Home ইতিহাস ও জীবনী প্রাচীন মসজিদে ঘেরা বারোবাজারের বৈশিষ্ট্য

প্রাচীন মসজিদে ঘেরা বারোবাজারের বৈশিষ্ট্য

-প্রাচীন গলাকাটা মসজিদ।

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার বারোবাজার ইউনিয়ন। প্রায় তিন বর্গ- কিলোমিটারের নগরী। বারোজন সহচর নিয়ে খানজাহান আলী এখানে আসেন। সেখান থেকেই এর নাম বারোবাজার। ১৯৯৩ সালে এখানকার মাটি খুঁড়ে সন্ধান মিলে নয়টি মসজিদ। প্রায় প্রতিটি মসজিদের সঙ্গে আছে একটি করে প্রাচীন দিঘি।

প্রাচীন সাতগাছিয়া মসজিদ

বারোবাজারের মসজিদগুলোর সবচেয়ে বড় সাতগাছিয়া আদিনা মসজিদ। প্রায় ৭৭ ফুট লম্বা ও ৫৫ ফুট চওড়া মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে লতাপাতার নকশা সমৃদ্ধ তিনটি মেহরাব রয়েছে। প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ৩৫ গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদের ভেতরে এখনও ৪৮টি পিলার দেখা যায়। মসজিদের পাশেই একটি বিরাট দিঘি। নাম পিঠেগড়া পুকুর।

প্রাচীন গলাকাটা মসজিদ

বারোবাজার তাহেরপুর রাস্তার উত্তর পাশে অবস্থিত গলাকাটা মসজিদটি সুলতানি আমলের আরেক অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপত্য শিল্প। প্রায় ২১ ফুট লম্বা ও ১৮ ফুট চওড়া এই মসজিদ খনন করে তোলা হয় ১৯৯৪ সালে। জনশ্রুতি আছে, বারোবাজারে এক অত্যাচারী রাজা ছিলেন। তিনি প্রজাদের বলি দিয়ে এই দিঘির মধ্যে ফেলে দিতেন। এ কারণেই এর নাম হয় গলাকাটা দিঘি।

আরও পড়তে পারেন-

জোড় বাংলা মসজিদ

গলাকাটা মসজিদ থেকে সামান্য পশ্চিম পাশে, সড়কের বিপরীত দিকে এক গম্বুজ বিশিষ্ট জোড় বাংলা মসজিদের অবস্থান। মসজিদটি খনন করা হয় ১৯৯৩ সালে। খননের সময় এখানে একটি ইট পাওয়া যায়, তাতে আরবি অক্ষরে লেখা ছিল ‘শাহ সুলতান মাহমুদ ইবনে হুসাইন, ৮০০ হিজরি।’জনশ্রুতি আছে, মসজিদের পাশে জোড়া কুঁড়েঘর ছিল বলেই এর নাম জোড় বাংলা মসজিদ।

মনোহর মসজিদ

মসজিদটি যেখানে আবিষ্কৃত হয় তার পাশে একটি জলাশয় থাকায় একে মনোহর দিঘির মসজিদ নামে ডাকা হয়। মনোহর মসজিদটি উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে লম্বাভাবে নির্মিত। অভ্যন্তরের আয়তন ২২.৬৭ ও ২২.৬৭ ফুট এবং মসজিদের দেয়ালগুলোর পুরুত্ব প্রায় পাঁচ ফুট। মসজিদের মিনারগুলো নির্মাণে ইট ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রাচীন গোড়ার মসজিদ

তাহেরপুর সড়ক ধরে সামান্য পশ্চিম দিকে এগুলে হাতের বাঁয়ে একটু ভেতরের দিকে আরেকটি মসজিদের দেখা মিলবে। মসজিদটি খান জাহান আলী কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল বলে প্রবল জনশ্রুতি আছে। মসজিদটি খননের সময় একটি কবরের সন্ধান মেলে। আরও শোনা যায়, পাশের কবরটি গোড়াই নামের কোনো এক দরবেশের। এ থেকেই এর নাম গোড়াই বা গোড়ার মসজিদ।

পীর পুকুর মসজিদ

তাহেরপুর সড়ক ধরে সামনে এগুতে হবে। দুটি বাঁক ঘুরলেই বিশাল দিঘি, নাম পীর পুকুর। পশ্চিম পাড়ের মাঝ বরাবর বেশ বড় আকৃতির মসজিদ পীর পুকুর মসজিদ। এই মসজিদও ছিল মাটির নিচে। এই মসজিদে ছাদ নেই, শুধু দেয়াল আছে। মসজিদটি লাল ইটের তৈরি।

পাঠাগার মসিজদ

মিঠাপুকুর মৌজায় একটি ছোট ও অনুচ্চ মসজিদ। মসজিদের দেয়াল ১.৩৮ মিটার পুরু। মসজিদটির উপরের অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

নুনগোলা মসজিদ

বারোবাজার হাসিলবাগে অবস্থিত নুনগোলা মসজিদটিও বর্গাকৃতির একটি মসজিদ। মসজিদের বাইরের দেওয়ালে পর্যায়ক্রমিক খাড়া চাল ও খাঁজ আছে। এগুলোতে দিগন্ত রেখাকৃতির ছাচে গড়া নকশা আছে। মসজিদের ওপরে একটি গম্বুজ আছে।

শুকুর মল্লিক মসজিদ

শুকুর মল্লিক মসজিদ হাসিলবাগ মৌজায় অবস্থিত। এটি বারোবাজার থেকে ৩০০ মিটার দক্ষিণে। মসজিদটির উভয় পাশে একটি করে বন্ধ মেহরাবসহ পশ্চিম পাশে একটি অর্ধবৃত্তাকৃতির মেহরাব আছে। এই মেহরাবগুলো সজ্জিত করা হয়েছে পোড়া মাটির ঘণ্টা ও চেইন নকশায়। অপরূপ নকশাগুলো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।