Home ইসলাম ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব ও উপকারিতা

ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব ও উপকারিতা

ছবি- উম্মাহ।

।। মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী ।।

যাকাত ইসলামের পাঁচটি রোকন থেকে একটি রোকন। কোরআন-সুন্নাহয় যত জায়গায় নামাজের নির্দেশ এসেছে প্রায় সব জায়গায় যাকাতের নির্দেশও এসেছে।

এটি ধন-সম্পদের দিক দিয়ে ইসলামের আদর্শগত ও কর্মগত বুনিয়াদ। ব্যক্তির আয়ত্ত্বাধীন সম্পদের উপর আল্লাহর একচ্ছত্র মালিকানা স্বীকারে যাকাত বাস্তব একটি মাধ্যম। নিয়মিত যাকাত আদায়ের মাধ্যমে যাবতীয় ধনসম্পদ ও ব্যক্তিসত্তার প্রকৃত মালিক যে আল্লাহ তা‘আলার, তারই স্বীকৃতি দেয়া হয়।

যাকাত আদায়ের মাধ্যমে ঈমানদারের মাল-সম্পদ নিরাপদ ও সংরক্ষিত থাকে। মহান আল্লাহ তায়ালা যাকাত আদায়কারীর ধন-সম্পদ সকল আসমানী ও জমিনী বালা- মুসিবত থেকে নিজ কুদরতী হাতে সংরক্ষণ ও হেফাজত করেন।

অপরদিকে যাকাত প্রদানের মাধ্যমে মানুষের অন্তরের পবিত্রতা এবং আল্লাহ কর্তৃক প্রদেয় দায়িত্ব পালনের অনূভুতি সৃষ্টি হয়। আত্মপ্রেম, লোভ ও কার্পণ্যের প্রকৃতিগত ভাবধারা দূর করে মন-মানসিকতাকে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন, নির্মল, ও স্বচ্ছ করে তোলাই হল যাকাতের মূল উদ্দেশ্য।

যাকাতের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি হওয়ার কারণে কুরআন শরীফে বিশেষ করে এই ইবাদতের কথা অসংখ্য বার উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআনের প্রায় ৩২ জায়গায় যাকাতের কথা বলা হয়েছে। যাকাত আদায় না করার পরিণাম ও শাস্তি সম্পর্কে মহান আল্লাহপাক পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন, ‘যারা স্বর্ণ-রূপা বা টাকা-পয়সা সঞ্চয় করে রাখে, আল্লাহর রাস্তায় তা ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও।’
(সূরা তাওবা, আয়াত ৩৪)।

যাকাত আদায় না করার কারণে কঠিন শাস্তির ব্যাপারে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সম্পদের যাকাত আদায় করে না, কেয়ামতের দিন তার সম্পদ বিষাক্ত সাপে রূপ নিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে থাকবে এবং দুই গালে দংশন করতে থাকবে এবং ঐ সাপ বলতে থাকবে, আমি তোমার মাল, আমি তোমার সঞ্চয় করে রাখা সম্পদ।’

আরও পড়তে পারেন-

এসব শাস্তি তো আখিরাতের। আর দুনিয়াতেও যাকাত আদায় না করার শাস্তি অনেক।
যে যাকাত আদায় করে না তার সেই সম্পদের কোন নিরাপত্তা থাকে না। বিভিন্ন রোগ-ব্যধি এবং বালা- মুসিবত দিয়ে কীভাবে তার সেই সম্পদ মহান আল্লাহ তায়ালা তার থেকে কেড়ে নেয়, সে তা বুঝতে পারে না। অনুভব ও টেরও পায় না। ফলে যে কোন মুহূর্তে কঠিন মুসিবত এসে তার সব সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায়। শত শত ঘটনা কিতাবের পাতায় পাওয়া যায় এবং আমরা আমাদের সামাজিক জীবনে দেখতে পাই।

আল্লাহপাক আমাদেরকে যাকাতের গুরুত্ব বুঝে সঠিক সময়ে যথাযথভাবে যাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন।

সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা বা রুপার সমমূল্য মুদ্রা বা টাকা থাকলে এবং সেই সম্পদ এক বছর অতিক্রান্ত হলে তার উপর যাকাত ফরয হয়ে যাবে এবং তার মালিকানাধীন সম্পদের আড়াই শতাংশ অর্থাৎ শতে আড়াই টাকা, হাজারে পঁচিশ টাকা, লাখে আড়াই হাজার টাকা, এইভাবে হিসাব করে যাকাত আদায় করতে হবে।

– মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুহাদ্দিস- জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম-হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।