Home প্রবন্ধ-নিবন্ধ অন্য বিলিয়নিয়ারদের মতো কেন দীর্ঘদিন বাঁচতে চান না ইলন মাস্ক?

অন্য বিলিয়নিয়ারদের মতো কেন দীর্ঘদিন বাঁচতে চান না ইলন মাস্ক?

গত এক দশকে বিলিয়নিয়ার মার্ক জুকারবার্গ, জেফ বেজোস, পিটার থিয়েলসহ আরও অনেকেই বার্ধক্য প্রতিরোধী এবং দীর্ঘায়ু নিয়ে গবেষণায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করলেও, টেসলা এবং স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক চলছেন তার বিপরীত পথে।

মাস্ক সম্প্রতি ইনসাইডারকে বলেন, “আমার মতে, মানুষের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার চেষ্টা করা উচিত নয়। সমাজের জন্য শ্বাসরোধকারী এক পরিস্থিতি তৈরি করবে তারা।”

তিনি আরও বলেন, “বাস্তবে, বেশিরভাগ মানুষই তাদের মন-মানসিকতা পরিবর্তন করে না। তাদের আয়ু যদি বেশি হয় তাহলে আমরা পুরনো ধারণার মধ্যেই আটকে থাকব। এতে সমাজও এগিয়ে যেতে পারবে না।”

সিলিকন ভ্যালি বিলিয়নিয়ারদের তুলনায় এটি একটি বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ জানায়, চলতি বছর চালু হওয়া অ্যান্টি-এজিং স্টার্ট-আপ অ্যাল্টোস ল্যাবসে বিনিয়োগ করেছেন জেফ বেজোস। যদিও, বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ জানা যায়নি।

তাদের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইট অনুসারে, সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানিটি ‘সেলুলার রিজুভেনেশন প্রোগ্রামিং’ নিয়ে কাজ করে থাকে।

এছাড়া, বেজোস ও থিয়েল দুজনই দক্ষিণ সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক কোম্পানি ইউনিটি বায়োটেকনোলজিতেও বিনিয়োগ করেছেন বলে জানা গেছে। কোম্পানির ওয়েবসাইট অনুসারে, ‘বার্ধক্যজনিত রোগগুলোকে প্রতিরোধে ট্রান্সফরমেটিভ ওষুধ’ নিয়ে কাজ করে তারা।

২০১৮ সালে জনসমক্ষে আসার আগেই ইউনিটি বায়োটেকনোলজি ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোম্পানির বাজার মূলধন রয়েছে ৭৩.৬ মিলিয়ন ডলারের, যেখানে ২০১৮ এর সেপ্টেম্বরে তা ছিল প্রায় ৯৭২ মিলিয়ন ডলার।

তবে, সিলিকন ভ্যালির বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে দীর্ঘায়ু নিয়ে গবেষণায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগকারী সম্ভবত থিয়েলই। অ্যাম্ব্রোসিয়া নামক একটি অ্যান্টি-এজিং স্টার্ট-আপে বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি।

আরও পড়তে পারেন-

২০১৫ সালে থিয়েল ইনসাইডারকে বলেন, “১৯৫০ এর দশকে গবেষণা করা বেশ কিছু অদ্ভুত পরীক্ষার (প্যারাবায়োসিস) একটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে অ্যাম্ব্রোসিয়াতে।”

এর চার বছর পর ২০১৯ সালে ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন প্যারাবায়োসিসের বিরুদ্ধে একটি সতর্কতা জারি করে। এরপরপই, অ্যামব্রোসিয়ার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

অন্যদিকে, জুকারবার্গ ও তার স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান ‘দ্য ব্রেকথ্রু প্রাইজে’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ‘মানুষের জীবনকে দীর্ঘস্থায়ী করা এবং রূপান্তরমূলক গবেষণার’ জন্য বিজ্ঞানীদেরকে প্রতি বছর ৩ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৫ সালের একটি ফেসবুক প্রশ্নোত্তর ইভেন্টে জুকারবার্গ বলেন, “আমি মানুষের সম্পর্কে প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী।”

“কোন জিনিসটিও আমাদের চিরকাল বেঁচে থাকতে সক্ষম করবে, কিভাবে সব রোগ নিরাময় করা যাবে, মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে,” এসব প্রশ্ন নিয়ে তার আগ্রহের কথা জানান তিনি।

দ্য নিউ ইয়র্কারের মতে, ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন বার্ধক্য বিরোধী গবেষণায় কমপক্ষে ৩৭০ মিলিয়ন ডলার দান করেছেন। অন্যদিকে, গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা সের্গেই ব্রিন এবং ল্যারি পেজ বায়োটেক স্টার্ট-আপ ক্যালিকো চালু করতে সাহায্য করেছেন।

যেখানে প্রায় সব বিলিয়নিয়ারই দীর্ঘকাল বেঁচে থাকার উপায় খুঁজতে আগ্রহী, সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের চিন্তা তার সম্পূর্ণ বিরোধী।

“আমি অবশ্যই বেশি বয়স পর্যন্ত সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে চাই। কিন্তু আমি মরতে ভয় পাই না। আমি মনে করি, এটি এক ধরনের স্বস্তি হিসেবেই আসবে,” ইনসাইডারকে বলেন মাস্ক।

সূত্র- সিএনবিসি।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।