Home রাজনীতি ১/১১’র এক দশক পেরিয়ে, রাজনীতিবিদরা কি আদৌ কিছু শিখেছে: এবি পার্টি

১/১১’র এক দশক পেরিয়ে, রাজনীতিবিদরা কি আদৌ কিছু শিখেছে: এবি পার্টি

গতকাল (১১ জানুয়ারী) আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে কথিত ‘ওয়ান ইলেভেন’র দশক পূর্তি উপলক্ষে একটি বার্তা প্রচার করা হয়। এবি পার্টির প্রচারিত বার্তাটি নিম্নে হুবহু উপস্থাপন করা হল-

“১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও সরকার পরিচালনার পদ্ধতি ও অন্যান্য বিষয়ে বারবার পরিবর্তন কখনো সরকারকে স্থিতিশীলতা দিতে পারেনি। ফলে একেক সময় একেক সরকার পদ্ধতি দেশের গণতান্ত্রিক মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। নব্বইয়ে যে স্বৈরাচারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তারও উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

কিন্তু প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস, কাউকে কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়া বা প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়ার মানসিকতার কারণে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে। রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সাংঘর্ষিক অবস্থান ও অচলাবস্থার অনেকটা অনিবার্য পরিণতি ছিল ২০০৭ সালের ১লা জানুয়ারীতে, ১/১১ নামে বেশী পরিচিত, ঘটা সামরিক ছায়ায় বেসামরিক পটপরিবর্তন। কেন ও কাদের কারণে এক-এগারোর উদ্ভব হলো, সে সম্পর্কে নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ নেই। ২০০৭ সালের এক-এগারোর আগে ও পরে রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে কার কী ভূমিকা ছিল, সেসব নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ও নির্মোহ আলোচনা দরকার।

গণতন্ত্রের মূল কথা হলো, যুক্তি-তর্ক ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। বিরোধী দলে থাকতে আমাদের রাজনীতিকেরা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, দুর্নীতি ও অনাচারের বিরুদ্ধে বুলন্দ আওয়াজ তোলেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো, তাঁরাও ক্ষমতায় গিয়ে একই কাজ করেন। এখানে গণতন্ত্র আসে যাওয়ার জন্য, আর স্বৈরতন্ত্র যায় আসার জন্য।

সামরিক শাসক সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেননি বলে রাজনীতিকেরা আন্দোলন করে তাঁকে তাড়িয়েছেন। দলীয় সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি বলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দলীয় সরকারকেও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হলো। আর এ কারণেই এক-এগারোর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এটি এমনই এক ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে, যার প্রভাব-প্রতিক্রিয়া থাকবে আরও অনেক দিন।যেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সামনে রেখে এক-এগারো ঘটানো হয়েছিল বলে এর উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, যা নিয়ে নাগরিক সমাজের মধ্যে আশাবাদ জেগেছিল, তার খুব কমই বাস্তবায়িত হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশ চলেনি, বন্ধ হয়নি লগি-বৈঠার তান্ডব আর গনহত্যা। রাজনীতি এক কদমও এগোয়নি, বরং অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়েছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো হয়েছে আরও ভঙ্গুর, অকার্যকর।

আরও পড়তে পারেন-

এক-এগারোর নেপথ্য শক্তি শুরুতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে একটি বিকল্প শক্তিকেন্দ্র গড়ে তুলতে চেয়েছিল। সেই লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপও নিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই শীর্ষ নেত্রী যখন গ্রেপ্তার হলেন, তখন অন্য রাজনীতিকেরাও ভয় পেয়ে যান। দুই দলেই বিভক্তি দেখা দেয়। বিএনপির বিভক্তি ছিল স্পষ্ট, আওয়ামী লীগেরটা অস্পষ্ট। সেনাসরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করেছিল। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল। কিন্তু নির্বাচন ছাড়া তাদের রাজনৈতিক সংস্কারের কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি। রাজনৈতিক নেতৃত্ব ওয়াদা করেও কথা রাখেননি।

রাজনীতির মাঠকে কলঙ্কিত করে সারাদেশব্যাপী বিশেষ করে ঢাকায় যেভাবে লগি বৈঠার মাধ্যমে মানবতাকে ভূলুন্ঠিত করা হয়েছিল তা ছিল অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।দুর্ভাগ্যজনক সত্যি হলো যে, ২০০৯ সালে নতুন সরকার গঠিত হলেও ঐ সকল ঘটনার কোনও বিচার হয়নি বা করেনি; বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি এখনো চলমান। দেশের মানুষ এই অবস্থা থেকে মুক্তির দাবী জানাচ্ছে।

আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) সকল সময়ে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সচল দেখতে চায়; যে কোন অনির্বাচিত, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী, অগণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা দেশকে ধ্বংস করে দেয় – ২০১৪ ও ২০১৮ সালের ত্রুটিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের কারনে সেটা যেমন বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ব্যাপারে সত্য, তেমনিভাবে সত্য ১/১১’র অসাংবিধানিক ও অনির্বাচিত সরকারের বেলায়।”

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।