Home সাক্ষাৎকার ‘প্রমাণ করেছি যে, মানসিকভাবে আমরা উন্নত না’

‘প্রমাণ করেছি যে, মানসিকভাবে আমরা উন্নত না’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী। - ফাইল ছবি।

আরটি-পিসিআর পদ্ধতির মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা চালু করতে যাচ্ছে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল। আর আগামীকাল শনিবার থেকে চালু হচ্ছে ‘গণস্বাস্থ্য প্লাজমা সেন্টার’। একইসঙ্গে গবেষণার অংশ হিসেবে নিজেদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি কিট দিয়েও পরীক্ষা করবে তারা।

আজ শুক্রবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আগামীকাল থেকে আমাদের প্লাজমা সেন্টার চালু হবে। সেটা চালুর পর আগামী ১০ দিনের মধ্যেই আমরা পিসিআর পদ্ধতিতেও পরীক্ষা শুরু করব। আমরা সরকারকে জানিয়েছি যে, আমরা অত্যাধুনিক পিসিআর মেশিন স্থাপন করেছি। এক্ষেত্রে আমাদের এখানে যারা পরীক্ষা করাবেন, তাদের মধ্যে যাদের স্বাস্থ্যবিমা আছে, তাদের জন্য আড়াই হাজার টাকা এবং যাদের স্বাস্থ্যবিমা নেই, তাদের ক্ষেত্রে তিন হাজার টাকা করে ফি হবে।’

আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন, এর অগ্রগতি কতটুকু? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের জানিয়েছি। আবেদন কী করব? সরকারকে ভালো কাজে সাহায্য করছি। তাদেরকে জানিয়েছি। লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

তারা অনুমোদন না দিলে কোনো জটিলতা আছে কি না, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা আদালতে যাক। এসব বন্ধ করে দেক। দেশ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাক।’

আরও পড়তে পারেন-

স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে কি?

অনুমতি না নিয়ে কারো কথাবার্তা বা ফোনালাপ রেকর্ড করা সম্পর্কে ইসলামের বিধান

বিধবা স্ত্রী সন্তানদের ভরণ-পোষণ ও ব্যয় নির্বাহের জন্য চাকুরী করতে পারবেন কিনা?

স্বামী নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে কি?

ফজরের আযানের পর নফল নামায পড়া যাবে কি?

প্লাজমা সেন্টারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, যারা করোনামুক্ত হয়েছে, তারা যাতে এসে রক্ত দিয়ে যায়। অনেক রক্ত দরকার। প্রত্যেকে যাতে এসে রক্ত দিয়ে যায়। রক্তদান করতে কোনো খরচ নেই। তবে, যিনি প্লাজমা নেবেন, তার ক্ষেত্রে যেহেতু অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় আছে, তাই তাদের ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা ফি পড়বে।’

‘আমাদের প্লাজমা সেন্টার ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। সারাদেশের মানুষ এখান থেকে প্লাজমা নিতে পারবে। প্রাথমিক অবস্থায় আমরা প্রতিদিন ২৫ জনকে প্লাজমা দিতে পারব। তবে, আগামী মাসে বিদেশ থেকে আমাদের আরও একটি মেশিন আসছে। তখন আশা করছি প্রতিদিন ৬০ জনকে প্লাজমা দেওয়া যাবে’, বলেন তিনি।

অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে পরীক্ষার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের কিটের অনুমোদন দেয়নি। আমরা গবেষণার অংশ হিসেবে এই কিট দিয়ে পরীক্ষা করব। আগামীকাল থেকেই অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে পরীক্ষা চালু হবে। এই কিট দিয়ে পরীক্ষা করতে আমরা চার শ টাকা করে নেব।’

অনুমোদন না পাওয়ার পরও গবেষণার অংশ হিসেবে অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে পরীক্ষা করলে কোনো আইনি জটিলতা বা ঝামেলা হতে পারে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের অন্যায় আচরণকে অনেকদিন সহ্য করেছি। আর নয়। অনেকদিন ধরে তারা দেশের ক্ষতি করছে। তাদের আচরণ হয়রানিমূলক। নাগরিক হিসেবে আমরা এটা আর সহ্য করব না। প্রয়োজন হলে তারা আদালতে যাক। ব্যবস্থা নেক। আমরা সেটার মুখোমুখি হব।’

আপনাদের উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন কিটের অনুমোদনের বিষয়ে এখনো কতটুকু আশাবাদী, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আগেই বলেছি, ঘুষ দিয়ে তাদের মনোপূর্ণ করে নাই বলে এবং আমদানিকারকদের স্বার্থে তারা আমাদেরকে আটকে রেখেছে। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যান্ডার্ড। আমার দেশের নীতিমালা তো আমার দেশের হবে। তারা এখন বলেছে, আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষা করাতে হবে। এটা কোনো সমাধান? সরকার খুব ভুল পথে হাঁটছে। আগে ব্যাংক আমাদের পেছনে ঘুরছিল, আমাদের ৫০ কোটি টাকা দরকার বলে। সরকারের উসাদীনতার ফলে এখন আর কোনো ব্যাংক উৎসাহী না। কত দেশ থেকে আমাদের কাছে আবেদন করেছিল, তারা আমাদের কিটের লাইসেন্স নিতে চায়। এখন আমাদের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে অন্যান্য দেশ এটা উদ্ভাবন করে ফেলেছে। ফলে বাংলাদেশে হেরে গেছে। প্রথম উদ্ভাবনের সুনামটা আমরা হারিয়েছি, ব্যবসার সুনামটা হারিয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে আমরা প্রমাণ করেছি যে, মানসিকভাবে আমরা উন্নত না।’

‘আপাতত গবেষণার অংশ হিসেবে আমরা অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে পরীক্ষা করব। দৈনিক তিন শ থেকে চার শ, যতজন আসবে, আমরা পরীক্ষা করব। ভবিষ্যতে অ্যান্টিজেন কিটে দিয়েও পরীক্ষা চালু করতে পারি। অ্যালাইজা পদ্ধতিও আমরা এই দেশে আবিষ্কার করেছি। কিন্তু, কোনোটারই অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে। এর ফলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। আর জনগণের ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকা’, যোগ করেন তিনি।

সর্বশেষ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মানসিক পরিবর্তন দরকার। সবাইকে মিলেমিশে কাজ করা দরকার। আমাদের মানসিক পরিবর্তন দরকার, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন দরকার, আইনের পরিবর্তন দরকার। আমাদের সর্বক্ষেত্রে দরকার পরিবর্তন, পরিবর্তন ও পরিবর্তন।’ সূত্র- দ্য ডেইলি স্টার।

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।