Home ইসলাম বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ: অল্পে সন্তুষ্টির নিদর্শন

বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ: অল্পে সন্তুষ্টির নিদর্শন

- বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ।

নীল সাগরের পানিতে ঘেরা বার্বাডোস দ্বীপ, ইসলাম কিন্তু পা রেখেছে সেখানেও। সমীক্ষা অনুসারে প্রায় ৪০০০-এরও বেশি মুসলমান বাস করেন ক্যারিবিয়ানের এই দ্বীপে। আর তাঁদের বেশিরভাগই ভারতের গুজরাট থেকে আসা মুসলমানদের অভিবাসীদের বংশধর। খুব সামান্য কিছু মুসলমান গিনি, ত্রিনিদাদ ও মধ্য প্রাচ্য থেকে এসেছেন।

অভিবাসী মুসলমানদের দাবি খুবই কম ছিল। থাকার জন্য একটা ছাদ, কিছু খাদ্য, পরনের কাপড় আর নিয়মিয় নমাজ আদায় করার জন্য একটি মসজিদ। সেই একটি মসজিদ থেকে বর্তমানে বার্বাডোসে স্থাপিত হয়েছে তিনটি মসজিদ। সেগুলির মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হল বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ।

বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ ও তার ইতিহাস

১৯৫১ সালে গুজরাট থেকে আগত অভিবাসী মুসলমানরা এই মসজিদের পত্তন করেন। এটি দ্বীপের বৃহত্তম মসজিদ। তার আগে, মুসলমানদের কোনও প্রার্থনা করার স্থান ছিল না। দুটি মুসলমান পরিবার তাঁদের নিজেদের বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন নিয়মিত নমাজ আদায়ের জন্য।

আরও পড়তে পারেন-

খেদ ছিল অভিবাসী মুসলমানদের মনে। পেটের টানে তাঁরা দেশ থেকে বার্বাডোসে পা রেখেছিলেন। নিজের মত করে ভালবেসেছিলেন দ্বীপের মানুষ ও পরিবেশকে। সেই দ্বীপে তাঁদের প্রার্থনার স্থান মিলবে না?

১৯৪৯ সালে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় কেনিংস্টন নিউ রোডের কাছে ৬৭০০ বর্গফুট জমি খরিদ করা হয়। তারপরেই বার্বাডোসের মুসলমানরা যেন উৎসবে মেতে ওঠে। মহম্মদ ইউসুফ দেগিয়া নামক এক কৃতি স্থপতিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় মসজিদটি গঠনের জন্য। তিনি যন্ত্রের সাহায্যে নিখুঁত টালি বানাতে সক্ষম ছিলেন।

মসজিদটি স্থানীয় প্রবাল, ঝিনুক, সামুদ্রিক পাথর ও দেগিয়া সাহাবের তৈরি টালির মাধ্যমে গড়ে ওঠে। তিনি মসজিদের মিমবার , মিহরাব ও মিনারও তৈরি করেন নানা রঙিন টালি সহযোগে। স্থানীয় মুসলমানরা নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে মসজিদটি তৈরি হতে সহায়তা করেছিলেন। ত্রিনিদাদের মুসলমানরাও সাহায্য পাঠিয়েছিলেন বাইরে থেকে।

তারপর, ১৯৫১ সালের ২৬ জানুয়ারি জুম্মার প্রার্থনা ও আযানের মাধ্যমে সাধারণের জন্য দ্বার উন্মুক্ত করা হয় এই মসজিদের। বার্বাডোসের মুসলমানের কাছে এ এক পবিত্র দিন।

মসজিদটির বর্তমান অবস্থা

১৯৮০ সালে মসজিদটির নবীকরণ করা হয়। চারপাশে আরও জমি কেনা হয়। বাড়ানো হয় কিবলা ঘরের আয়তন। ৮০ সালের শেষের দিকে নবীকরণ শেষ হয়। ১৯৫১ সালে, মসজিদটিতে ৯৫ জন প্রার্থনা করতে পারতেন। বর্তমানে ৫২৮ জন একসঙ্গে নমাজ আদায় করতে পারেন।

মসজিদের মধ্যে সবার আগে চোখ টানে সুদৃশ্য সবুজ কাচের জানলাগুলি। জার্মানি থেকে আনা হয়েছিল ঐ কাচ। পায়ের নীচের নরম কার্পেট আনা হয়েছিল মিশর থেকে। সেই ১৯৮০ থেকে নিয়মিত দিনে ৪-৫ বার আযান দেওয়া হয় মসজিদের মিনার থেকে। স্থানীয় মুসলমানরা তো বতেই, পর্যটকরাও ধীর পায়ে প্রবেশ করে এখানে। তাঁদের মন ভরে ওঠে অনুপম শান্তিতে।

আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম যে আসলে অল্পে সন্তুষ্ট হতে শেখায়, বার্বাডোসের জুম্মা মসজিদ আসলেই তার প্রমাণ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।