পৃথিবীর আলোয় তাদের আয়ু স্বল্পকালীন হলেও, একটি মেফ্লাইয়ের জন্ম কিন্তু দীর্ঘ এক জটিল প্রক্রিয়া। বৈজ্ঞানিক নাম ইফিমেরা ড্যানিকা। ক্ষণস্থায়ী আয়ু মাত্র কয়েক দিনের। এরমধ্যেই তাদের সারতে হয় উড়তে শেখা, প্রজনন আর নতুন ডিম দেওয়ার চক্র। ছবি: এপি
আন্তর্জাতিক পতঙ্গ বিশারদদের একটি সংগঠন এবং অন্যরা ২০২১ সালের সেরা পতঙ্গের খেতাব দিয়েছেন ডেনিশ মেফ্লাই’কে। অবশ্য মেফ্লাইদের জীবন এত সংক্ষিপ্ত যে এই শিরোপা নিয়ে মাতামাতি! করার সময় কিন্তু তাদের নেই।
পতঙ্গটির বৈজ্ঞানিক নাম ইফিমেরা ড্যানিকা। ক্ষণস্থায়ী আয়ু মাত্র কয়েক দিনের। এরমধ্যেই তাদের সারতে হয় উড়তে শেখা, প্রজনন আর নতুন ডিম দেওয়ার চক্র।
গত শুক্রবার জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা এবং প্রকৃতি সংরক্ষণবিদদের একটি জয়েন্ট কমিশন এই ঘোষণা করে।
আরও পড়তে পারেন-
- তালাকের পর তাওবা পড়ানো হলে পুনরায় সংসার করা যাবে কি না?
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- আক্বায়েদ ও আমল সম্পর্কে গায়রে মুক্বাল্লিদদের পারস্পরিক মতভেদ
- ইতিহাসে মুসলিম নারীদের অমর কীর্তি
- পি কে হালদারের আড়ালের গুরু ও মাফিয়া পতন কাহ
কমিশনের চেয়ারম্যান থমাস স্কিমিট বলেন, ‘জীবনচক্রের কারণেই মেফ্লাইরা এক বিস্ময়: পানিতে ডিম পাড়া থেকে শুরু করে, ওড়ার সক্ষমতা অর্জন, প্রজনন আর মৃত্যু সবকিছুই মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে হয়।’
পৃথিবীতে মেফ্লাইরা আছে আজ সাড়ে ৩৫ কোটি বছর ধরে। শুধুমাত্র মধ্য-ইউরোপেই এর ১৪০টি প্রজাতির দেখা পাওয়া যায়।
তবে পৃথিবীর আলোয় তাদের আয়ু স্বল্পকালীন হলেও, একটি মেফ্লাইয়ের জন্ম কিন্তু দীর্ঘ এক জটিল প্রক্রিয়া।
মে ও সেপ্টেম্বর মাসে পানির উপরিস্তরে আড়াআড়ি ভাবে উড়ে হাজার হাজার ডিম ছাড়ে স্ত্রী মেফ্লাইয়েরা। ডিমগুলো সঙ্গে সঙ্গে পানিতে ডুবে যায়। ঠিকানা হয় নদী তলদেশের মাটিতে। সেখানেই কিছুদিন পর লার্ভা জন্ম নেয়। পানিতে শ্বাস নেওয়ার জন্য তার শরীরে মাছের মতো ফুল্কোও তৈরি হয়। এরপর লার্ভার পূর্ণতা পেতে সময় লাগতে পারে এক থেকে তিন বছর।
স্কিমিট বলেন, ”এই জলচর জীবন থেকে আকাশে ওড়ার পর্ব শুরুর আগে লার্ভার পুরোনো আর নতুন ত্বকের মাঝে বাতাসের এক সূক্ষ্ম আবরণ তৈরি হয়। এই বাতাসের সাহায্যে তারা শরীরের ওজন কমিয়ে পানির উপর ভেসে উঠতে পারে, আর একবার ভেসে ওঠা মাত্রই লার্ভার পুরোনো ত্বক ফেটে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তখন নদী ছেড়ে বাতাসে ডানা মেলে হাজার হাজার মেফ্লাই।”
পতঙ্গটির কোনো অন্ত্রনালী নেই। নেই কোনো খাদ্যগ্রহণের মুখ। তাই ওড়া মাত্রই ওদের জীবন মাত্র কয়েক দিনের। এই সময়ের মধ্যেই প্রজনন করে, ডিম দিয়ে তারপর ওরা মারা যায়।
কমিশনটি ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট পোকাকে বর্ষসেরা খেতাব দিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে তারা বিচিত্র নানা প্রজাতির পতঙ্গের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানোর চেষ্টা করছেন। সূত্র: এপি।
উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ