।। মাওলানা মুনির আহমদ ।।
চামড়ার ন্যায্য দাম নির্ধারণ বা বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নিয়েই এবার মিডিয়ায় অপ্রয়োজনীয় ‘হাইপ’ তোলা হল কেন? ফল কী হলো?
এই অযাচিত প্রচারণার কারণে কওমি মাদ্রাসাগুলো এক ধরণের ত্রিমুখী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, যা পূর্বের ‘ফ্যাসিবাদী’ সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে।
প্রথমত, অনেক মাদ্রাসা এই প্রচারণায় আশাবাদী হয়ে চামড়া সংগ্রহে অর্থ ব্যয় করেছে—কখনো নগদ দিয়ে, কখনো আগের বছরের তুলনায় বেশি মূল্যে। কিন্তু বাস্তবে সেই প্রত্যাশিত দাম পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয়ত, ‘ভাল দাম’–এর গুজবে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্থানীয় অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবার চামড়া কেনার দৌড়ে নেমে পড়েন। এতে যেসব চামড়া আগে মাদ্রাসাগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে পেত, তার একটি বড় অংশ তারা হারিয়েছে।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
তৃতীয়ত, অতীতে চামড়ার বাজার একেবারে মন্দা থাকায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ার লোকজন চামড়া কেড়ে নিতে মাঠে নামতো না। কিন্তু এবার ‘উচ্চ মূল্যের গুজব’–এর কারণে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন সমাজকল্যাণ সংস্থা, এমনকি কোথাও কোথাও বিএনপির স্থানীয় নেতারাও চামড়ার জন্য প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। ফলে এখানেও মাদ্রাসাগুলোর চামড়ার একটি অংশ হাতছাড়া হয়েছে।
অন্তবর্তী সরকারের উচিত ছিল বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, মিডিয়ায় গুজব না ছড়ানো। কিন্তু বাস্তবে তারা করল উল্টোটা—যার খেসারত দিতে হলো মাদ্রাসাগুলোকে।
পরিশেষে বলবো, চামড়া নিয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট মহলের দায়িত্বহীন আচরণ ও হাইপ তৈরির নেপথ্য কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি বৃহৎ ধর্মীয় শিক্ষা কাঠামো—যার ওপর সমাজের দরিদ্র শ্রেণির সন্তানদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ