Home ইসলাম নবী-রাসুলদের স্মৃতিধন্য মসজিদুল আকসা

নবী-রাসুলদের স্মৃতিধন্য মসজিদুল আকসা

মসজিদুল আকসা, জেরুজালেম ফিলিস্তিন। ছবি : সংগৃহীত
 ।। তালহা হাসান ।।

ইসলামের তৃতীয় সম্মানিত স্থান ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসা বা আল-আকসা মসজিদ। কোরআন ও হাদিসে নবী-রাসুলদের স্মৃতিবিজরিত এই স্থান নিয়ে বৈশিষ্ট্যের কথা এসেছে। নিম্নে এ মসজিদের সাতটি মর্যাদার কথা তুলে ধরা হলো।

এক. বরকতময় স্থান : মহান আল্লাহ বাইতুল মাকদিস ও এর আশপাশের অঞ্চলকে বিশেষভাবে বরকতপূর্ণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১)

দুই. ইসরা ও মিরাজের ঘটনা : মহানবী (সা.) মিরাজের রাতে জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে মক্কা থেকে মসজিদুল আকসায় এসেছিলেন। এখানে তিনি নবীদের সঙ্গে নামাজ পড়েন। অতঃপর সাত আসমানে ভ্রমণ করেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১)

আরও পড়তে পারেন-

তিন. মুসলিমদের প্রথম কিবলা : ইসলামের প্রথম যুগে মুসলিমদের কিবলা ছিল বাইতুল মাকদিস। দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে মক্কার পবিত্র কাবাঘরকে কিবলা করা হয়। তখন রাসুল (সা.) সাহাবিদের নিয়ে মদিনার মসজিদে বনু সালামায় জোহর বা আসরের নামাজ পড়ছিলেন। দুই রাকাতের পর আল্লাহর নির্দেশে বাকি নামাজ কাবার দিকে ফিরে পড়া হয়। তাই মসজিদটি মসজিদে কিবলাতাইন বা দুই কিবলার মসজিদ হিসেবে পরিচিত। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘মহানবী (সা.) মক্কায় পবিত্র কাবার সামনে থাকাবস্থায় বায়তুল মুকাদ্দিসের দিকে মুখ করে নামাজ পড়েন। মদিনায় হিজরতের পর দীর্ঘ ১৬ মাস সেদিকে ফিরেই নামাজ পড়েন। অতঃপর মুসলিমদের কিবলা পরিবর্তন করে পবিত্র কাবা করা হয়।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৮৩৬)

চার. পৃথিবীর দ্বিতীয় মসজিদ : পবিত্র মসজিদুল হারামের পর মসজিদুল আকসাকে পৃথিবীতে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ মনে করা হয়। আবু জর গিফারি (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি জিজ্ঞাসা করি, হে আল্লাহর রাসুল, দুনিয়ায় প্রথম কোন মসজিদ নির্মিত হয়েছে? তিনি বলেন, ‘মসজিদুল হারাম।’ আমি আবার জিজ্ঞাসা করি, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘মসজিদুল আকসা।’ আমি জিজ্ঞাসা করি, উভয়ের মধ্যে কত বছরের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, ‘৪০ বছর।’ (বুখারি, হাদিস : ৩১১৫)

পাঁচ. নামাজ আদায়ে পাপ মোচন ও বেশি সওয়াব : মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের পর মসজিদুল আকসায় নামাজ আদায়ে বিশেষ মর্যাদার কথা বর্ণিত হয়েছে। আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মসজিদে হারামে এক রাকাত নামাজ এক লাখ নামাজের সমান। আমার মসজিদে (মসজিদে নববী) এক রাকাত নামাজ এক হাজার নামাজের সমান এবং বাইতুল মাকদাসে এক নামাজ পাঁচ শ নামাজের সমান।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ : ৪/১১)

ছয়. তিন মসজিদের উদ্দেশে ভ্রমণ : হাদিসে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদ ও মসজিদুল আকসার উদ্দেশে ভ্রমণের কথা বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ বিন উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘(ইবাদতের উদ্দেশ্যে) তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও ভ্রমণ করা যাবে না। মসজিদুল হারাম, আমার এই মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।’ (মুসলিম, হাদিস : ৮২৭)

সাত. সত্যবাদী দলের অবস্থান : আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের একটি দল সত্যের ওপর বিজয়ী থাকবে। শত্রুর মনে পরাক্রমশালী থাকবে। দুর্ভিক্ষ ছাড়া কোনো বিরোধী পক্ষ তাদের কিছুই করতে পারবে না। আল্লাহর আদেশ তথা কিয়ামত পর্যন্ত তারা এমনই থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কোথায় থাকবেন? রাসুল (সা.) বললেন, ‘তারা বায়তুল মাকদিস এবং তার আশপাশে থাকবেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১২৮৬)

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।