Home ওপিনিয়ন পাশ্চাত্য দর্শনের বিপরীত প্যার্টানেই আছে সমকামিতার মত অনাচার থেকে মুক্তি

পাশ্চাত্য দর্শনের বিপরীত প্যার্টানেই আছে সমকামিতার মত অনাচার থেকে মুক্তি

- আরিফুল ইসলাম শিকদার।

।। আরিফুল ইসলাম শিকদার ।।

সমাজে নতুন কোন দর্শনের বিস্তারে যদি পাল্টা দর্শন না থাকে, তবে হুমকি ধামকি দিয়ে সেই নতুন দর্শনকে ঠেকানো যায় না।

কিছুদিন আপনি লড়াই করবেন লিভ টুগেদারের বিপক্ষে, কিছু দিন নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা নিয়ে , তারপর সমকামিতা নিয়ে, আত্মহত্যা নিয়ে। এভাবে একটার পর একটা রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সেটাকে আমাদের সমাজ কবুল করছে। কেন করছে ? এই প্রশ্নের উত্তর প্রথমে জানা জরুরী। এই প্রশ্নের উত্তর ছাড়া আপনি সমাজকে ঠেকানোর যে কৌশল অবলম্বন করবেন, তা বালির বাঁধের মত।

হ্যাঁ, বিশ্বাস ভিত্তিক আলোচনা জরুরী। তবে বিশ্বাস আর চিন্তার সাথে যেখানে সংঘর্ষ হয় আর সেই চিন্তা যখন সমাজে প্রকাশ্যে হাজির থাকে, তবে সেই চিন্তার মোকাবেলা ছাড়া বিশ্বাস টেকানো মুশকিল। আর বিশ্বাস আপাতত কিছু সময় টিকে থাকলেও ধীরে ধীরে সেই বিশ্বাস অন্ধ বিশ্বাস নামে সমাজ প্রত্যাখান করে।

দেখুন পবিত্র কুরআনে কত সুন্দরভাবে আল্লাহ তা’আলা বিশ্বাসের আহবানের সাথে সাথে যুক্তিকে পেশ করেছেন। চিন্তাকে মূল্যায়ন করেছেন। চিন্তাশীল হতে বলেছেন। তাই আসুন, আমরা সমস্যার গোড়া খুঁজি। সেই গোড়াতে আঘাত হানি।

কিছুদিন ধরে সমকামিতা নিয়ে খুব হৈ চৈ চলছে। এটাকে যে সমাজ বিশ্বাসের জায়গা থেকে নোংরামী হিসাবে দেখেছে, সেই সমাজই আজকে এটাকে অধিকার হিসাবে দেখা শুরু করেছে। যারা এটাকে অধিকার হিসাবে দেখছে, তারা সকলেই কি সমকামী ? সমকামীতায় লিপ্ত সকলেই কি এটাকে অধিকার হিসাবে পেতে চাইছে?

আরও পড়তে পারেন-

ইসলাম গ্রহণ করায় সিলভিয়া ইতালিয়ান চরমপন্থীদের বিদ্বেষের শিকার হন

ফিলিস্তিনের কোরআনে হাফেজা চার যমজ বোনের প্রশংসায় মুসলিম বিশ্ব

ভারতের মতো শ্রীলঙ্কাও মুসলমানদেরকে কলঙ্কিত করতে করোনভাইরাসকে হাতিয়ার করছে

ঘৃণা-বিদ্বেষ নয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকুক

উলামায়ে কেরাম পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা বাতিলের দাবি কেন তুলেছেন?

দুটোর উত্তরই হল ‘না”। একজন মানুষ সমকামী নয় কিন্তু সে এটার অধিকারে বিশ্বাসী। কেন? যেই কারণে সে এই বিশ্বাস পোষণ করে সেই কারণ কিন্তু সমাজে আরো বৃহৎ লোকের মধ্যে উপস্থিত আছে। তাই বিষয়টা ছড়াবে অতিদ্রুত।

কিছু দিন ধরে যেটা চলছে সেটা কিন্তু তাদের ফার্স্ট ট্রায়াল না। ফার্স্ট ট্রায়াল আরো আগেই তারা প্রকাশ্যে দিয়েছে। এটা সম্ভবত চার বা পাঁচ নাম্বারের ট্রায়াল । এই নাম্বারে এসে তাদের পক্ষে প্রকাশ্যে দাঁড়িয়েছে আরো বেশী সংখ্যক মানুষ।

আপনি নিশ্চিত থাকুন, যদি আপনি কেবলমাত্র প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা অব্যাহত রাখেন, চিন্তার মূল গলধের জায়গা চিহ্নিত করে কাজ করতে না পারেন, তবে এই নোংরামি আরো ছড়াবে। সেই মূলটা কী ? কীভাবে হবে তার উপস্থাপনা ? এটা নিয়ে যে পরিমান কাজ হওয়া দরকার তার কিছুই হয়নি।

এক সাথে বসুন, ডিসকাস করুন। বর্তমানে যা হচ্ছে তা যথেষ্ট কিনা চিন্তা ভাবনা করুন।

আমি মনে করি যে বিশাল সংখ্যক মানুষ নানান ভাবে শিখছে যে, ব্যক্তি স্বাধীনতা সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয়। আর আমাদের ইসলামিক পন্ডিতরাও সেই ব্যক্তি স্বাধীনতাকে হয় প্রত্যাখ্যান করেছেন, না হয় সেটাকে সম্পূর্ণভাবে ইসলামীকরণ করেছেন, অথবা বিরোধিতাই করেছেন। কিন্তু এটার বিপরীত দর্শনকে শক্তিশালীভাবে হাজির করতে সক্ষম হননি।

আমাদের বিশ্বাসের জাগতিক চিন্তার প্যার্টান আসলে কী রকম সেটা বুঝতে শিখতে হবে। আমাদের এই প্যাটার্নে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ হল মানব সভ্যতা। এরপর আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ। এরপর পরিবার। এরপর ব্যক্তি।

চিন্তার এই প্যাটার্নে সমকামিতা নিষিদ্ধ, অত্মহত্যা নিষিদ্ধ, লিভ টুগেদার নিষিদ্ধ। সবগুলোই দন্ডনীয় অপরাধ সাব্যস্ত হবে। কেন?

কারণ, ব্যক্তি স্বাধীনতা মূখ্য নয় বরং গৌন। ব্যক্তি স্বাধীনতার চেয়ে মূখ্য বিষয় হল পরিবার। তার চেয়ে মূখ্য হল সমাজ কাঠামো। তার চেয়ে মূখ্য রাষ্ট্র এবং তার চেয়ে মূখ্য মানব সভ্যতা। এর উল্টো প্যার্টানে চিন্তা করা ব্যক্তি চিন্তার দিক থেকে, যুক্তির দিক থেকে- সমকামিতা, লিভ টুগেদার, আত্মহত্যা সহ এই জাতীয় সকল অনাচারকে বৈধ করতে বাধ্য হবে।

বুঝতে হবে, বুঝাতে হবে মানুষ হিসাবে জন্মগ্রহণ করার পর এবং মানুষ হিসাবে বেড়ে ওঠার পর মানব সভ্যতার প্রতি আমার দায়বদ্ধতাও আছে। কেবল ইচ্ছার অধিকার নয়। ইচ্ছার অধিকার ততটুকুই গ্রহণযোগ্য, যাতে মানব সভ্যতার মৌলিক স্ট্রাকচারগুলো ভেঙে পড়ে মানব সভ্যতা বিলীন না হয়ে যায়। এই বিলীন করার চেষ্টা অপরাধ।

তাই নিজে বা দুইজনে সম্মত হলেই হবে না, বরং দেখতে হবে এটা মানব সভ্যতা গঠনের কোন একটা এলিমেন্টসকে ধংস করে কী না। আল্লাহু আ’লাম।

– আরিফুল ইসলাম শিকদার, আহবায়ক, এম জে পি।

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।