীর্ঘ এবং ২০০-৭০০ মিটার (৬৫৬-২২৯৬ ফুট) চওড়া এবং এটি ৩১ টি পিরামিডের সীমানা বরাবর প্রবাহিত হতো। এখন থেকে ৪৭০০ থেকে ৩৭০০ বছর আগে এসব পিরামিড নির্মিত হয়েছিল।

এই বিলুপ্ত শাখা নদী আবিষ্কারের ফলে গিজা ও লিশটের (মধ্য রাজ্যের সমাধিস্থল) মধ্যকার স্থানে এত বেশি সংখ্যক পিরামিড নির্মাণের কারণ জানা গেছে। বর্তমানে এই এলাকাটি সাহারান মরুভূমির একটি দুর্গম অঞ্চল।

পিরামিড কমপ্লেক্সগুলোর সঙ্গে শাখা নদীর নৈকট্য থেকে বোঝা যায় যে ‘এই পিরামিডগুলো নির্মাণের সময়কালে নদীটি প্রবাহিত ও চলাচল উপযোগী’ ছিল।

ড. অনস্টাইন বলেছেন, প্রাচীন মিশরীয়রা ‘মানুষের শ্রমের পরিবর্তে এই ভারী ব্লকগুলো বহন করতে নদীর শক্তি ব্যবহার করেছে হয়ত। কারণ এটি অনেক কম শ্রমসাধ্য।’

তিনি আরও বলেন, নীল নদ ছিল প্রাচীন মিশরের জীবনরেখা এবং আজও তাই আছে।

সূত্র- টিবিএস।

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।