পৃথিবীতে হাজারও রকমের পেশা আছে; ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি থেকে শুরু করে নিজ উদ্যোগে অনেক কিছুই গড়ে তোলে মানুষ। নিজের পেশা বা কাজ নিয়ে অনেকেরই অনেক রকম অনুভূতি থাকে। কেউ নিজের চাকরি নিয়ে খুশি, আবার কারো মধ্যে সবসময়ই অসন্তুষ্টি ও আক্ষেপ রয়ে যায়। সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় কোন ধরনের চাকরিতে মানুষ সবচেয়ে অসুখী, তা তুলে ধরেছেন গবেষকরা।
১৯৮৩ সালে শুরু করা হয় এ গবেষণা। এরপর থেকে ৮৫ বছর ধরে হার্ভার্ডের গবেষক দল প্রায় সাতশোরও বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে এ গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। এবার গবেষকরা জানিয়েছেন সেই সব চাকরি বা কাজের কথা, যেগুলো করতে মানুষ পছন্দ করে না এবং কাজে সন্তুষ্টি পায় না।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী সাতশো ব্যক্তিকে তাদের কাজের ধরন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর তাদেরকে তাদের কাজ নিয়ে বিস্তারিত প্রশ্ন করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফল
৮৫ বছরের সময়কালে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব চাকরিতে মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ খুবই কম কিংবা একেবারেই নেই, সেসব চাকরিতে মানুষ সবচেয়ে অসুখী। এই যেমন, রাতেরবেলা শিফটের ডিউটি, ট্রাক চালানো, রাতে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে প্যাকেজিং এর চাকরি, খাবার ডেলিভারি করা এবং ওয়্যারহাউজের অনলাইন রিটেইলারের চাকরি- এ সকল কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা সবচেয়ে একাকী সময় পার করেন, কারণ ওই সময়ে আশেপাশে সহকর্মী বা অন্য মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না তারা।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
একাকী কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যাটা হলো, সহকর্মীদের সাথে অর্থপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির সুযোগ না থাকা। কর্মস্থলে একা একা কাজ করা অসুখী থাকার এবং একাকীত্বের একটি বড় লক্ষণ।
সুখী থাকার উপায় কী?
হার্ভার্ডের গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, সুখী জীবনযাপন করার এবং জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকার একটি বড় উপায় হলো মানুষের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক তৈরি ও তা বজায় রাখা।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এর মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক ও হার্ভার্ড স্টাডি অব এডাল্ট ডেভেলপমেন্ট-এর পরিচালক রবার্ট ওয়ালডিংগার বলেন, “এটা (মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া) আমাদের একটা জরুরি সামাজিক চাহিদা এবং জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে এই চাহিদা পূরণ হওয়া দরকার। সেই সঙ্গে, আপনি যদি বেশি বেশি মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, আপনি নিজের কাজে আরও বেশি তুষ্ট থাকবেন এবং আরও ভালো কাজ করবেন।
কর্মক্ষেত্রে সামাজিকীকরণ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
গবেষণায় বলা হয়েছে, কর্মক্ষেত্রে অনেক মানুষের মাঝে থেকেও একজন কর্মী বিচ্ছিন্ন বোধ করতে পারে। আর এটা তখনই হয়, যখন সে সহকর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে না বা মেলামেশা করে না। আর সে কারণেই কর্মক্ষেত্রে সামাজিকীকরণ এত গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ